প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক :" কি আশায় বাঁধি খেলা ঘর"। এই বিখ্যাত গানটি, অসাধারণ ব্যক্তিত্ব কিশোর কুমারের। উনি অনেক গান আমাদের উপহার দিয়েছেন।কাল ১৩ই অক্টোবর ছিল উঁনার মৃত্যুবার্ষিকী। যদিও উঁনার তুলনা উনি নিজেই। কিশোর কুমার, যিনি অভিনয় এবং গানে সমানভাবে জড়িত ছিলেন। তাঁর দুষ্টুমির জন্য এখনও চলচ্চিত্র শিল্পে স্মরণ করা হয়।
তাঁকে "বাংড়ু "বলে ডাকা হতো। কিশোর কুমার, যিনি এখনও তাঁর কণ্ঠ দিয়ে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে রাজত্ব করেন। একবার তিনি অর্ধেক মাথা কামানোর পর ছবির সেটে পৌঁছেছিলেন। আমরা সেই কিশোর দা -র একই আকর্ষণীয় উপাখ্যান এখানে বলছি।
আসলে, ১৯৭১ সালে, পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের প্রেক্ষাগৃহে সুপার হিট হয়েছিল। ছবির নাম ছিল 'আনন্দ'। যেখানে আনন্দ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাজেশ খান্না। কিন্তু আপনি কি জানেন যে পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় কিশোর কুমারকে কাস্ট করতে চেয়েছিলেন, রাজেশ খান্নাকে নয়। এই ছবিতে আনন্দ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। হ্যাঁ, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের প্রথম পছন্দ কিশোর কুমার ছিলেন রাজেশ খান্না নয়।
কিন্তু কিশোর কুমারের দুষ্টুমির কারণে ছবিটি তার হাত থেকে বেরিয়ে গিয়ে রাজেশ খান্নার ব্যাগে চলে যায়। আসলে কিশোর কুমার সেই সময় একটি স্টেজ শো করেছিলেন, যার আয়োজক তাকে টাকা দিতে অস্বীকার করছিলেন। কিশোর কুমার তখন আয়োজকের সাথে অনেক ঝগড়া করে এবং রাগে বাড়ি ফিরে গেলেন। বাড়ি ফেরার সময়, তিনি দারোয়ানকে বলেছিলেন যে যদি কেউ তাঁর সাথে দেখা করতে আসে তবে তাকে অবিলম্বে তাড়িয়ে দিতে হবে। দারোয়ানও কিশোর কুমারের ভক্ত ছিলেন, সাহেব যা বলেছিলেন তা ছিল তার কাছে পাথরের রেখার মতন।
সেই সময়ে, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় কিশোর কুমারের কাছে 'আনন্দ' ছবির কাহিনী শোনার জন্য তাঁর বাংলোতে পৌঁছান। কিন্তু হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় কিশোর কুমারকে আগে থেকেই বলেননি যে তিনি তাঁর বাড়িতে আসছেন। দারোয়ান তখন উনাকে ফিরে যেতে বলল।
হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন যে কিশোরকে একটি ছবির গল্প বর্ণনা করতে হবে কিন্তু দারোয়ান তাঁকে র ঢুকতে না দেওয়ায়, ক্ষুব্ধ হয়ে ঋষিদা নীরবে ফিরে যান।
কিছুক্ষণ পর কিশোর কুমার এই ঘটনা জানতে পেরে হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং দারোয়ানকে অনেক তিরস্কার করেন। তাই সিনেমা জগৎ এর অনেকেই কিশোর কুমারকে 'বাংড়ু' বলে ডাকে। কারণ হল এটাই যে, বিষয়টি এসেছিল এবং চলে গিয়েছিল।
কিশোর কুমারের 'আনন্দ' ছবিতে মৃত্যুর ক্লাইম্যাক্স পছন্দ হয়নি। তিনি চেয়েছিলেন 'আনন্দ' বেঁচে থাকুক। কিন্তু হৃষিকেশদা অবশেষে 'আনন্দ' -এর মৃত্যুতে ছবির সাফল্য দেখছিলেন।
বেশ কিছুক্ষণ পর ছবির শুটিং শুরু হল। এদিকে, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় কিশোর কুমারকে ছবির জন্য দুই কিস্তিতে নির্ধারিত বেতন দিবে বলেছিলেন, কিন্তু কিশোরদা একক অঙ্কে সব টাকা চেয়েছিলেন। যার জন্য ছবির শুটিং মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর এই বিষয় টি আদালতে পৌঁছোয়। আদালতের সিদ্ধান্ত হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের পক্ষে আসে এবং আদালত কিশোর কুমারকে ছবিটি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়।
টাকা অর্ধেক পাওয়ায় কিশোরকুমার অর্ধেক চুল কামিয়ে সেটে পৌঁছান। কিশোর কুমারকে এই অবস্থায় দেখে হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় বিরক্ত হন।
কিশোর কুমারকে চুল কাটার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে, কিশোর কুমার খুব নিরীহ ভাবে বললেন, 'আধা পয়সা মে তো হাফ হি কিশোর মিলগা না ঋষি দা।' শেষ পর্যন্ত, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় রাজেশ খান্নাকে 'আনন্দ' চরিত্রে দিলেন। এবং এই 'আনন্দ' ছবি করে রাজেশ খান্না ক্যারিয়ারের শিখরে পৌঁছে যান।
No comments:
Post a Comment