আত্রেয়ী খাড়ির জলে তোড়ে ধসের কবলে এলাকার বাড়ী-ঘর, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছালেন বালুরঘাটের সাংসদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর:  আত্রেয়ী খাড়ির জলে তোড়ে বালুরঘাট শহরের  ঘন বসতি পুর্ন এ কে  গোপালন কলোনী এলাকায় বেশ কিছু বাড়ী-ঘর ধসের কবলে। চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসীরা।  এলাকাবাসীদের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে এই অবস্থা থেকে ঘর-বাড়ী বাঁচাতে বার বার এই খাড়িতে বাধ নির্মানের দাবী জানিয়ে আসলেও হেল দোল নেই প্রশাসনের। অথচ এই কলোনীতে প্রচুর লোকের বাস। তাদের দাবী, অবিলম্বে তাদের পুনর্বাসন ও এলাকায় বাধ নির্মান করা হোক। না হলে বার বার কলোনীর বাসিন্দাদের ক্ষয় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। যদিও খবর পেয়ে স্থানীয় পুরসভার লোকজন ঘটনা স্থলে এসে সরোজমিনে খতিয়ে দেখে গেলেও স্থানীয়দের অভিযোগ তারা এখনও কোন প্রশাসনের তরফে সাহায্য পান নি। 

এদিকে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।  তিনি এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার-পরিজনদের সাথে কথা বলেন। পরে সুকান্ত মজুমদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'দীর্ঘ কয়েক দশক এই কলোনীতে প্রচুর লোক বাস করছেন, তবু কেন প্রশাসনের তরফে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারটি মাথায় রেখে এই খাড়িতে বাঁধ বা গার্ড ওয়াল নির্মান করা হয় নি তা বুঝে উঠতে পারছি না।' যদি হতো তবে এভাবে আজ ৩০ টি পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতো না বলে তিনি ক্ষোভ জানান। এবারের পুরভোটে এই বিষয়কে নিয়ে ইস্যু করে দল ভোটের প্রচারে যাবেন বলে তিনি দাবী করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টিতে আত্রেয়ী নদী ও শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া  তার খাড়িতে ( শাখা) জলস্ফীতি দেখা দেয়।  কলোনীর ঘেষা এই খাড়িতে কোন বাধ নির্মান না করায় ওই জল সরাসরি কলোনীর ভেতরের বাসিন্দাদের বাড়ী-ঘর জলমগ্ন করে দেয়।  গতকালের আগের দিন থেকে ধীরে ধীরে জল কমতে শুরু করলে এই খাড়ির সাথে যুক্ত থাকা বালুরঘাট শহরের নিকাশির জন্য কয়েকটি সুইস গেট খুলে দেওয়া হয়। আর যার ফলে ওই জমা জলের প্রবল চাপের দরুন বাঁধ না থাকায়  জলের তোড়ে এই কলোনী এলাকার মাটি ধসে যায়।তাতে  বেশ কয়েকটি পরিবারের বাড়ী-ঘর সহ বেশ কিছু আত্রেয়ী খাড়িতে ধসে পড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

কলোনীর বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গতকাল দুপুরে এলাকায় এর ফলে কিছু কিছু জায়গায় ফাটল দেখা দেয়।  কিন্তু সেই ফাটলে যে এভাবে আজ সকালে ধসে বাড়ী-ঘর  ভেংগে পড়বে তা ভাবতে পারেন নি। কলোনীর অন্যান্য বাসিন্দারা ছুটে এসে না বাঁচালে কি হতো তা ভাবতেই তারা শিউরে উঠছেন বলে বেশ কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার জানিয়েছেন।  তারা অবশ্য জানিয়েছেন, পুরসভার লোকজন এসেছিল। তবে তারা এখনও কোন ক্ষতি পূরন বা সাহায্য পাননি। 

প্রসংগত বালুরঘাট শহরের এই এ কে গোপালন কলোনীতে প্রচুর লোকের বাস।  বিভিন্ন পেশার মানুষ দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই কলোনীতে বাস করলেও এর আগে এভাবে ধস নেমে কেউ  ক্ষতিগ্রস্ত হতে তারা দেখেননি বলে তারা জানিয়েছেন।