পঁচেটগড় রাজবাড়ির দুর্গা পূজা, ৪৫০ বছর পরেও একটুও কম হয়নি এই পুজোর মাহাত্ম্য - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday, 8 October 2021

পঁচেটগড় রাজবাড়ির দুর্গা পূজা, ৪৫০ বছর পরেও একটুও কম হয়নি এই পুজোর মাহাত্ম্য


 নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব মেদিনীপুর : পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পঁচেটগড় রাজবাড়ির দুর্গা দালানে এখন তমুল ব্যস্ততা। ইতিহাস বলছে প্রায় ৪৫০ বছর আগে ঐ রাজবাড়ির দুর্গা পূজোর সূচনা হয়। বহু বিগ বাজেটের পূজার মধ্য ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মানুষের মধ্যে ঐ রাজবাড়ির পূজোর বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। 


ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায় ওড়িষ্যার আটঘর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাড়ির আদি পুরুষ কালামুরারি দাস মহাপাত্র। জগন্নাথ দেবের সামনে নিত্যদিন সঙ্গীত পরিবেশন করতেন তিনি। সেই সঙ্গীতেই মুগ্ধ হয়ে রাজা তাকে মন্দির পরিচালনা র দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মন্দিরের পাশে পেয়েছিলেন জমি। পরবর্তী সময় জাহাঙ্গীর এর নজরে পড়ে যান। তাকে বাংলা, বিহার ও তাম্রলিপ্ত বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেন মোঘল সম্রাট। কাজটি তিনি সূচারুভাবে করেন ও পটাশপুর এলাকার খাঁড়ে বিশাল গড় নির্মাণ করেন তিনি। পরবর্তীত সময়ে উদ্ধার হয় শিবলিঙ্গ। শিবলিঙ্গের চারপাশে বেনারস থেকে আনা আরও চারটি শিবলিঙ্গ বসানো হয়। ঐ শিবলিঙ্গ দিয়েই কালামুরারি দাস মহাপাত্র তৈরি করেন পঞ্চেশ্বর মন্দির। ধীরে ধীরে পঞ্চেশ্বর নামটি প্রচার হতে থাকে। এখানেই তিনি তৈরি করেন পঁচেটগড় রাজবাড়ি। রাজবাড়িতে সেকেলে শক্তি সাধনা হতো। সেই শক্তি সাধনা হিসেবেই শুরু হয় দুর্গা পুজো।


রাজাদের সেকেলে রাজত্ব আজ আর না থাকলেও রাজবাড়ির দুর্গা পুজোয় আজও রয়ে গেছে সেকালের পুজোর প্রাচীন নিয়ম কানুন সমূহ। প্রতিবছর ষষ্ঠি থেকে রাজবাড়ির পুজো ঢাক, ঢোল, কাঁসর-ঘন্টা ধ্বনি সহযোগে পঁচেটগড় রাজবাড়ির প্রাচীন পুকুর থেকে দুর্গাপুজোর ঘট স্থাপন করা হয়। মূলত ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত চলে রাজবাড়ির পুজো।  


তবে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে এ বাড়ির পূজোয়। কয়েক বছর পর রাজপরিবার শৈব থেকে বৈষ্ণব হয়ে যান। ফলে বন্ধ হয়ে যায় মুর্তি পূজো। ঘট পূজোর প্রচলন হয়। তবে থাকে চাল চিত্র। এখানে পটে আঁকা প্রতিমায় পূজিত হয়ে আসছেন দেবি দশভূজা। 


প্রতিবছর পূজোর একমাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবছর পরিস্থিতি একেবারেই অন্যরকম। করোনার কারনে প্রশাসনিক নিয়ম মেনে দু একজনকে নেয়েই শুরু হয়েছে দূর্গা পুজোর প্রস্তুতি।


প্রতি বছর আত্মীয় স্বজন , এলাকাবাসীর সমাগমে গম গম করতো রাজ বাড়ি কিন্তু এই বছর কারা আসবেন আর কারা আসবেন না সেই নিয়েই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে পূজার জাঁকজমকও। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই সুষ্ঠভাবে সম্পূর্ণ হবে এবারের পুজো।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad