গহিন গহনে প্রেত লোক - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 1 September 2019

গহিন গহনে প্রেত লোক

1



দেবশ্রী মজুমদার:     রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায় চাঁদের পাহাড় নয়। বাস্তবের মাটিতে রোমহর্ষক কাহিনী! প্রকৃত অর্থে এ যেন "গহিন গহনে প্রেত লোক"। হ্যাঁ যেটা বলতে চাইছিলাম! জাপানের আওকিগোহারা ফরেস্ট! জাপানীরা একে বনসমূদ্র বা আত্মহত্যার বন। জাপানী ভাষায় যাকে বলা হয় "জুকাই!"  জাপানের মাউন্ট ফিউজি ৩০ বর্গ কিমি লাভা ভূমির উপর এই বন। ৮৬৪ সি ই (কমন এরা)তে লাভা উদগীরণ হয়।     



আওকিগোহারা পশ্চিম সীমান্তে অসংখ্য গুহা আছে। জামানাসি এলাকায় এই বন অবস্থিত। এই বনের ঐতিহাসিক কুখ্যাতি আছে। এই জঙ্গল নাকি ভূতের স্বাভাবিক বাসস্থান। জাপানীরা তাদের পুরানে একে বলে "ইউরে"। আন্তর্জাতিক ভাবে এই বন আত্মহননের বন হিসেবে খ্যাত। এই ঘন বন যেকোন হরোর ফিল্মের আদর্শ লোকেশন।       



কথিত, এই বনে যদি কেউ একবার প্রবেশ করে, সে পথ হারিয়ে ফেলে। তখন পাথুরে মাটি শ্বাসরোধকারী গাছ গাছালি শুধুই ফিসফিসিয়ে বলে, আয়! আয়!  চিরঘুমের আসন পাতা এখানে!  বহু বার স্বেচ্ছাসেবকরা সার্চ করে মৃত দেহ উদ্ধার করেছে। সব থেকে ভয়ঙ্কর হলো এই জঙ্গলের নির্জনতা, নিরবিচ্ছিন্ন নিরবতা। যা নির্বিচারে মানুষের শিকার করে। ঘন হওয়ায় বনে যেমন  আলো প্রবেশ করে না, তেমনি  বাতাসও চলাচল করে না। গাছ গুলো সোজাসুজি ওঠে নি। আঁকাবাঁকা ভাবে বেড়ে উঠেছে। এত নিঃস্তব্ধতা বিরাজ করে যে নিজের শ্বাস প্রশ্বাসকে বাঘের গর্জন বলে মনে হয়। তাই হয়তো বাধ্য হয়ে পথচারীরা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।       



 ১৯৬০ সালে জাপানী লেখক সেইচো মাতসুমোওতো এক বিয়োগান্তক উপন্যাস লেখেন আওকিগোহারা বনের পটভূমিকায়। তাঁর এই বিয়োগান্তক নভেলের নাম  কুরোই জোকাই। গল্পের মূল বিষয় একজন বিরহকাতর প্রেমিক বনের গহিনে হারিয়ে যায়। তারপর নিজের জীবন শেষ করে দেয়। এই রোমান্টিকতা জাপানি সংস্কৃতির উপর এক দূর্জ্ঞেয় প্রভাব বিস্তার করে। বন হাতছানি দিয়ে ডেকে বলে, মৃত্যুর আদর্শ স্থান।       



 অনেকেই বিশ্বাস করেন, পুরো জঙ্গলে অতৃপ্ত আত্মার রাজত্ব। পাতা ঝরা জঙ্গলে নাই! নাই !বেরোবার পথ আর নাই!         এই জঙ্গলের আরেকটি অপবাদ আছে। এখানে সেল ফোন কাজ করে না। কাজ করে না জিপিএস বা দিগনির্ণয়ের কম্পাস! আর এর কারণ নাকি প্রেতাত্মার প্রভাব! এক রহস্যাবৃত জঙ্গলে হয়তো কেউ আজও খোঁজে -- গুমনাম হ্যয় কোয়ি! বদনাম হ্যয় কোয়ি! কিসিকো খবর কোন হ্যয় ও! আনজান কোয়ি!...



পি/ব 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad