এ যেন আমেরিকার জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনার পুনরাবৃত্তি! প্রকাশ্য রাস্তায় এক যুবকের বুকে লাথি মারছে এক সিভিক ভলেন্টিয়ার। তবে এই অমানবিক ও নির্মম দৃশ্য এবার আর বিদেশের মাটিতে নয়, দেখা গিয়েছে খোদ কলকাতার রাজপথে। রবিবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সদন চত্বরের এই ঘটনার ভিডিও রীতিমত ভাইরাল এবং এই ভিডিও দেখে নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্রই। যদিও প্রেসকার্ড নিউজ ভাইরাল এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার পাশে শুয়ে আছেন এক যুবক, আর তাঁর বুকে বুট পায়ে দিয়ে চেপে ধরে রেখেছে কেউ। ওই ব্যক্তির পরনে সিভিক পুলিশের সবুজ ইউনিফর্ম। তিনি আসলে একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার। আর মাটিতে পড়ে থাকা যুবক চোর সন্দেহে ধরা পড়ে। আশেপাশের সবাই অবশ্য সিভিক ভলেন্টিয়ারের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিল যুবককে এবং ওই যুবকও নিজেকে মুক্ত করতে চাইছিলেন, কিন্তু তিনি পেরে উথছিলেন না। এদিকে সিভিক ভলেন্টিয়ার মাটিতে পড়ে থাকা যুবককে বুট দিয়ে বুকে ও পিঠে লাথি মারছে। এই ঘটনা আবার উপস্থিত অনেকেই ক্যামেরায় বন্দি করেন। ভিডিওটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওতে এই অমানবিক দৃশ্য দেখতেই নেট দুনিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিষয়টি দেখতে পেয়েই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ময়দানে নামেন খোদ কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। তিনি বলেন, "ঘটনা দেখে আমি খুবই বিব্রত। আমি দুঃখিত। সিভিক ভলান্টিয়ারকে রাতারাতি বরখাস্ত করা হয়। এত বেশি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই অমানবিক কাজটি ঘটল তা জানতে সোমবার সেই সময় কর্তব্যরত সমস্ত ট্রাফিক অফিসারকে ডেকে পাঠানো হয়। শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য অফিসারদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করা হবে।"
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারের নাম তন্ময় বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যায় এক্সাইড মোড় থেকে হাওড়ার দিকে চলন্ত বাসে ওই যুবক এক মহিলার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছিল। এরপর সে পালিয়ে গেলে সাধারণ মানুষ তাকে ধরে মারধর করে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করলেও ছেলেটিও পুলিশের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করে। তখনই সে তাকে থামানোর জন্য পায়ে চেপে ধরেছিল। যদিও এত কিছু বলে কোনও লাভ হয়নি, তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
কিন্তু শহরের রাজপথে প্রকাশ্যে এমন অমানবিক দৃশ্য দেখে হতবাক কলকাতার মানুষ।
No comments:
Post a Comment