কুমিল্লার ঘটনায় নিন্দা দেশের মুসলিম সংগঠনগুলির, কলকাতায় মোমবাতি মিছিল - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, 16 October 2021

কুমিল্লার ঘটনায় নিন্দা দেশের মুসলিম সংগঠনগুলির, কলকাতায় মোমবাতি মিছিল


কলকাতা: বাংলাদেশের কুমিল্লায় দুর্গা পুজোর প্যান্ডেলে হওয়া হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এ দেশের মুসলিম নেতা ও সংগঠনগুলিও। ওই ঘটনায় সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।


ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ‘জামাত-ই-ইসলামি হিন্দ’-এর মিডিয়া সেক্রেটারি সৈয়দ তানভীর আহমেদ জানান, ‘অনাচার গণতন্ত্রকে দুর্বল করে। গণতন্ত্রে এবং ইসলামি আইনে কোন ধর্মীয় স্থান ভাঙচুরের অনুমতি নেই।’ তার বিশ্বাস বাংলাদেশ সরকার শিগগির সংবেদনশীল এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে এই সমস্যার সমাধান করবে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ও তাদের ধর্মীয় স্থানগুলিকে রক্ষা করবে।


দিল্লীর সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ড. জাফারুল ইসলাম খান জানান বাংলাদেশে মন্দিরের ওপর হামলা কোনভাবেই কাম্য নয়, এমনকি কোন একটি কঠোর অনুশাসিত ইসলামিক রাষ্ট্রেও এই জিনিস আশা করা যায় না। ইসলামিক স্কলার জাফারুল খান আরও জানান, ‘শরিয়া আইন শাসিত মুসলিম রাষ্ট্রেও অ-মুসলিম নাগরিকদের পুজো-আর্চা করার স্বাধীনতা আছে, তাদের রাষ্ট্র তাদের জীবন ও সম্পদ রক্ষার অধিকারী।’ 


তার দাবী, যারা মন্দির ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিৎ। বাংলাদেশের মাটিতে সংখ্যালঘুরা যাতে স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মের রীতি-নীতি পালন করতে পারে তা সুনিশ্চিত করতে হাসিনার সরকারের কাছে আর্জিও জানান খান।


‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিস মুসাবরাত’ (এআইএমএমএম) সভাপতি নাভেড হামিদ বলেন ‘সীমান্তের দুই পারেই কিছু মানুষ সম্প্রীতির পরিবেশকে দূষিত করতে চায়। তার অভিমত বাংলাদেশ বা অন্য যে কোন দেশে অ-মুসলিম নাগরিকদের ভয়হীন ভাবে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পালনের অধিকার আছে। যদিও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং মন্দিরগুলিকে নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার ঘোষিত অবস্থানের প্রশংসাও করেছেন তিনি।


গুজরাট ভিত্তিক এক প্রতিষ্ঠিত মুসলিম ব্যবসায়ী জাফর সারশেওয়ালা জানান, ‘বাংলাদেশ সরকারের কর্তব্য সেদেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা এবং পুজো মন্ডপ ও মন্দিরে হামলাকারীদের চিহ্নিতকরণ করে তাদের আইনের আওতায় আনা।' তার অভিমত অন্যদের মতো বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুরাও সেদেশের নাগরিক।


আমেদাবাদ ভিত্তিক মানবাধিকার কর্মী মুক্তার মহম্মদ জানান, 'বাংলাদেশের মন্দিরে হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। সেদেশের সরকারের উচিৎ দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।’


এদিকে কুমিল্লার ওই ঘটনায় এক প্রতিবাদে অংশ নেয় কলকাতার অন্যতম বড় পুজো সংগঠক ‘সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার দুর্গোৎসব কমিটি’। মোমবাতি জ্বালিয়ে মুখে কালো কাপড়ে ঢেকে প্রতিবাদ জানায় তারা। আর তাদের সামনের সারিতে থাকা শিশুদের হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে কেন্দ্র ও রাজ্য এক হও,’ ‘নিজ ধর্ম রক্ষা করা সাম্প্রদায়িক কি?’ এমনকি প্রতিমা দর্শন করতে আসা দর্শকরদেও সমবেত হয়ে ওই ঘটনায় প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে।


কুমিল্লার ঘটনায় ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদী ঝড় আছড়ে পড়েছে। ‘কুমিল্লায় আক্রান্ত মা দুর্গা’ হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গিয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম। কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও।


No comments:

Post a Comment

Post Top Ad