লবণের প্রস্তাবিত পরিমাণ:
লবণ দুটি জিনিস দিয়ে তৈরি। সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) এর মতে, আমরা যে লবণ খাই তাতে সোডিয়ামের পরিমাণ প্রায়শই খুব বেশি থাকে, যেখানে পটাসিয়ামের পরিমাণ খুব কম থাকে। অতিরিক্ত সোডিয়াম সেবনের কারণে সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ রক্তচাপের শিকার হয় এবং তারা সবসময় হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিতে থাকে। WHO এর মতে, বেশিরভাগ মানুষ দৈনিক ৯ থেকে ১২ গ্রাম লবণ খায়, যার কারণে বিশ্বব্যাপী রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
WHO মানুষের খাদ্যতালিকায় লবণ কমানোর জন্য একটি কর্মসূচি তৈরি করেছে। এর আওতায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো ২০২৫ সালের মধ্যে লবণের ব্যবহার অর্ধেক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে প্রতি বছর বিশ্বে লবণের কারণে আড়াই মিলিয়ন মৃত্যু কমানো সম্ভব।
WHO এবং হার্ভার্ড কি বলে ?
WHO অনুসারে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন ৪ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিৎ নয়। লবণে দুটি উপাদান রয়েছে। সোডিয়াম এবং ক্লোরাইড। হার্ভার্ড মেডিকেল জার্নাল অনুসারে, সাধারণ লবণে ৪০ শতাংশ সোডিয়াম এবং ৬০ শতাংশ ক্লোরাইড থাকে। এর মধ্যে আমাদের শুধুমাত্র ৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম প্রয়োজন। অত্যধিক সোডিয়াম আমাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এতে আমাদের রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়বে। এর সাথে হাড় থেকে ক্যালসিয়াম বের হতে শুরু করবে। আমেরিকায় মানুষ সাধারণত দৈনিক ১.৫ চা চামচ লবণ খায়। এতে প্রায় ৩৪০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম রয়েছে। অর্থাৎ প্রয়োজনের তুলনায় ৭ গুণ বেশি। আমাদের দেশের মানুষ আমেরিকানদের চেয়ে বেশি লবণ খায়।
WHO এর মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন ২ গ্রামের বেশি সোডিয়াম খাওয়া উচিৎ নয়। অর্থাৎ প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যদিও ইউএস ডায়েটারি রেফারেন্সও উচ্চতর গ্রহণের মাত্রা নির্ধারণ করেনি। খাদ্য থেকে সোডিয়ামের উচ্চ সীমা দৈনিক ১৫০০ মিলিগ্রাম। ২৩০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম গ্রহণকে বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়। কিন্তু বিশ্বের সর্বত্রই এই সীমার চেয়ে বেশি পরিমাণে সোডিয়াম গ্রহণ করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত লবণের প্রভাব -
কিডনি রক্ত থেকে সোডিয়াম ফিল্টার করে। কিন্তু যখন তার ক্ষমতার চেয়ে বেশি সোডিয়াম রক্তে প্রবেশ করে তখন কিডনি তা ফিল্টার করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। সোডিয়াম জমার কারণে শরীরে অতিরিক্ত জলের প্রয়োজন হয়। রক্ত থেকে সোডিয়াম অপসারণ করতে হৃদপিণ্ডকে উচ্চ চাপে কাজ করতে হয়। অতিরিক্ত চাপ দিয়ে হার্টের কাজ করার কারণে রক্তচাপ বেড়ে যায়, যা হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
No comments:
Post a Comment