মজার ছলে বোকা বানানো;এদিনের নেপথ্যে থাকা ইতিহাস জানলে ভয়ে শিউরে উঠবেন - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 1 April 2020

মজার ছলে বোকা বানানো;এদিনের নেপথ্যে থাকা ইতিহাস জানলে ভয়ে শিউরে উঠবেন

1585683257041


April Fool - অর্থ এপ্রিলের বোকা। বোকা বানানোর দিবস। ধোঁকা দেওয়ার দিন। এ দিনটিতে মিথ্যা বলে, কষ্ট দিয়ে কিংবা প্রতারণা করে হাস্যরস সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। তাই হয়ে আসছে দীর্ঘদিন। প্রশ্ন হল, দিবসটি এল কি ভাবে? কারা ছিল এপ্রিলের বোকা? আমরাই বা কেন পালন করছি এ দিবসটি ? দিবসটি পালন করা আমাদের জন্য কতুটুক যৌক্তিক? তবে কি না জেনে, না বুঝেই “এপ্রিল ফুল” পালন করছি আমরা ? যদি বলি এপ্রিল ফুল” মানেই মুসলমানদের বোকা বানানোর দিন; মুসলমানদের ধোকা দেওয়ার দিন এটি!  ১৪৯২ সালের ১ এপ্রিল তাইতো করা হয়েছিল। হ্যাঁ মুসলমানদের বোকাই বানানো হয়েছিল এপ্রিলের এই দিনটিতে।

এপ্রিল ফুল মুসলিম ইতিহাসের এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পাশ্চাত্যের কায়দায় মুসলিম দেশগুলোতেও প্রতি বছর কিছু লোক এপ্রিল ফুল ডে পালন করে যাচ্ছে অবলীলায়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ বহু মুসলিম সে ইতিহাস ভুলে গিয়ে এপ্রিলের দিনটিকে স্বাচ্ছন্দে অংশ গ্রহণ করছেন এবং প্রচুর কৌতুক ও রসিকতা উপভোগ করছেন। সেদিন ছিল ১৪৯২ সালের ১ এপ্রিল। ইউরোপের বুকে খ্রিষ্টান বাহিনী ধোকা দিয়ে শহরে প্রবেশ করে অসহায় মুসলিম নারী-পুরুষ, শিশুদের মসজিদের ভেতর আটকে রেখে। পরে একযোগে শহরের সমস্ত মসজিদে আগুন লাগিয়ে বর্বর উল্লাসে মেতে ওঠে তারা।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সে দিন স্পেনের কুখ্যাত ফার্ডিন্যান্ড আল্লাহর ঘর পবিত্র মসজিদের চারি পার্শ্বে আগুন লাগিয়ে নৃশংসভাবে হাজার হাজার নিরপরাধ মুসলমানদের হত্যার মাধ্যমে বিশ্বাস ঘাতকতার পরিচয় দেয় এবং রক্তে রঞ্জিত করে গ্রানাডার রাজপথ এবং তাদের জোরপূর্বক খ্রিষ্টান বানায়। ফার্ডিন্যান্ড সে দিন আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলে ছিল “হায় মুসলমান! “অঢ়ৎরষ ঋড়ড়ষ” তোমরা এপ্রিলের বোকা।” স্পেনীয়দের দ্বারা মুসলমানদের বোকা বানানোর এই নিষ্ঠুর বিশ্বাসঘাতকতা বা শঠতা স্মরণীয় রাখার জন্য খ্রিষ্টান জগৎ প্রতি বছর ১লা এপ্রিল খেলে থাকে রসিকতার খেলা, যে খেলা সকলের কাছে বড় করুণের বড় বেদনার হওয়ার কথা।



ইতিহাসের হৃদয়বিদারক ঘটনা ভুলে না গেলে এপ্রিল ফুল কোনও মুসলিমকে আনন্দ দান করতে পারে না। এখন আমরা কি পয়লা এপ্রিল হাসি-আনন্দের সাথে “এপ্রিল ফুল ডে” উদযাপন করব, নাকি ইউরোপের বুকে অসহায় মুসলিম নারী-পুরুষ, শিশুদের নৃশংস হত্যাকান্ডের স্মরণে দুঃখ অনুভব করব, সকলে ভেবে দেখবেন কি? এপ্রিল ফুলের এ মর্মান্তিক ইতিহাস জানার পর কি আমরা এ দিনটিকে আমোদ-প্রমোদ কিংবা আনন্দের দিন হিসেবে পালন করতে পারি? কক্ষনই না। এ দিনটি আসলে হওয়া উচিৎ আমাদের শোকের দিন।


আর একটু বিস্তারিত জানা যাক--

কয়েক শ’বছর আগে ঘটনা। ইসলামের শাশ্বত সৌন্দর্য ও কল্যাণে আকৃষ্ট হয়ে বিশ্বের দেশে দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের যে জোয়ার ওঠে সেই ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের মাটিতেও। অষ্টম শতাব্দীতে স্পেনে কায়েম হয় মুসলিম শাসন। মুসলমানদের নিরলস প্রচেষ্টায় স্পেন জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সভ্যতার ক্ষেত্রে বিস্ময়কর উন্নতি লাভ করে । দীর্ঘ ৮০০ বছর একটানা অব্যাহত থাকে এ উন্নতির ধারা। স্পেনে মুসলমানদের ৮০০ বছরের গৌরবময় শাসনের ফলে দেশটিতে তখন অর্থসম্পদ, বিত্ত-বৈভবের অঢেল জোয়ার । মুসলমানরা ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে ভুলে যায় কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা।


