লক্ষ্মণনগরীর প্রতিটি রঙ অনন্য। যেখানে গঙ্গা-যমুনির রঙ একে অন্য শহর থেকে আলাদা করেছে, অন্যদিকে এখানকার ভবনগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এখানে স্থাপিত ধর্মীয় স্থানগুলোরও রয়েছে নিজস্ব স্বতন্ত্র পরিচয়। আলীগঞ্জের পুরাতন হনুমান মন্দিরের পাথরে চাঁদের চিহ্ন হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পরিচয়, অন্যদিকে চত্বরের আলী ও বজরং বালির আখড়ায় হিন্দু-মুসলিম মিলে ঐক্যের সূচনা করে। এমনই এক অনন্য শিব মন্দির রয়েছে যেখানে ভগবান শিবের নামের সঙ্গে ঝগড়া ছাড়া কোনো শুভ কাজ করা যায় না। কিছু মুহুর্তের জন্য, সঠিক মন্দিরে ঘটনা নিয়ে মারামারি হয়। এখানে একমাত্র ভগবান শিবের আরাধনা করলে সকল দুঃখ দূর হয়। ভক্তরা রুদ্রাভিষেক করে তাদের মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য প্রার্থনা করেন। মহিলারা সোমবার উপোস রাখে এবং তারা এখানে আসে মন ইচ্ছা পূরণের জন্য।
শতাব্দী প্রাচীন মন্দির
রাজাবাজারের দাগ ওয়ালি গলিতে কবে তফতেশ্বর মহাদেব স্থাপিত হয়েছিল তা কারোরই অজানা নয়, তবে কথিত আছে এই মন্দিরটি শতাব্দী প্রাচীন। এখানে কাছাকাছি একটি দুর্গ ছিল, যেখানে শিবলিঙ্গ পাওয়া যায় এবং প্রতিষ্ঠিত হয়। মন্দিরটি ১৯৩৮ সালে সংস্কার করা হয়। তফতেশ্বর মহাদেবের দর্শনে ঝগড়া প্রশমিত হয় বলে মনে করা হয়।
প্রতি সোমবার রুদ্রাভিষেকের পাশাপাশি শিবকে সকালে ফুল এবং সন্ধ্যায় ফুল দিয়ে শোভিত করা হয়। দর্শনার্থীদের যাতে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা লাইন বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মন্দিরের পুরোহিত অম্বিকেশ্বর তিওয়ারি জানান, মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ঝগড়া ছাড়া মন্দিরে কোনো আয়োজন করা হয়নি, কিন্তু কিছুক্ষণ পর বাবা সব ঠিক করে দেন। ঝগড়া নিরসনের জন্য মানুষ দর্শনে আসে। মন্দিরে দর্শন করলেই সব মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়।
শ্রাবণের সব সোমবারে দর্শনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। রাজধানীসহ রাজ্যের বহু জেলা থেকেও ভক্তরা আসেন বাবাকে দেখতে। মন্দিরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই শান্তির অনুভূতি হয়। মন্দির নির্মাণ নিয়ে যে লড়াই শুরু হয়েছিল তা এখনও চলছে। মন্দিরের দেয়ালে এবং গম্বুজে ঈশ্বরের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। হনুমান জির দরবারের পাশাপাশি মন্দির চত্বরে শনিদেবও প্রতিষ্ঠিত ।
No comments:
Post a Comment