সৌমিতা চক্রবর্তী, প্রেসকার্ড নিউজ: 'আজ বাবুল খারাপ হয়ে গিয়েছে', কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়ার পর বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে আক্ষেপের সুরে শোনা গিয়েছিল খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। গুঞ্জনটা তো সেদিনিই উঠেছিল, তবে কী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও শাসক শিবিরেই ভিড়তে চলেছেন! আর সেই গুঞ্জণেই সিলমোহর পড়ল প্রায় তিন মাস পর। পদ্ম শিবির ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর তালিকায় বাংলার ৪ জন মন্ত্রী স্থান পেলেও বাদ পড়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়।এরপরই রাজনীতিকে আলবিদা জানিয়ে ফেসবুকে লম্বা চওড়া লেখা পোস্ট করেছিলেন। সঙ্গে এও লিখেছিলেন, অনেক কিছু বলা বাকি রয়ে গেল। সেই পোস্ট ঘিরে শুরু হয় একের পর এক বিতর্ক। আর মমতার গলায় বাবুলের জন্য আক্ষেপের সুর, সেই বিতর্কে যে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল, চা বলার অপেক্ষা রাখে না আলাদা করে।
যদিও বাবুল জানিয়ে দিয়েছিলেন, সামাজিক কাজ করতে হলে রাজনীতিতে থাকতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কিন্তু তা বলে গুঞ্জন থেমে থাকেনি। আর সেই গুঞ্জন ও জল্পনা সত্যি করেই শনিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের শীর্ষ নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েনের উপস্থিতিতে শাসক শিবিরে যোগ দেন বাবুল সুপ্রিয়। তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দলে স্বাগত জানান অভিষেক।
আর বাবুলের এই ভাবে শাসক শিবিরে যোগ দেওয়ার পরেই তাকে নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ওয়ালে তিনি নাম না নিয়েই বাবুল সুপ্রিয়কে নিশানা করেন। সেই পোস্টে লেখা রয়েছে- "তার মানে "ঝাল-মুড়ি"র রফা আগেই হয়ে গেছিল, just অপেক্ষা করা হচ্ছিল রাজ্যসভাতে কিভাবে পাঠানো যায় !!! তাই হয়তো বেচারী অর্পিতা দেবীকে এত তড়িঘড়ি করে রাজ্যসভা ছেড়ে থিয়েটারে মন দিতে বলা..।"
বিজেপির সঙ্গে বাবুলের সম্পর্কে যে অনেকদিন আগেই চিড় ধরেছে, বিশেষ করে দলের শীর্ষ রাজ্য নেতৃত্ব দিলীপ ঘোষের সঙ্গেও যে তাঁর মন কষাকষি চলছিল, সেটা সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে নানান সময়। এমনকি সম্প্রতি রাজ্যে উপনির্বাচনে ভবানীপুর আসনে বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে প্রিয়াঙ্কা তিব্রেওয়ালকে। এই প্রিয়াঙ্কা একসময় বাবুলের আইনী উপদেষ্টা ছিলেন। প্রিয়াঙ্কা প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় বাবুল খুশি হলেও এবং প্রিয়াঙ্কার হয়ে তারকা প্রচারের তালিকায় তার নাম থাকলেও তিনি যে প্রচারে অংশ নেবেন না, সেটা স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছিলেন বাবুল।
'সক্রিয় রাজনীতিতে থাকতে চান না এবং রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে তিনি সরে আসেননি,' দিন কয়েক আগেই সংবাদমাধ্যমের সামনে একথা জানিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু হঠাৎই ফুল বদল। পদ্ম ছেড়ে অবশেষে ঘাসফুলই বেছে নিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। 'সামাজিক কাজ বা সমাজের হয়ে কাজ করতে গেলে রাজনীতির ছত্রছায়ায় থেকেই করতে হবে', একথাই কি তাহলে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন বাবুল! আলোচনা বিভিন্ন মহলে।
No comments:
Post a Comment