প্রায়শই লোকেরা মনে করে যে, তামাক খেলে কেবল মুখের ক্যান্সার হয়, তবে তা নয়। যে কোনও আকারে তামাক খেলে হৃদরোগ, ফুসফুস এবং গ্যাংগ্রিনের মতো মারাত্মক রোগও হতে পারে। এমন অনেক রোগী হাসপাতালে আসে। তামাকের কারণে যাদের হৃদরোগ ও ফুসফুসের ক্যান্সার হয়েছে। প্রতিবছরই এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে।
রাজীব গান্ধী হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের বিনীত কুমার বলেন, প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে যে সিগারেট, বিড়ি, গুটখা এবং হুক্কাও এক ধরনের তামাক। এই সব জিনিস খাওয়ার বিভিন্ন অসুবিধা আছে। এটা নির্ভর করে কিভাবে তামাক খাওয়া হচ্ছে, তার ওপর। আপনি যদি চিবিয়ে (গুটকা বা পান মসলা) তামাক খান তাহলে মুখ ও গলার ক্যান্সার হয়। কিন্তু সিগারেট, হুক্কা বা বিড়ির মাধ্যমে তামাক খেলে ফুসফুসের ক্যান্সার, হার্টের সমস্যা ও গ্যাংগ্রিনের মতো মারাত্মক রোগ দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, রোগী যখন হাসপাতালে পৌঁছায়, তখন সে চতুর্থ বা পঞ্চম পর্যায়ে থাকে। এক্ষেত্রে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
ধূমপানের ফলে আঙ্গুলে গ্যাংগ্রিন হয়
নয়াদিল্লির AIIMS-এর ডাঃ উমা কুমার বলেছেন যে, হাসপাতালে এমন অনেক রোগী এসেছেন যারা বেশি ধূমপান করতেন এবং এর কারণে তাদের আঙ্গুলে গ্যাংগ্রিন হয়েছে। তরুণদের মধ্যে হুক্কার প্রচুর ক্রেজ রয়েছে কিন্তু এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তারা জানেন না, বলেন ড.। হুক্কা ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ক্যান্সার, হাঁপানির সমস্যা এবং শ্বাসকষ্টও হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে এর লক্ষণগুলি সনাক্ত করা যায়। যদি কারও মুখে ফোসকা বা লাল দাগ হয়, তবে এটি মুখের ক্যান্সারের সূচনা হতে পারে। সেই সঙ্গে একটানা কাশি, শ্বাসকষ্ট, হলে এটা ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ। এই সমস্ত রোগ তামাক খাওয়ার ফলে হয়।
নারীদেরও অনেক সমস্যা হয়
তামাক খাওয়া নারীদের সার্ভিকাল ক্যান্সার, অকাল মেনোপজও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং অন্ত্রের সমস্যাও দেখা দেয়।
এভাবে তামাক খাওয়া কমিয়ে দিন
ধীরে ধীরে তামাকের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করুন।
আপনার সঙ্গীর কেউ যদি আপনাকে তামাক খেতে বলেন, তাহলে তাকেও তা ছাড়তে অনুপ্রাণিত করুন।
তামাক খাওয়ার ইচ্ছা জাগলে মুখে অন্য কিছু রাখুন যেমন চুইংগাম, টফি ইত্যাদি।
তামাক ত্যাগ করতে নিকোটিন থেরাপি ব্যবহার করা যেতে পারে।
অনেক চেষ্টা করেও যদি ছাড়তে না পারেন তাহলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
No comments:
Post a Comment