প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক : শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাবের জন্য হতে পারে এসব রোগ, জেনে নিন ভিটামিন ডি এর কমতি দূর করার ঘরোয়া উপায়।
প্রায় প্রতিটি শিশুর মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয়। এজন্য চিকিৎসকরা জন্মের পর প্রতিদিন ১৫ মিনিটের জন্য শিশুকে সূর্যের আলো দেখানোর পরামর্শ দেন। ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের নানা রোগ হতে পারে।
বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন ডি:
আমাদের জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব আমাদের শিশুদের স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক সময় শিশুদের মধ্যে ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন ডি শিশুদের শরীরকে সুস্থ ও সবল করার জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের জন্মের পর থেকেই নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি প্রয়োজন।
এই কারণেই ডাক্তাররা বাচ্চাদের ১৫ মিনিটের জন্য হালকা সূর্যের আলো দেখাতে বলে। আগেকার দিনে, শিশুদের ম্যাসাজ করার পরে, তাদের দীর্ঘ সময় রোদে রাখা হয়েছিল। ভিটামিন ডি শরীরের অন্যান্য ভিটামিন শোষণের জন্যও প্রয়োজনীয়।
ভিটামিন ডি -এর অভাবে ক্যালসিয়াম শরীরে সঠিকভাবে শোষিত হয় না। যার কারণে শিশুদের হাড়ের বিকাশও বন্ধ হয়ে যায়। যদি আপনার সন্তানের ভিটামিন ডি এর অভাব হয় তবে এই লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে। শরীরে ভিটামিন ডি -এর অভাবে শিশুদের রক্তস্বল্পতার মতো মারাত্মক সমস্যাও হতে পারে।
ভিটামিন ডি এর অভাবের লক্ষণ (বাচ্চাদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাব) :
১- শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি সামান্য ঝোঁক সৃষ্টি করে। এর প্রভাব শিশুদের মেরুদণ্ডে দেখা যায়।
২- ভিটামিন ডি -এর অভাবে শিশুদের হাড়ের বিকাশও বন্ধ হয়ে যায়।
৩- যদি শিশুর মাথা খুব নরম হয় তাহলে আপনার সন্তানের ভিটামিন ডি এর অভাব হয়।
৪- যদি শিশুর হাঁটতে অসুবিধা হয়, তাহলে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হতে পারে।
৫- শরীরে ভিটামিন ডি -এর অভাবে শিশুর ওজন বাড়ে না এবং শিশু শীর্ণ হয়ে যায়।
৬- ভিটামিন ডি -এর অভাবের কারণে, শিশুর আঙ্গুলগুলি বাঁকা হতে শুরু করে এবং পায়ের হাড়গুলিও সোজা হয় না।
৭- যদি শিশুর মধ্যে এই লক্ষণগুলি দেখা যায় তবে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ (স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন ডি)
১- মস্তিষ্কে প্রভাব- যদি শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকে, আপনার হাড় ছাড়াও, এটি মস্তিষ্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। ভিটামিন ডি মস্তিষ্কে রাসায়নিক সেরোটোনিন এবং ডোপামিন তৈরি করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে, শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকা উচিত নয়।
২- রক্তাল্পতার ঝুঁকি- ভিটামিন ডি-এর অভাব শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যদি শিশুর মধ্যে দীর্ঘদিন ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকে, তাহলে এটি রক্তাল্পতা রোগের ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদি শরীরে ভিটামিন ডি এর প্রতি মিলিলিটারে ৩০ ন্যানো গ্রামের কম থাকে, তাহলে অনেক রোগ হতে পারে।
৩- অনাক্রম্যতা দুর্বল- শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাবে শিশুদের মধ্যে বিরক্তি, প্রাথমিক অসুস্থতা এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভিটামিন ডি -এর অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যার কারণে শিশুরা তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
৪- রিকেটের ঝুঁকি- ভিটামিন ডি-এর অভাবে শিশুদের মধ্যে রিকেট অর্থাৎ রিকেট হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভিটামিন ডি শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। যার কারণে হাড় মজবুত হয়।
৫- হাড় বেঁকে যাওয়া - শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে, হাড় দুর্বল এবং বাঁকা হতে শুরু করে। এই কারণে অনেক সময় শিশুদের পা তির্যক হয়ে যায়। এর বাইরেও হাড় ভাঙা এবং যোগ হওয়ার সমস্যা রয়েছে।
বাচ্চাদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি কীভাবে দূর করা যায় (ভিটামিন ডি প্রাকৃতিক উৎস)
১- নবজাতক শিশুকে প্রতিদিন ১৫ মিনিটের জন্য কাপড় ছাড়া রোদে রাখতে হবে।
২- যদি প্রতিদিন সম্ভব না হয়, তাহলে অবশ্যই সপ্তাহে তিনবার ১৫ মিনিটের জন্য অবশ্যই রোদে বসুন।
৩- শিশুকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক গ্লাস পূর্ণ চর্বিযুক্ত গরুর দুধ দিন। এ ছাড়া ডায়েটে দই অন্তর্ভুক্ত করুন।
৪- বাচ্চাদের রুটি, দুধ, পনির, সয়া দুধ এবং কমলার রস এসব খাবার খাওয়ান।
৫- শিশুর খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ ডিম, মাশরুম এবং মাছ অন্তর্ভুক্ত করুন।
No comments:
Post a Comment