আমাদের দেশে অনেক শ্মশানের মধ্যে এমনও একটি শ্মশান আছে, যেখানে চিতার ওপর শুয়ে থাকলে সে সরাসরি মোক্ষ পায়। কথিত আছে এটিই পৃথিবীর একমাত্র শ্মশান, যেখানে চিতার আগুন ঠাণ্ডা হয় না। আরও কথিত আছে, এখানে প্রতিদিন ৩০০-এর বেশি মৃতদেহ দাহ করা হয়। শুধু তাই নয়, এখানে মৃতদেহকে চিতায় রাখার আগে কর আদায় করা হয়।
বাবা বিশ্বনাথের শহর কাশীতে এই শ্মশান অবস্থিত। এটি মণিকর্ণিকা শ্মশান নামে পরিচিত। সম্ভবত এই ঘাটই পৃথিবীর প্রথম শ্মশান, যেখানে মৃতদের কাছ থেকে কর আদায় করা হয়। এর পেছনেও রয়েছে মজার গল্প। কথিত আছে, মণিকর্ণিকা ঘাটে শেষকৃত্যের মূল্য পরিশোধের ঐতিহ্য প্রায় তিন হাজার বছরের পুরনো।
আসলে 'কর' আদায়ের সূচনা রাজা হরিশচন্দ্রের সময় থেকে। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, একটি প্রতিশ্রুতির কারণে, রাজা হরিশচন্দ্র ভগবান বামনকে তার সব দান করে কাল্লু ডোমের কাছে কাজ করছিলেন। এ সময় তার ছেলের মৃত্যু হয়। যখন তার স্ত্রী তার ছেলেকে নিয়ে দাহ করার জন্য মণিকর্ণিকা শ্মশানে পৌঁছেছিলেন, তখন প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হরিশ্চন্দ্র দাহ করার আগে স্ত্রীর কাছে অনুদান চেয়েছিলেন, কারণ কাল্লু ডোম আদেশ দিয়েছিলেন যে, দান না নিয়ে কাউকে দাহ করা যাবে না।
অথচ তার স্ত্রীর সে সময় দেওয়ার মতো কিছুই ছিল না। তা সত্ত্বেও রাজা হরিশচন্দ্র দান না নিয়ে দাহ করতে রাজি হননি। এরপর বাধ্য হয়ে তার স্ত্রী শাড়ির টুকরো ছিঁড়ে ফেলে। কথিত আছে আজও একই প্রথা অব্যাহত রয়েছে। আজও এখানে দান নেওয়া হয় কিন্তু নেওয়ার পদ্ধতি বদলে গেছে। এই কারণেই আজকের তারিখে লোকেরা একে 'কর' বলে।
No comments:
Post a Comment