উত্তর কোরিয়া এমন একটি দেশ যেটি গোপনীয়তায় পূর্ণ। এর একটি কারণ হল এই জায়গাটি সম্পর্কে মানুষ খুব বেশি কিছু জানে না। তাই বিশ্ব উত্তর কোরিয়াকে শুধুমাত্র একটি রহস্যময় দেশ হিসেবেই জানে।
এই দেশটি যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি এখানে একটি চমৎকার হোটেলও রয়েছে। যাইহোক, আপনি যখনই কোনো হোটেলে থাকেন,তখন আপনাকে যে কোনও তলায় অবাধে ঘুরে বেড়াতে দেওয়া হয়। অতিথিদের কোনো তলায় যেতে কোনো বিধিনিষেধ থাকে না, তবে উত্তর কোরিয়ার এই হোটেলটি এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আলাদা ।
উত্তর কোরিয়ার হোটেলের পঞ্চম তলায় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। মানুষ বিশ্বাস করে যে এর পিছনে লুকিয়ে আছে একটি গভীর রহস্য। আমরা যে হোটেলের কথা বলছি সেটি হল ইয়াংগাকডো হোটেল, যেটি রাজধানী পিয়ংইয়ং-এ অবস্থিত।
এটি কোনো সাধারণ হোটেল নয়, উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় হোটেল ইয়াংকাডো। যা তায়েডং নদীর মাঝখানে অবস্থিত ইয়াংগাক দ্বীপে (দ্বীপ) নির্মিত। মোট ৪৬ তলার ইয়াংকাডো হোটেলে মোট ১০০০টি কক্ষ রয়েছে। এটিতে চারটি রেস্তোরাঁ, একটি বোলিং অ্যালি এবং একটি ম্যাসাজ পার্লার রয়েছে।
এটির নির্মাণ কাজ ১৯৮৬ সালে শুরু হয়েছিল এবং ১৯৯২ সালে সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন হয়েছিল। এই হোটেলটি ফ্রান্সের প্রচারাভিযান সংস্থা বার্নার্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল, যা ১৯৯৬ সালে সর্বপ্রথম সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল।
ইয়াংকাডো হোটেলের লিফটে পঞ্চম তলায় কোনো বোতাম নেই। এমন পরিস্থিতিতে হোটেলের পঞ্চম তলায় যেতেও সাহস পায় না কেউ। উত্তর কোরিয়া এ বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর নিয়ম করেছে, যে অনুযায়ী কোনো বিদেশি নাগরিক পঞ্চম তলায় গেলে তাকে চিরতরে এখানকার কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়।
এক মার্কিন নাগরিক জানিয়েছেন, হোটেলের ইয়াংকাডো হোটেলের পঞ্চম তলায় বাঙ্কারের মতো ছোট ছোট কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। যার তালা আছে। এসব কক্ষের দেয়ালে আমেরিকা ও জাপানের বিরুদ্ধে আঁকা রয়েছে।
এছাড়া কিছু ছবি উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের বাবা কিম জং ইলেরও। বলা হয় আমেরিকায় তৈরি প্রতিটি পেইন্টিংয়ে লেখা আছে আমেরিকায় তৈরি সবকিছুই আমাদের শত্রু, আমরা আমেরিকার কাছ থেকে হাজার বার প্রতিশোধ নেব।
যদিও সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল উত্তর কোরিয়ার সরকার বলছে ইয়াংকাডো হোটেলের পঞ্চম তলা নেই। তাই সেখানে অবস্থান করা লোকদের এবং উত্তর কোরিয়া সরকারের বিভিন্ন দাবি একদিকে এক অদ্ভুত রহস্যের জন্ম দিচ্ছে।
No comments:
Post a Comment