বোর্ড পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। প্রতিটি শিশুর সোনালী ভবিষ্যতের জন্য ১০ তম এবং ১২ তম পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানেই ক্যারিয়ারের সঠিক দিকনির্দেশনার শুরু, কিছু কিন্তু, পরীক্ষা এমন একটা কথা, শুনলে বেশির ভাগ শিশুই নার্ভাস, টেনশন এবং চিন্তিত হয়ে পড়ে।
তখনই আসে যখন শিশু প্রথম থেকেই ঠিকমতো পড়াশুনা করে না বা করলেও চিন্তা দূর হতে চায়না। এইসময় অভিভাবকদের সন্তানকে সঠিক নির্দেশনা দিতে হবে।পরীক্ষার ভয়, স্ট্রেস তাদের থেকে দূর করতে হবে।
ভালো নম্বর পাওয়ার চাপ বেশির ভাগ অভিভাবকই তাদের সন্তানদের দিয়ে থাকেন কিন্তু তা রাখলে সন্তানের ভেতরেও উত্তেজনা বাড়ে। যদি আপনিও তাই করেন তবে তা এড়িয়ে যান।
তাদের ভেতর থেকে ভয়, নার্ভাসনেস, স্ট্রেস, উদ্বেগ দূর করার টিপস, অভিভাবকরা তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে পারেন। সন্তানকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করার জন্য চিন্তা দূর করার জন্য।
বাচ্চার উপর খুব বেশি চাপ দেবেন না: সন্তানকে সব সময় পড়াশোনার জন্য চাপ দেবেন না। স্ট্রেস শুধুমাত্র অতিরিক্ত চাপ থেকে বৃদ্ধি পায়। এতে পরীক্ষার ফলাফলের পাশাপাশি শিশুর মনে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
প্রতিটি শিশুর বোঝার, শেখার এবং চিন্তা করার ক্ষমতা আলাদা। সমস্ত শিশু তাদের নিজস্ব গতিতে শেখে। এমতাবস্থায় অভিভাবকদের অতিরিক্ত চাপ তাদের পরীক্ষা নিয়ে আরও চিন্তিত করে তুলতে পারে।
সন্তানের সাথে কথা বলুন: সন্তান যদি পরীক্ষার চাপে থাকে, তাহলে সে বিষয়ে কথা বলুন। শিশুকে বুঝিয়ে বলুন যে এটি একটি খুব সাধারণ সমস্যা। যা তাঁরাও পরীক্ষার সময়ও অনুভব করেছিল। কোনও প্রত্যাশা ছাড়াই যেন সে পরীক্ষা দেয়।
সন্তানের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তার যে কোনও সম্ভাব্য প্রশ্ন বা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। কোনও বিষয়ে আপনার সন্তানের বোঝাপড়া, দৃষ্টিভঙ্গি সরাসরি ভুলভাবে উপস্থাপন করবেন না, কখনো অবহেলা করবেন না।
পরীক্ষার সময় আপনার এবং আপনার সন্তানের মধ্যে একটি সুস্থ কথোপকথন হওয়া উচিৎ। এটি করা শুধুমাত্র আপনার সন্তানকে অনুপ্রাণিত করবে না, তবে তার যুক্তি এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতাও উন্নত করবে।
নিয়মিত তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ দিন: ব্যস্ততার সামনে নিজের সন্তানের পড়াশোনাকে অবহেলা করবেন না। আপনার শিশু কী পড়ছে, কখন, কীভাবে পড়ছে সেদিকেও মনোযোগ দিন। তাদের জন্য একটু সময় বের করুন।
পরীক্ষা শুরুর ৪-৫ দিন আগে প্রস্তুতি নিলে শিশুর ওপর অনেক চাপ পড়বে। প্রতিটি বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝতে এবং পরীক্ষার দিন চাপ কমানোর জন্য একটি সময় সারণী তৈরি করুন। নিজের সন্তানের সাথে বসুন, একটি সময়সূচী তৈরি করুন যাতে তার পুনর্বিবেচনার জন্য যথেষ্ট সময় থাকে।
পুষ্টিকর খাবার দিন: পড়াশোনায় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে সন্তানের স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা হতে পারে। পরীক্ষার সময় নিজের সন্তানের খাদ্যের প্রতি বিশেষ যত্ন নিন।
খাদ্যতালিকায় যাতে প্রচুর পরিমাণে শুকনো ফল, তাজা ফল এবং সবুজ শাকসব্জি থাকে। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করলে সে সুস্থ থাকবে। তার একাগ্রতা বৃদ্ধি পাবে এবং পরীক্ষার সময় সে তার সেরাটা করতে পারবে।
বিরতিও প্রয়োজনীয়: সন্তানকে একটানা দীর্ঘ সময় অধ্যয়ন করতে দেবেন না। এতে শরীরের পাশাপাশি মনও ক্লান্ত হবে। পড়াশুনার মাঝে ছোট বিরতি নিতে উৎসাহিত করুন। পাওয়ার ন্যাপ নিতে পারেন।
স্ট্রেচিং ব্যায়াম করতে শেখান। প্রিয় গান শুনতে পারে। এতে তাদের মেজাজও সতেজ থাকবে এবং ধ্যান করে তারা আবার বসে পড়তে পারবে।
কখনো কারো সাথে তুলনা করবেন না: প্রায়শই বাবা-মায়ের অন্য ভাইবোন, বন্ধুদের সাথে তুলনা করার অভ্যাস থাকে। একটা কথা মনে রাখবেন, প্রত্যেক শিশুরই নিজস্ব সম্ভাবনা থাকে। যে বাচ্চা ১০০ নম্বর আনে, সে সব জানে এমনটা জরুরী নয়।
সন্তানের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ করবেন না। পরীক্ষায় আপনার সন্তানের স্কোর তার প্রকৃত সম্ভাবনাকে প্রতিফলিত নাও করতে পারে। এমতাবস্থায়, কখনই তার নম্বরের ভিত্তিতে তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করবেন না বা তাকে তার বন্ধুদের সাথে তুলনা করবেন না।
নেতিবাচক কথা বলা, অন্যের সাথে তুলনা করা পরীক্ষার পারফরম্যান্সের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। একজন অভিভাবক হিসাবে এই টিপসগুলি অনুসরণ করুন, তারপর দেখুন কীভাবে আপনার সন্তান চাপ ছাড়াই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
No comments:
Post a Comment