বিধানসভা ভোটের আগে দীর্ঘদিনের দল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কাছেই নন্দীগ্রাম থেকে হেরে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় না এলেও মমতার কাছে হেরে যাওয়া গেরুয়া শিবির শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা করেছে। আর তারপর থেকে এই মুহূর্তে তৃণমূলের কট্টর প্রতিপক্ষ যদি কেউ হয়ে থাকেন, তবে তা শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া আর কেউ নন। কিন্তু এবার দলবদলের পরিবেশের মধ্যেই শুভেন্দুর ‘ঘরে ফেরা’ নিয়ে জল্পনার সৃষ্টি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তাঁর দাবী, শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূলে ফেরা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়, সোনালী গুহ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, সুনীল মণ্ডল সবাই পুরনো দলে ফিরেছেন। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে বিজেপির ‘পোস্টার বয়’ এখন শুভেন্দু অধিকারী। সেই শুভেন্দু অধিকারী প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, "কয়েকদিনের মধ্যেই বিরোধী দলীয় নেতার লাল বাতি নিভে যাচ্ছে। তিনি তৃণমূলেও ফিরতে পারেন। এখন এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।" কিন্তু এমন দাবী কেন? তাঁর দাবী, "নন্দীগ্রাম বিধানসভার ফলাফল নিয়ে এখন আদালতে মামলা চলছে। মামলার রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আর বিরোধী দলীয় নেতার পদে থাকবেন না।"
প্রসঙ্গক্রমে, রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলে থাকাকালীন সৌমেন ও শুভেন্দু বিপরীত গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ শুভেন্দু তৃণমূলে ফিরেছেন, কেন তা নিয়ে মন্তব্য করতে শুরু করেন রাজ্যের মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে রবিবার নন্দীগ্রামের সীতানন্দ কলেজ মাঠে সভা করেছে তৃণমূল। সেখানে সৌমেন মহাপাত্র বলেন, 'রাজ্যের বিরোধী দলনেতার হাত ধরে যারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই ইতিমধ্যেই তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। আগামী দিনে শুভেন্দু অধিকারীর যোগদান সময়ের ব্যাপার মাত্র।''
সৌমেন মহাপাত্র যখন এই দাবী করছেন, তখন সভায় তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, তৃণমূল নেতা পূর্ণেন্দু বসু, বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী, তমলুক জেলা সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান উপস্থিত ছিলেন। এই মঞ্চ থেকে ১০ নভেম্বর শহীদ দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু শুভেন্দুকে নিয়ে সৌমেন মহাপাত্রের দাবী এদিন সবকিছুকেই যেন ছাপিয়ে গেছে। এই দাবীর প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারী কী বলেন, সেটাই দেখার।
No comments:
Post a Comment