বিজেপি প্রশান্ত কিশোর ও তৃণমূলকে দিয়ে কংগ্রেস মুক্ত ভারত মিশন সফল করতে চাইছে : ভূপেশ বাঘেল

শিব সেনার পর এবার পিকে ও তৃণমূলকে পেরেক ঠুকলেন ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল।

 মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তার "ইউপিএ নেই" বলে মন্তব্য করে, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল রবিবার বলেছেন যে টিএমসি প্রধানকে অবশ্যই স্পষ্ট করতে হবে যে তিনি ক্ষমতায় থাকা লোকদের সাথে লড়াই করে বা সহকর্মী বিরোধী দলগুলির সাথে লড়াই করে টিএমসিকে প্রধান বিরোধী দল করতে চান কিনা। তিনি আরও বলেছিলেন যে কংগ্রেস ছাড়া জাতীয় স্তরে কোনও বিরোধী জোট সম্ভব নয় যাকে ব্লকের প্রধান স্তম্ভ হতে হবে BJP-র বিরুদ্ধে ।

 পিটিআই-এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে, বাঘেল বলেছিলেন যে 2024 সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধী দলের মুখ কে হবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ)- এর সম্মিলিত নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ।

 তাঁর মন্তব্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কংগ্রেস নেতৃত্বকে তিরস্কার করে মুম্বাইতে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সাথে সাক্ষাতের পরে "কোন ইউপিএ নেই" বলে মন্তব্য করেন। 

মমতা ব্যানার্জির মন্তব্য সম্পর্কে, বাঘেল বলেন, "আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে চাই যে আপনি প্রধান বিরোধী দল হতে চান, এটি একটি খুব ভাল জিনিস। আপনি যদি স্বপ্নকে আশ্রয় করে পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চান তবে তা স্বাগত জানানো হবে, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আপনি ক্ষমতায় থাকাদের সঙ্গে লড়াই করে প্রধান বিরোধী দল হতে চান নাকি সহকর্মী বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে চান ।

 তিনি বিশ্বাস করেন যে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে বাঘেল বলেন, পাওয়ারের সাথে দেখা করার পর ব্যানার্জির স্পষ্ট করা উচিত, তিনি বলেছিলেন "কোন ইউপিএ নেই" কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে তার বৈঠকের পরে, কী ঘটেছে তা নিয়ে কিছুই বেরিয়ে আসেনি এবং পরে তিনি কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন। "প্রধানমন্ত্রীর সাথে তিনি কী আলোচনা করেছেন তা প্রকাশ্যে আসেনি কেন," তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন।

 গোয়ার মতো কিছু ভোট-নির্ভর রাজ্যে হঠাৎ করেই টিএমসি ভোটের ময়দানে প্রবেশের বিষয়ে, বাঘেল বলেছিলেন যে মনে হচ্ছে তারা সেই রাজ্যগুলিতে বিজেপিকে সাহায্য করতে চায়। “তাদের গোয়ায় কিছু নেই কিন্তু তারা লড়াই করতে চায়। তাই তারা বিরোধী ভোটকে ভাগ করতে চায়।"

বাঘেল তার মন্তব্যের জন্য নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোরকেও হিট করেছেন। বাঘেল বলেন, “প্রশান্ত কিশোর অর্থের জন্য কাজ করেন, তা বিজেপি, কংগ্রেস, টিএমসি বা জেডি(ইউ) র নির্বাচনী প্রচারের জন্য। তিনি একজন পেশাদার ব্যক্তি, তাই তাকে বলা উচিত যে তিনি এখন কার জন্য কাজ করছেন,” ।

 ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন যে, কিশোর কোনও রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নন যে তিনি তার মতো মন্তব্য করবেন, তাই তাকে স্পষ্ট করা উচিত যে তিনি বিজেপির হয়ে কাজ করছেন নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে। “(নরেন্দ্র) মোদীজি, (অমিত) শাহজি, কংগ্রেস-মুক্ত ভারত নিয়ে কথা বলেছেন, তারা তা করতে পারেনি। এখন, সেই কাজটি কি প্রশান্ত কিশোরকে দিয়ে করতে দেওয়া হয়েছে।"

 কংগ্রেস ছাড়া কোনও জোট জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব কিনা? এই প্রশ্নে বাঘেল বলেছিলেন যে আজ পর্যন্ত এটি সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। কংগ্রেস জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটের প্রধান স্তম্ভ হবে কিনা ? এই প্রশ্নের উত্তরে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "কংগ্রেস হবে (মূল স্তম্ভ), এটি একটি সোজা কথা।" “কাশ্মীর থেকে কেরালা পর্যন্ত কংগ্রেসের উপস্থিতি রয়েছে। অন্যান্য বিরোধী দলগুলির এই ধরণের উপস্থিতি নেই।"

 রাহুল গান্ধীকে 2024 সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধী দলের মুখ হওয়া উচিত কিনা জানতে চাইলে, বাঘেল বলেছিলেন যে তিনি এই জাতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য "খুব ছোট একজন ব্যক্তি" এবং এই জাতীয় সমস্ত বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য দলের অনুমোদিত ব্যক্তি তিনি নন। যাইহোক, তিনি বলেছিলেন, "বেশ কয়েকটি দল ইউপিএ নিয়ে গঠিত যার চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী, এবং সমস্ত দল একসাথে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।" বাঘেল আরও বলেছেন যে গোটা দেশে, কেবলমাত্র একজন নেতা রয়েছেন যিনি কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপিকে নাস্তানাবুদ করছেন এবং তিনি হলেন রাহুল গান্ধী।

 তিনি বলেছিলেন যে বিজেপি রাহুল গান্ধীকে নিয়ে "বিচলিত" তাই এটা সম্ভব যে তারা "এই লোকেদের (টিএমসি, কিশোর এবং অন্যান্য সমালোচককে) দিয়ে তাকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে"।

 মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন দল সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কয়েকটি রাজ্যে কংগ্রেস নেতাদের TMC তে যোগদান করাচ্ছেন । সংসদে বিরোধী ঐক্য নিয়ে কংগ্রেসের ডাকা বিরোধী বৈঠকে TMC যোগ না দেওয়ায় দুই দল নিজেদের আরও দূরে সরিয়ে নিয়েছে।

 বাঘেল উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে কংগ্রেসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক, তিনি আরও বলেছিলেন যে ইউপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তার পথে চলে যাচ্ছেন কারণ "সবাই তার উপর রাগান্বিত এবং তার কোন অর্জন নেই।"

 উত্তর প্রদেশ নিয়ে বাঘেল সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি উভয়কেই কটাক্ষ করে বলেছেন যে, "কংগ্রেস ভালো করবে। বিএসপি কোথাও নেই। মায়াবতী জি বের হননি। অখিলেশ জি এখন ভোটের কাছাকাছি এসেছেন এবং গত সাড়ে চার বছরে কোথাও দেখা যায়নি। কংগ্রেস লাভ করছে। আমরা ভাল পারফরম্যান্স এবং একটি ভাল ফলাফল করার দিকে তাকিয়ে আছি।"