প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক: আমাদের দেশের ঘটে যাওয়া কিছু ভয়ঙ্কর স্মৃতি, যা ভুল করেও হোক, তা আর কেউই চাইবে না। এগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে খ্যাত। দেখা যাক কি সেগুলি :
১. কাশ্মীর বন্যার দুর্যোগ (২০১৪): ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই বন্যার কারণে কাশ্মীর অঞ্চলের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অবিরাম মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ঝিলম নদীর জল ফুলে ওঠে। এর ফলে কাশ্মীর অঞ্চলের আবাসিক এলাকায় জল প্রবেশ করতে থাকে। তখন আমাদের দেশের সেনাবাহিনী এই অঞ্চলের আটকে পড়া বাসিন্দাদের অনেক সাহায্য করে। প্রায় ৫৫০ জন মানুষ প্রাণ হারায় এবং সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি অনুমান করা হয় ১ কোটি থেকে ৫০০০-৬০০০ কোটি।
২. উত্তরাখণ্ড ফ্ল্যাশ ফ্লাড (২০১৩) : উত্তরাখণ্ডের ফ্ল্যাশ বন্যা আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। এর কারণে সেই রাজ্যের ১৩টির মধ্যে ১২টি জেলা ক্ষতিগ্ৰস্থ হয়েছিল। ২০১৩ সালের জুন মাসে উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টিপাত, ব্যাপক ভূমিধস হয়েছিল। ১৪ থেকে ১৭ জুন বন্যা এবং ভূমিধস অব্যাহত ছিল। প্রায় ১ লক্ষ তীর্থযাত্রী কেদারনাথ মন্দিরে আটকা পড়েছিলেন।
৩. বিহার বন্যা দুর্যোগ (২০০৭): ২০০৭ সালে ঘটে যাওয়া বিহারের বন্যা দুর্যোগ কে জাতিসংঘ কর্তৃক বিহারের 'জীবন্ত স্মৃতির' মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হিসেবে বর্ণনা করেছে। এই বন্যার ফলস্বরূপ বিহারের ১৯ টি জেলা ক্ষতিগ্ৰস্থ হয়েছিল. বিহারের বন্যা সমগ্র রাজ্যে আনুমানিক ১০ মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত হয়েছিল। এই বন্যায় প্রায় ২৯,০০০ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয় এবং ৪৪,০০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং প্রায় ৪৮২২ টি গ্রাম এবং ১ কোটি হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
৪. ভারত মহাসাগর সুনামি (২০০৪): এই মারাত্মক সুনামি শুরু হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রার পশ্চিম উপকূলের কাছাকাছি। সামগ্রিকভাবে এটি প্রায় ১২টি দেশকে এমন ভাবে প্রভাবিত করে যে ২.৩ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়। এই সুনামির মাত্রা ছিল ৯.১ থেকে ৯.৩। এই ভূমিকম্প প্রায় ১০ মিনিট ধরে চলেছিল। গবেষণা অনুসারে এটি ছিল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভূমিকম্প।
৫. গুজরাট ভূমিকম্প, (২০০১): ২৬ ই জানুয়ারী, ২০০১ এ আমাদের দেশের ৫১তম প্রজাতন্ত্র দিবস ছিল। হঠাৎ, কচ্ছ (গুজরাট) এর ভাচাউ তালুকু রিখটার স্কেল ৭.৬ থেকে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভব করে এবং এটি ১২০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। এই দুর্যোগে প্রায় ২০,০০০ মানুষ নিহত, ১৬৭,০০০ আহত এবং প্রায়, ৪০০,০০০ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
৬. সুপার সাইক্লোন, ১৯৯৯: ১৯৯৯ সালের সুপার সাইক্লোন ছিল উত্তর ভারত মহাসাগরের সবচেয়ে বিপজ্জনক গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়। এর গতি ছিল ২৬০ কিমি/ঘন্টা। এটি শুধু আমাদের দেশ নয়, বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং থাইল্যান্ডকেও প্রভাবিত করেছিল। অনুমান করা হয় যে এই দূর্যোগের কারণে প্রায় ১৫০০০ মানুষ মারা গিয়েছিল, প্রায় ১.৬৭ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়েছিল এবং ২.৭৫ লাখেরও বেশি ঘর ধ্বংস হয়েছিল।
৭. বাংলার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ (১৭৭০): নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এই দুর্ভিক্ষকে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এটি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শোষণমূলক নীতির সমন্বয়ে এবং আবহাওয়ার কারণে ঘটেছিল। এই দুর্ভিক্ষ ১৭৬৯ সালে একটি ব্যর্থ বর্ষাকাল থেকে শুরু হয়। যা পরপর দুই মৌসুম থেকে ১৭৭৩ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
No comments:
Post a Comment