সুদেষ্ণা গোস্বামী: মিষ্টি আলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও মিষ্টি। তাই বাঙালির বিভিন্ন রান্না যেমন সুপ্ত তরকারি চিপস কোপ্তা আরও বিভিন্ন ধরনের রান্নার রসনা তৃপ্তিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মিষ্টি আলু তে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান ছাড়াও রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ,কার্বোহাইড্রেট এবং রাফেজ।তাই এর পুষ্টিগুণ অনেক চলুন জানি কি কি রোগ প্রতিরোধে মিষ্টি আলুর মিষ্টি ভূমিকা পালন করে।
পেটের রোগেঃ
ইরিটিবেল বাউয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) এবং আলসারেটিভ কোলাইটিসের মত পেটের রোগেও উপকারী। মিষ্টি আলুর আরও রয়েছে প্রদাহরোধী গুণ। দেখা গেছে মিষ্টি আলুতে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট যা আছে, সেগুলো প্রদাহসূচকগুলো হ্রাসে সহযোগী।
এটি শর্করা হলেও বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে মিষ্টি আলু রক্তের সুগার মান সুস্থিতিতে এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হ্রাস করতে বেশ উপযোগী। মিষ্টি আলুতে বেশ আঁশ আছে, এর গ্লাইসিমিক ইনডেক্স বেশ নিচুতে (৫০)। তবে এতে আরো কিছু উপাদান আছে যে জন্য রক্তের সুগার কমাতে এটি উপযোগী।
আমাদের চর্বি কোষ থেকে উৎপন্ন হয় প্রোটিন হরমোন ‘এডিপোনেকটিন’। যাদের ডায়েবেটিস তাদের শরীরে এডিপোনেক্টিন হরমোন নিচু এবং মিষ্টি আলুর নির্যাস টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে এডিপোনেকটিন মান তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাড়ায়।
হৃদরোগেঃ / হার্ট সুস্থ রাখতে
এ সবজি ভিটামিন বি৬-এর একটি ভালো উৎস। এটি আমাদের শরীরে হোমোসাইস্টিন নামের কেমিক্যাল কমাতে সহায়তা করে। এই কেমিক্যাল হৃদরোগসহ নানা ধরনের অসুখের অন্যতম কারণ। পটাশিয়াম হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে, কিডনি সুরক্ষায় ও একে কর্মক্ষমতা স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখে।
Harvard University School of Public Health এক গবেষণায় দেখেছেন যে, মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি৬ রয়েছে, যা রক্তের হমোসাইটিনিন ভেঙ্গে দিয়ে রক্তের ধমনী এবং শিরায় রক্ত চলাচল সচল রাখে। এর পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রেখে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ইলেক্ট্রোলাইট হার্টবিট নিয়মিত রাখে।
রাতকানা রোগেঃ
রাতকানা রোগের ক্ষেত্রেও এর উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। সে ক্ষেত্রে রোগীকে প্রাণীর, বিশেষ করে খাসীর কলজের সাথে মিষ্টি আলু খাওয়াবেন।এ ছাড়াও বৃক্কের কার্যক্ষমতায় ঘাটতি বা কাংখিত সময়ের আগেই বীর্যস্খলন-এর সমস্যায় এই উদ্ভিদ কাজে লাগে।
দুশ্চিন্তা নিরাময়ক:
ম্যাগনেসিয়াম স্বাস্থ্যকর রক্ত, হাড়, হার্ট, পেশী এবং নার্ভ গঠন করতে সাহায্য করে। এছাড়া ম্যাগনেসিয়াম স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা দূর করে মন চিন্তা মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
National Health and Nutrition Examination Survey এক জরিপে প্রকাশ করেছে যে, ২ভাগ আমেরিকান প্রতিদিন ৪৭০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম সাপ্লিমেনটরি গ্রহণ করে থাকে। অথচ একটি মাঝারি আকৃতির মিষ্টি আলুতে রয়েছে ৫০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। Medical News Daily এর মতে প্রতিদিন পটাশিয়াম গ্রহণ প্রায় ২০ভাগ বিভিন্ন রোগে মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করে থাকে।
খাওয়ার পদ্ধতিঃ
তাজা মিষ্টি আলু খুব ভালো। ঝলসানো বা সেঁকা আলু সঙ্গে দধি (টক দধি) খুব ভালো খাবার। সুপ ও স্টু বানাতেও এ সবজিটি ব্যবহার করতে পারেন।
(বিঃদ্রঃ- মিষ্টি আলুতে আছে অক্সালেট। যাদের কিডনি বা পিত্তথলির সমস্যা এরা মিষ্টি আলু না খাওয়া ভালো।)
ক্যান্সার প্রতিরোধক:
দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল বিটা-ক্যারটিন। একটি মাঝারি আকৃতির মিষ্টি আলুতে ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারটিন রয়েছে। ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা, দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে। School of Public Health’s Department of Nutrition গবেষণায় দেখেছেন যে, বিটা ক্যারটিন প্রোসটেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।
পি/ব
No comments:
Post a Comment