কলকাতা প্রতিনিধি,
কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজ কল্যান দপ্তরের অধীনে প্রতিষ্ঠিত নারী ও শিশু পাচার রোধ বিষয়ক বিশেষ টাস্কফোর্সের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় ভারতে পাচারের শিকার ৩৭ জন নারী ও শিশুকে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।
কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান মিজ শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতির প্রতিনিধিত্বে জনাব মোঃ সানিউল কাদের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) সহ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নিকট ৩৭ জন নারী ও শিশুকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
বাংলাদেশে প্রত্যাবাসনকৃত এই ৩৭ জন নারী ও শিশুর মধ্যে ৪ জন পূর্ণবয়স্ক নারী সহ আরও ১২ জন নারী ও ২১ জন পুরুষ রয়েছে। যাদের বয়স ১৮ বছরের নীচে এবং যারা ভারতের বিভিন্ন সেইফ হোমে প্রায় দুই বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত আটকে ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের বিভিন্ন সংস্থা, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং বিএসএফ সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সময় বেনাপোল সীমান্তে উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দেড়শতাধিক বাংলাদেশি নারী ও শিশু বিভিন্ন সময়ে পাচার হয়ে কিংবা অবৈধভাবে বা ভুলক্রমে ভারতে এসে আটক হয়ে বিভিন্ন সেইফ হোমে অবস্থান করছে। আটককৃত এ সব নারী ও শিশুদের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিরেক্টরেট অব চাইল্ড রাইটস এন্ড ট্রাফিকিং এবং কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন যথাযথ প্রক্রিয়ায় অবহিত করে। বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতা এসব সেই সব হোমসমূহ পরিদর্শন করে
আটককৃত বাংলাদেশী নারী ও শিশুদের তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে অবহিত করে।
পরবর্তীতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পাদনের পর বাংলাদেশ
উপ-হাইকমিশন, কলকাতা ট্রাভেল পারমিটের প্রমাণীকরণ, ডকুমেন্টেশন ইস্যু করার মতো একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া অতি দ্রুততম সময়ে সম্পাদন করে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে। কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু পাচার রোধকল্পে প্রতিষ্ঠিত বিশেষ টাস্কফোর্সের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত পদক্ষেপের কারণে বছরের পর বছর ভারতের বিচারিক আদালতের মামলার কারণে বিভিন্ন সেইফ হোমে আটকে থাকা এই সব নারী ও শিশুর সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি আরও ৩৮ জন নারী ও শিশুকে ফেরত পাঠানোর পর বড় পরিসরে এই ধরনের এটি দ্বিতীয় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এবং আটককৃত অবশিষ্ট বাংলাদেশী নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
২০.০৯.২০২১
No comments:
Post a Comment