এই ​​মুঘল শাসক প্রতিদিন গঙ্গাজলকে স্বর্গের জল মনে করে পান করতেন - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 1 December 2021

এই ​​মুঘল শাসক প্রতিদিন গঙ্গাজলকে স্বর্গের জল মনে করে পান করতেন

 


হিন্দু ধর্মে গঙ্গাকে পবিত্র নদী বলা হয়। গঙ্গা নদীকে নিয়ে প্রচুর গান ও রচিত। তবে জেনে অবাক হবেন যে সমস্ত ধর্মের লোকেরাই গঙ্গা নদীকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে দেখতেন। আবুল ফজল তার 'আইন-ই-আকবরী' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, মুঘল সম্রাট আকবর পানের জন্য গঙ্গাজল ব্যবহার করতেন।



 বহু শতাব্দী ধরে গঙ্গার জলকে অমৃতের সমান বলে মনে  করা হয়।এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে গঙ্গা নদীতে স্নান করলে মানুষের সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়।সেই সঙ্গে এর জল পান করলে অনেক রোগ-ব্যাধি দূর হয়। হিন্দু ধর্মের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও গঙ্গা নদীকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে দেখে আসছে। 



এমনকি মুঘল শাসকরাও গঙ্গার জলকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করতেন। আজ আমরা এমনই এক মুঘল শাসকের কথা বলতে যাচ্ছি, যিনি শুধুই গঙ্গার জল পান করতেন। 

 


সেই মুঘল শাসক ছিলেন আকবর। আবুল ফজল তাঁর ‘আইন-ই-আকবরী’ গ্রন্থে এ কথা উল্লেখ করেছেন। আকবর শুধুমাত্র পানের জন্য গঙ্গাজল ব্যবহার করতেন। তিনি যখন আগ্রা এবং ফতেহপুর সিক্রিতে থাকতেন, তখন তার পানের জন্য উত্তরপ্রদেশের সোরন থেকে গঙ্গাজল আনা হতো।



 একই সময়ে আকবর লাহোরকে রাজধানী করলে তাঁর জন্য হরিদ্বার থেকে জল আসতে শুরু করে। আকবর ঋষিকেশ ও হরিদ্বার থেকে দিল্লি ও আগ্রায় শুধুমাত্র গঙ্গাজল আনার জন্য অনেক ঘোড়সওয়ার মোতায়েন করেছিলেন।



বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ডক্টর রাম নাথ তাঁর 'প্রাইভেট লাইফ অফ মুঘলস' বইতে বলেছেন যে আকবর বাড়িতে থাকুক বা ভ্রমণ করুক, তিনি শুধু গঙ্গাজলই পান করতেন। এর জন্য গঙ্গা নদীর তীরে কিছু বিশ্বস্ত লোক নিযুক্ত ছিল, যারা প্রতিদিন সিল করা পাত্রে জল পাঠাতেন। কেউ যাতে জলে বিষ মেশাতে না পারে সেজন্যই সম্ভবত এটি করা হয়েছিল। 



শুধু তাই নয়, আকবরের খাবার রান্নার জন্য যমুনা ও চেনাব নদীর জল ব্যবহার করা হতো।তাতে মেশানো হতো গঙ্গাজল। জানিয়ে রাখি, শুধু আকবর নয়, এর আগে বাবর ও হুমায়ুনও গঙ্গাজল পছন্দ করতেন। তাঁরা একে আব-ই-হায়াত অর্থাৎ বেহেশতের জল বলে মনে করতেন। 



কিছু লোক বিশ্বাস করেন যে মুঘল শাসকদের এটি করার পিছনে অন্য কোনও কারণ ছিল। আসলে গঙ্গাজল অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়।কারণ এতে ব্যাকটেরিয়াও জন্মায় না। আকবর যখন প্রতিদিন এটি পান করতে শুরু করেন, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যেও এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।



এটি লক্ষণীয় যে গঙ্গাজলের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে একটি ল্যাব টেস্টেও প্রমাণিত হয়েছে। গঙ্গার জলে এমন অনেক উপাদান এবং খনিজ রয়েছে, যার কারণে এটি নষ্ট হয় না।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad