মিড লাইফ ক্রাইসিসে জর্জরিত! জেনে নিন কিভাবে স্বাভাবিক হবেন - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 30 January 2020

মিড লাইফ ক্রাইসিসে জর্জরিত! জেনে নিন কিভাবে স্বাভাবিক হবেন





৪০-৫০। কারও কারও ক্ষেত্রে ৫০ পেরিয়ে ৫৫ পর্যন্ত বছর বয়স। জীবনকে মোটামুটি ছকে ফেলে পড়ে ফেলা হয়ে যায় এই বয়সে পৌঁছে। বাকি যেটুকু আকস্মিকতা থাকে, তা নিয়ে স্বপ্ন বা উন্মাদনাও কমতে থাকে। এই বয়সে শরীরে যৌন হরমোন কমে যাওয়ার হাত ধরে অনেক সময় গ্রাস করে হতাশা, মন খারাপ, অবসাদ। মনে হয় কিছুই হল না জীবনে। বয়স চলে যাচ্ছে, কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। অসহ্য লাগে সংসারের দৈনন্দিন কাজকর্ম। সঙ্গ দেয় খিটখিটে মেজাজ, একঘেঁয়েমি, একাকিত্ব।
মানসিক এই সব কষ্ট কমাতে কেউ প্রেমের জন্য মুখিয়ে ওঠে, কেউ মেতে ওঠে সাজগোজ-ক্লাব-পার্টি নিয়ে, কেউ ডুবে যায় নেশায়, কেউ আবার অন্য কিছুতে। সব মিলে তৈরি হয় এক চূড়ান্ত অস্থিরতা। যার নাম ‘মিডলাইফ ক্রাইসিস’। অনেকেরই হয়। কেটেও যায় ছয় মাস থেকে এক বছরে। আবার কেউ বা এ থেকেই শিকার হয় নানা অসুখের। এমন সময়েই বিড়ম্বনা বাড়ে। মিডলাইফ ক্রাইসিসকে চিনে, তাকে সামলাতে না জানলে তাই জীবনে সমস্যা বাড়ে। কী করবে এমন সময়ে?  
  • ভালো করে বুঝে নাও, এই সমস্যা একা তোমার হচ্ছে এমন নয়। মাঝ বয়সে অনেকেরই হয়। জীবনে অনেক কিছু পেয়েছেন এমন মানুষেরও হয় না, এমন নয়। কাজে বা সংসারে স্থিতাবস্থা এলে চিন্তাভাবনার অবকাশ বাড়ে। নতুন করে সবকিছুর মূল্যায়ন করতে বসে মানুষ। আর তখনই মনে হয় কত কিছু পাওয়া হয়নি। গ্রাস করে হতাশা, অবসাদ, অস্থিরতা। তবে যুক্তি মেনে চললে কেটেও যায়। কাজেই অস্থির হবে না। 

  • ভেবে দেখো, কম বয়সের চাহিদায় কিন্তু অনেক সময়ই অবাস্তবতা থাকে। যুক্তিহীন চাহিদা যে মেটে না তা বোঝার ক্ষমতা তোমার আছে। অতএব বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নাও। 

  • যুক্তিপূর্ণ চাহিদাও মেটেনি? তা-ও হতে পারে। হয়তো পরিস্থিতির বিরূপ ছিল, তুমি তাকে সামলাতে পারোনি বা ঘাটতি ছিল নিজের মধ্যেই। যে কারণেই না পেয়ে থাকো, তাকে নিয়ে শোক করে আজ আর কোন লাভ নেই। তার চেয়ে ভেবে দেখো যে ক্ষতি হয়েছে তা এখন আর কোনভাবে পূরণ করা যায় কি না।

  • না চাইতেই যা পেয়েছ তাকে অবহেলা করছ না তো? যে যে দায়িত্ব পালন করছ সে বাবদ নিজে কোন সম্মান ফিরে পেয়েছ? একটু ভাবলেই বুঝবে যা পেয়েছ, তাও কিন্তু কম নয়।

ভালো লাগার শেষ নেই, তাই নতুন করে কিছু শুরু করো।
  • এই বয়সে এসে এখন তোমার চাহিদা অনেক বাস্তবসম্মত, অভিজ্ঞতা আছে। কাজেই সাফল্যের আশা খুব বেশি।
  • ভালো থাকার প্রধান অন্তরায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে দূরত্ব বেড়ে যাওয়া। তোমার কোন অবহেলা বা দোষের কারণে তা হলে সেসব বদলাও। না হলে মনে রাখো, সামান্য দূরত্ব মন্দ নয় কিন্তু বরং ঘাড়ের কাছে সারাক্ষণ শ্বাস ফেলা সম্পর্কে বিরক্তি আনে।

দূরত্ব দূর করে মিশো বন্ধু ও কাছের মানুষদের সাথে।
  • এই পড়ে যাওয়া দূরত্বের কারণে হাতে যে একটু সময় এসে গেছে, তাকে কাজে লাগাও। পছন্দের কাজ করো। পড়ো। বেড়াতে যাও। নিজের মনে থাকো। তাদেরও তাদের মতো থাকতে দাও। সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। ছেলেমেয়ের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশো। সাপোর্ট সিস্টেম জোরদার হবে। যুগের হাওয়াও টের পাবে।

  • স্বামী-স্ত্রীও কিন্তু সাপোর্ট সিস্টেমের অঙ্গ। তাকে শ্বাস ছাড়ার অবকাশ দিয়ে, তার সমস্যা বুঝে চললে একাকিত্বের হাত থেকে মুক্তি পাবে। তার সমস্যাও তোমারই মতো। একই ক্রাইসিসে ভোগার আশঙ্কা তারও। কাজেই অদ্ভুত আচরণ দেখলে রেগে না গিয়ে সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করো। অভিযোগ বা হিসাব-নিকাশ করবে না। দুজনেরই আগ্রহ আছে, এমন কিছু খুঁজে বের করো। তারপরও একাকিত্ব না ঘুচলে মনোবিদের পরামর্শ নাও।

রেগে না গিয়ে সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করো।
  • বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের হদিস পেলে হা-হুতাশ করে লাভ নেই। এই বয়সে হয় এ রকম। তবে সংসার ভাঙতে কেউই চায় না। ধৈর্য ধরে, ভালোবেসে কাছে টানো। সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে।
  • এক বছর পরও সমস্যা না কমলে মনোচিকিৎসকের পরামর্শ নাও।







সূত্র: রোদসী

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad