প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক : কাঁটাতার পার করে ভারতীয় কৃষিজমি। দেশের চাষীরা বাংলাদেশের কাছাকাছি এই জমিগুলো চাষ করলেও বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে ফসল লুট করছে এবং দেশের কৃষকরা কাঁটাতারের অপর প্রান্ত থেকে অসহায়ভাবে এটি দেখছে। কিন্তু এতে তাদের কিছুই করার নেই। কারণ দেশের কৃষিজমি এখন বাংলাদেশীদের হাতের নাগালে।
উত্তর দিনাজপুর জেলার দেশ ও বাংলাদেশের মধ্যে ২২৭ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। সীমান্তে টহল দেওয়ার দায়িত্ব বিএসএফের। অনেক সাধারণ মানুষের বাড়িঘর ও মাঠ কাঁটাতারের বেড়াজাল ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণে কৃষকদের জীবিকা সংকটে পরিণত হয়েছে। কৃষিকাজ করতে হলে একজনকে বিভিন্ন নিয়ম -কানুন মেনে চলতে হয়। যদি বিএসএফ নির্ধারিত সময়ে কাঁটাতারের গেট খুলে দেয় তাহলে তারা সেই জমিতে চাষের জন্য যেতে পারে। সেই সময় তাদের ঝড়, বৃষ্টি বা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফিরে আসতে পারে না। ফসল রক্ষার প্রচেষ্টায় তারা প্রায়ই কাঁটাতারের অপর পাশে বজ্রপাতে মারা যায়। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন কৃষকরা।
হেমতাবাদ ব্লকের মকারহাট, কেশবপুর, সান্টোরা, মাটিয়াডাপে, ছাইঙ্গার, মালান, ভামাইর, ভানিল সহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা জানিয়েছেন, এগুলো আমাদের কৃষি জমির নাম। বিএসএফের কঠোর নজরদারি এবং বাংলাদেশে দুর্বৃত্তদের পরিচালিত নৃশংসতায় আমরা অস্বস্তিতে আছি। আমরা অনেক কষ্টে ফসল বপন করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের দুর্বৃত্তরা সেই ফসল কেড়ে নিয়েছে। এছাড়াও, বিএসএফ নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা ভুট্টা এবং পাটের মতো লাভজনক ফসল চাষ করতে পারি না। পাট, ভুট্টা গাছ লম্বায় বেশ বড়। গাছগুলো বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সৈন্যদের সেসব এলাকায় নজর রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। স্থানীয় নেতাদের অবহিত করার পরও আজ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয়নি।
এলাকার ক্ষুব্ধ কৃষকরা জানিয়েছেন, সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে ব্লক প্রশাসনের সংলাপের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। হেমতাবাদ ব্লকের সীমান্ত এলাকার কৃষকরা জানান, ২০-২৫ বছর আগে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ছিল না। আমরা এই জমিতে উত্তরাধিকার চাষ করি। এই সময়ে বিস্তীর্ণ জমি কাঁটা দিয়ে কাটা হয়েছে। নো ম্যানস ল্যান্ডের ১৫০ মিটারের মধ্যে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কাঁটাতারের বেড়া তৈরি করা হয়েছে। বেড়ার ওপারে ভারতীয়দের প্রচুর জমি এবং বাড়ি আছে। তারপর থেকে এই সমস্যা শুরু হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তের ওপারে জমির সমস্যা অনেক দিন ধরেই রয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
No comments:
Post a Comment