প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রেসকার্ড নিউজ: কোনও দিন নিজে বাঁশ খেয়ে বা কাউকে বাঁশ দিয়ে দেখেছেন ? না আমি সেই বাঁশের কথা বলছিনা, আমি আজ বলছি ঔষধি যুক্ত বাঁশের কথা। এই বাঁশ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
আমাদের আশেপাশে ও গ্রামেগঞ্জে যে লম্বা লম্বা বাঁশ গাছ দেখা যায়, সেগুলো স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর। বাঁশঝাড়ে বাঁশের যে নরম অংশ দেখতে পাওয়া যায় সেটিকে বলে বাঁশের কোঁড়ল।এটি একটি খাদ্য। এটিই আমাদের নানারকম রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
চীনদেশে এই বাঁশের শাঁস খুবই জনপ্রিয় খাবার। সেখানে একে 'স্বাস্থ্যকর খাবারের রাজা' বলা হয়। বাঁশের শাঁস আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হয়।
বাঁশের একাধিক ঔষধিগুণ রয়েছে। শ্বাস-প্রস্বাসের সমস্যায় বাঁশের শাঁস খুবই উপকারী। বাঁশের কোঁড়লে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শ্বাস-প্রস্বাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
কান ও দাঁতের ব্যাথায় বাঁশের কোঁড়ল আরাম দিতে পারে। এতে রয়েছে এ্যানালজেসিক বৈশিষ্ট্য যা ব্যথা কম করতে সাহায্য করে। মুখে আলসার ? চিন্তা নেই। বাঁশের শাঁস বা ব্যাম্বু শুটস্ ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। কফ ও শুকনো কাশির সমস্যা ? বাঁশের শাঁস দিয়ে জুস তৈরি করে খান। তাড়াতাড়ি আরাম পাবেন।
ব্যাম্বু শুটস্ ডায়রিয়ার অন্যতম ঘরোয়া প্রতিকার। কারণ এতে রয়েছে গ্লুকোসাইড, নিউক্লিয়াস এনজাইম, বিটন ও সাইনোজেন ক্যামিকেল কম্পাউন্ড, যা ডায়রিয়ার সমস্যা কম করে।
পাইলসের সমস্যা দূর করতেও বাঁশ খাওয়া খুব দরকার। কারণ এতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার রয়েছে, যা হজমে সাহায্য করে ও পায়খানা পরিষ্কার ও নরম করে।
বাঁশে উপস্থিত ডায়েটরি ফাইবার শরীরে কার্বোহাইড্রেটের ভাঙন ও সুগারের শোষণ ধীর করে, যার ফলে ডায়াবেটিস লেবেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাঁশের শাঁসে রয়েছে এনালজেসিক বৈশিষ্ট্য, যা অনিয়মিত পিরিয়ড ও পিরিয়ডের যন্ত্রণায় সাহায্য করে।
বাঁশ দিয়ে তৈরি ভিনিগার ত্বকের বাইরের অংশ উন্নত করে ও ত্বক সম্পর্কিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আপনি যদি বাঁশ পাতা ও বাঁশের শাঁস দিয়ে সবজি তৈরি করে খান, তাহলে পেটের আলসার থেকে মুক্তি পাবেন।
এছাড়া বাঁশের পাতা বেঁটে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগালে ত্বকের সংক্রমণ, ফোলা ভাব ও লাল ছোপ ছোপ দাগ দূর হবে। এছাড়া প্রদাহ বা জ্বালা, জ্বর ও শরীর ঠান্ডা রাখতেও বাঁশের শাঁস উপকারী।
আপনি চাইলে বাঁশের স্যুপ তৈরি করে বা বাঁশের কোঁড়ল দিয়ে চূর্ণ তৈরি করেও খেতে পারেন, উপকার পাবেন। আপনি বাঁশের মোরব্বা তৈরি করে ও বাঁশের কোঁড়ল দিয়ে আচার তৈরি করেও খেতে পারেন, মুখ ছাড়বে।
তাই বলি কেউ বাঁশ দিতে এলে কখনই না বলবেন না। চাইলে আপনিও কাউকে অনায়াসে বাঁশ দিতে পারেন, বাঁশগ্রহীতা উপকৃত হবেন।
আজ এই পর্যন্তই, আগামী সপ্তাহে আবার হাজির হবো অন্য কোনো কিছুর স্বাস্থ্য উপকারীতা নিয়ে।
No comments:
Post a Comment