নৈতিক অবক্ষয় ও অনৈক্য ধীরে ধীরে গ্রাস করে তাদের । এ দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করে খ্রিষ্টান জগৎ,  তারা মেতে উঠে কুটিল ষড়যন্ত্রে । সিদ্ধান্ত নেয়, ‘স্পেনের মাটি থেকে মুসলমানদের উচ্ছেদ করতে হবে ।’ এ চিন্তা নিয়েই পর্তুগীজ রাণী ইসাবেলা চরম মুসলিম-বিদ্বেষী পার্শ্ববর্তী খ্রিষ্টান সম্রাট ফার্দিনান্দকে বিয়ে করেন । বিয়ের পর দু’জন মিলে নেতৃত্ব দেন মুসলিম নিধনের । খ্রিষ্টানদের সম্মিলিত বাহিনী হাজার হাজার নারী-পুরুষকে হত্যা করে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে উল্লাস করতে করতে ছুটে আসে রাজধানী গ্রানাডায়। এতদিনে টনক নড়ে মুসলিম বাহিনীর। কখনও সম্মুখ যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজিত করতে পারেনি বলে চতুর ফার্দিনান্দ পা বাড়ায় ভিন্ন পথে। তার নির্দেশে আশপাশের সব শস্যখামার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।


আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় শহরের খাদ্য সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র ভেগা উপত্যকা । অচিরেই দুর্ভিক্ষ নেমে আসে শহরে । দুর্ভিক্ষ যখন প্রকট আকার ধারণ করলো, তখন প্রতারক ফার্দিনান্দ ঘোষণা করলো, মুসলমানরা যদি শহরের প্রধান ফটক খুলে দেয় এবং নিরস্ত্র অবস্থায় মসজিদে আশ্রয় নেয় তবে তাদের বিনা রক্তপাতে মুক্তি দেওয়া হবে । সেদিন ১৪৯২ সালের ১ এপ্রিল। দুর্ভাগ্য তাড়িত গ্রানাডাবাসী অসহায় নারী ও শিশুদের করুণ মুখের দিকে তাকিয়ে খ্রিষ্টানদের আশ্বাসে বিশ্বাস করে খুলে দেয় শহরের প্রধান ফটক। সবাইকে নিয়ে আশ্রয় নেয় পবিত্র মসজিদে। শহরে প্রবেশ করে খ্রিষ্টান বাহিনী মুসলমানদের মসজিদের ভেতর আটকে রেখে প্রতিটি মসজিদে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর একযোগে শহরের সমস্ত মসজিদে আগুন লাগিয়ে বর্বর উল্লাসে মেতে ওঠে নিষ্ঠুরের মতন।

লক্ষ লক্ষ নারী-পুরুষ-শিশু অসহায় আর্তনাদ করতে করতে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারায় মসজিদের ভেতর। প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখায় দগ্ধ অসহায় মুসলমানদের আর্তচিৎকার যখন গ্রানাডার আকাশ-বাতাস ভারী ও শোকাতুর করে তুলল তখন রাণী ইসাবেলা হেসে বলতে লাগলো, ‘হায় এপ্রিলের বোকা! শত্রুর আশ্বাস কেউ বিশ্বাস করে ?’ সেই থেকে খ্রিষ্টান জগৎ প্রতি বছর ১লা এপ্রিল আড়াম্বরের সাথে পালন করে আসছে-“অঢ়ৎরষ ঋড়ড়ষ” মানে ‘এপ্রিলের বোকা’ উৎসব।

দুঃখের সাথে বলতে হয় “এপ্রিল ফুল” এর প্রকৃত ইতিহাস সর্ম্পকে না জানার কারনে আমরা সেই অসহায় মানুষদের দুর্ভাগ্যকে আনন্দের খোরাক বানিয়ে এপ্রিল ফুল পালন করছি। আমরা আর কতকাল এমন অবুঝ হয়ে থাকব!

তবে এই কাহিনী নিয়ে বহু বিতর্কও  রয়েছে।

এপ্রিল ফুল’ এর ইংল্যান্ডভিত্তিক রয়েছে আরও দু’টি ঘটনা।

প্রথমটি ১৬৯৮ সালের। সেই বছরের ১লা এপ্রিল সেন্ট্রাল লন্ডনে “The Lion Washed” তথা “সিংহ ধৌতকরণ” অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হল। কিন্তু, সেদিন হাজার হাজার দর্শানার্থী গিয়ে দেখল, কিছু নিগ্রো লোককে স্নান করানো হচ্ছে। দর্শানার্থীরা গিয়ে তো পুরোই বোকা বনে গেল। এভাবেই মানুষদের বোকা বানানো হয়েছিল।

আরেকটি ঘটনা পাওয়া যায়, ১৭৪৬ মতান্তরে ১৭৬৪ সালের। সে বছরের Evening Star পত্রিকায় মার্চের শেষসপ্তাহে প্রকাশিত হল, আগামী ১লা এপ্রিল ইংল্যান্ডের ইসলিংটন’এ একটি গাধার প্যারেড হবে। নির্ধারিত দিন হাজার হাজার লোক সেখানে সমবেত হল। কিন্তু, সারাদিন অপেক্ষা করেও প্যারেড অনুষ্টিত হল না। দিনশেষে ওরা বুঝতে পারলো, তাদের গাধা বানানো হয়েছে। এভাবেই ওরা বোকা বনেছিল।

এরকম অনেক কাহিনীও আবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

                                                                                                                   ( সংগৃহীত ) 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad