রাজগঞ্জে পাল বাড়ির ১৯০ বছরের পুরনো পুজোর ইতিকথা - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, 27 September 2021

রাজগঞ্জে পাল বাড়ির ১৯০ বছরের পুরনো পুজোর ইতিকথা



নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: হাওড়ার সাঁকরাইলের রাজগঞ্জে পাল বাড়ির পুজো। প্রায় ১৯০ বছরের বেশি সময় ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। এই বাড়ির প্রাণ পুরুষ রাজারাম পাল। তিনি হাওড়ার আন্দুলের রাজবাড়ীর দেওয়ান ছিলেন। ভালো কাজের জন্য রাজার থেকে ওই এলাকায় জমিদারী পান। 


সেই সময় তিনি রাজগঞ্জে গঙ্গার পাড়ে বাড়ি করেন। কিন্তু হঠাৎ আসা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে গঙ্গার গ্রাসে তলিয়ে যায় সেই বাড়ি। এরপর প্রায় ১৯০ বছর আগে রাজারাম পালের নাতি চুরামনি পাল সেই বাড়ির অনতিদূরে তৈরি করেন নতুন জমিদার বাড়ি, সঙ্গে ঠাকুর দালান। নিজের ছেলে ললিত নারায়ণ পালের নামে তৈরি হওয়া বাড়ির নাম দেন ললিত লজ। সেই সময় থেকেই পাল বাড়িতে প্রতিমা পুজো শুরু হয় দুর্গা পুজোতে, যা আজও সমান ঐতিহ্য বহন করে আসছে। 


চুরামনি পালের দুই ছেলে নফর চন্দ্র পাল ও সারদা প্রসাদ পাল আর দেওয়ানি করেননি। নফর চন্দ্র পাল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে প্রথমে চাকরি ও পরে ব্যবসা শুরু করেন। এলাকার প্রচুর ইটভাটা তৈরি করে, রেলের বিভিন্ন ডিভিশনে ইট সরবরাহ করতে শুরু করেন। এছাড়াও বহু ব্যবসা করতে থাকেন। সেই সময় থেকেই পালেদের আর্থিক প্রতিপত্তি শুরু হয়। দুর্গা পুজো জমজমাট হতে থাকে। 


পাল বাড়িতে দুর্গা পুজো হয় সম্পূর্ন বৈষ্ণব মতে। জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজো হয়। মহালয়া থেকে শুরু হয় চন্ডীপাঠ। বাড়ির মহিলারা পুজোর সমস্ত কাজে হাত লাগান। অষ্টমীতে তৈরি হয় বিশেষ ভোগ। এই বাড়ির একচালার দুর্গা প্রতিমা ঠাকুর দালানে তৈরি হয়। কোনও বলি প্রথা এখানে নেই। দশমীতে নয়, এখানে অষ্টমীর দিন হয় সিঁদুর খেলা। দশমীর দিন দেবী দুর্গাকে কাঁধে করে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয় গঙ্গায়। 


পুজোর সময় দেশবিদেশে থাকা আত্মীয় স্বজনরা আসেন এই বাড়িতে। নিজেরা আনন্দ করার পাশাপাশি সামিল করে নেন এলাকার দুঃস্থ পরিবারগুলোকে। একসাথে চলে খাওয়া-দাওয়া। দেওয়া হয় জামাকাপড়। আগামী দিনেও এভাবেই সবাইকে নিয়ে আনন্দে সামিল হতে চান পাল পরিবারের সদস্যরা।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad