জয়ের হ্যাট্রিক মমতার

সৌমিতা চক্রবর্তী, প্রেসকার্ড নিউজ:  রেকর্ড ভোটে জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ভবানীপুরে হ্যাট্রিক মমতার, ভাঙলেন নিজেরই পুরনো রেকর্ড। ৫৪,২১৩ ভোটে জিতেছিলেন ২০১১ সালে। আর এইবার ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনে ৫৮,৮৩২ ভোটে জয়ী হলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জয়ের উল্লাসে মেতেছেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। আবির খেলা থেকে শুরু করে বাজি পটকা, শাঁখ, উলুধ্বনি ভাসছে কালীঘাটের আকাশে বাতাসে। সেইসঙ্গে উতসবের জোয়ারে ভেসেছে ভবানীপুর।

একুশের নির্বাচনে বিজেপির শুভেন্দুর কাছ থেকে নন্দীগ্রামে হারের পর থেকেই নানা ভাবে বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল তৃণমূল সুপ্রিমোকে। পাশাপাশি তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারও ছিল হুমকির মুখে। কারণ নিয়মানুযায়ী ছয় মাসের মধ্যেই তাকে যে কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়ে আসতে হবে। তাঁর ওপর করোনা আবহে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছেল। অবশেষে ৩০ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সেই মতোই ভোট সম্পন্ন হয় এবং সুষ্ঠ ভাবে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই। 

নির্বাচন কমিশন যেদিন থেকে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে, সেই থেকেই সকলের নজর আটকে এই ভবানীপুর কেন্দ্রে। ৩ তারিখ ফলাফল ঘোষণার দিন সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনার মধ্যে শুরু হয় ভোট গণনা। প্রথম থেকেই লিড পেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন আমজনতার দাবী ছিল যে মমতা ৫০ থেকে ৭৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতবেন। বেলা যত গড়িয়েছে, ততই সেই দাবী স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়েছে। যদিও বিজেপির দাবী ছিল জয়ের মুখ তারাই দেখবেন। কিন্তু এদিন ফল প্রকাশ্যে আসার শুরু থেকেই বিজেপির হেস্টিংসের কার্যালয় কার্যত ফাঁকা ও স্তব্ধতায় পরিণত হয়। দেখা যায়নি গেরুয়া শিবিরের কোনও নেতা-কর্মীকেও। 

এদিকে জয়ের খবর আসতেই কালীঘাট থেকে শুরু করে গোটা ভবানীপুর ও রাজ্যের অন্যান্য জেলাতে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়তে দেখা যায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। আবির খেলা, মিষ্টি মুখ করানো, নাচ-গান সবই চলে, যদিও বিজয় মিছিলে ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কমিশন।

এরপর মমতার জয়ের খবর মিলতেই সেই খুশি বেড়ে হয় দ্বিগুণ। তৃণমূল নেতা মদন মিত্রকে দেখা যায় এই আনন্দ উদযাপন করতে, অবশ্যই তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিমায়। পাশাপাশি অন্যান্য নেতা কর্মী সমর্থকেরাও খুশির জোয়ারে গা ভাসান। 

ভবানীপুরে নিজের রেকর্ড এবার নিজেই ভেঙ্গেছেন মমতা। তিনি জয়ী হয়েছেন ৫৮,৮৩২ ভোটে। সেইসঙ্গেই ভবানীপুরে সম্পন্ন করলেন হ্যাট্রিক। জয়লাভের পর কালীঘাটে নিজের বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। ভবানীপুরে সব ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছেন, এইজন্য সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ দেন তিনি।