উচ্চ রক্তচাপ একটি বড় সমস্যা। এই রোগে বিভিন্ন কারণে রক্তনালী সংকুচিত হয়, যার কারণে রক্তনালীতে অপ্রয়োজনীয় চাপ বেড়ে যায়। হৃৎপিণ্ড শরীরের প্রতিটি অংশে বিশুদ্ধ রক্ত পাম্প করে, কিন্তু রক্তের ধমনীতে চাপের কারণে হৃদপিণ্ডকে তা পাম্প করতে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। এই অবস্থাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।
উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ, মস্তিষ্ক, কিডনি ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও মতে, বিশ্বব্যাপী ১.১৩ বিলিয়ন মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। অর্থাৎ প্রতি চারজন পুরুষের মধ্যে একজন এবং প্রতি পাঁচজন নারীর একজন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যে উচ্চ রক্তচাপ আছে এমন লোকেরা তাদের রক্তচাপ কমানোর পরিবর্তে বাড়িয়ে দেয়।
ওয়েবএমডির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ৪ জনের মধ্যে তিনজন উচ্চ রক্তচাপ রোগী তাদের রক্তচাপ ভারসাম্য রাখতে সম্পূর্ণরূপে অক্ষম। তারা রক্তচাপ কমানোর পরিবর্তে বাড়িয়ে দেয়।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, রক্তচাপের ওষুধ খাওয়া সত্ত্বেও এই মানুষগুলো তাদের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ১২০/৮০ স্বাভাবিক রক্তচাপ বিবেচনা করেছে।
এর চেয়ে বেশি রক্তচাপ থাকলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই মান পর্যন্ত বিপি বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তবে বেশিরভাগ লোক ওষুধ খাওয়া সত্ত্বেও তাদের রক্তচাপ বজায় রাখতে অক্ষম।
ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন এক্সামিনেশন সার্ভে থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গবেষকরা এই গবেষণা পরিচালনা করেছেন। এতে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ২৭৫৯৯ জনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
গবেষকরা জানার চেষ্টা করেছেন যে এদের মধ্যে কতজন উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাচ্ছেন। ১৩০ এর উপরে বিপি উচ্চ রক্তচাপ হিসাবে বিবেচিত হয়। অর্থাৎ যাদের রক্তচাপ ১৩০-এর উপরে, তারা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাচ্ছিলেন।
গবেষণায় চমকপ্রদ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন যে হাইপারটেনশনে আক্রান্ত ৫ জনের মধ্যে একজন রক্তচাপের ওষুধ খাচ্ছেন। কিন্তু এই ওষুধটি রক্তচাপ কমাতে পারেনি বরং বাড়িয়ে দিয়েছে।
ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটি স্কুলের ডক্টর ডেভ ডিক্সন বলেন, এই গবেষণার মাধ্যমে আমাদের উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ কমাতে হবে। তিনি বলেন, হাইপারটেনশনের সব ওষুধ রক্তচাপ বাড়ায় না, তবে আমাদের এটিকে গুরুত্ব সহকারে অধ্যয়ন করতে হবে।
No comments:
Post a Comment