মাছ ভাত ছাড়া বাঙালি অসম্পূর্ণ। কথাতেই তো রয়েছে, মাছে ভাতে বাঙালি। আর সেই মাছ যদি হয় ইলিশ তবে তো সোনায় সোহাগা। ভোজনরসিক বাঙালির পাতে রূপালি ফসলের চাহিদা সারাবছর থাকে তুঙ্গে। আর সেই চাহিদা মেটাতেই আজ থেকেই মৎস্যজীবীরা পাড়ি দিলেন গভীর সমুদ্রে। টানা ৬১ দিন পর গভীর সমুদ্রে যাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। মঙ্গলবার থেকে মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল। তাই এবারে মৎস্যজীবিদের রুটিরুজির সুরাহা যেমন হবে, তেমনি বাঙালির ইলিশ বিরহেরও অবসান ঘটবে অনেকটাই। মাসের শেষে দাম কমার অপেক্ষায় মধ্যবিত্ত।
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, করোনাবিধি মেনে আজ ভোর থেকেই ইলিশের খোঁজে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েক হাজার ট্রলার। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সহ-মৎস্য অধিকর্তা জয়ন্ত প্রধান বলেন, ৬১দিন পর গভীর সমুদ্রের মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠল। করোনার সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার মৎস্যজীবীদের করোনার টিকাকরণ সম্পন্ন করা হয়েছে। করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রলার গুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেসকল মৎস্যজীবীদের টিকাকরণ সম্পন্ন করা হয়নি, তাঁরা করোনা পরীক্ষা করার পরে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার অনুমতি পাবেন।
ওয়েস্টবেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় মাইতি বলেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রায় ১১ হাজার ছোট-বড় মাছ ধরার যন্ত্রচালিত নৌকা আছে। এবছর অর্ধেক নৌকো জলে নামছে না। মাছের কি অবস্থা হয় তা দেখেই তারপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ পরপর দু’বছর মাছ না হওয়ায় প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা।
উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলোতে তেমন একটা লাভের মুখ দেখেননি মৎস্যজীবীরা। এবছর তাই ইলিশের খোঁজে গভীর সমুদ্রে চলেছেন তাঁরা। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি রাজ্যে করোনার সংক্রমনের জেরে ঘরে হাঁড়ি চড়ানোই দায় হয়ে উঠেছে। এবারে দেখার কতটা মেটে ভোজন রসিক বাঙালিদের ইলিশের চাহিদা। আর তার সঙ্গে সংযোগ রেখে কতটাই বা মেটে মৎসশিকারিদের অন্ন-বস্ত্রের চাহিদা।
No comments:
Post a Comment