জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি ‘বেআইনি’। তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্মঘট তুলে কাজে যোগ দিতে হবে, অন্যথায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মধ্যপ্রদেশের জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি এমনই ছিল আদালতের নির্দেশনামা। আর তারপরই একে একে পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন ডাক্তাররা। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ডাক্তার পদত্যাগ করেছেন। সরকার তাঁদের দাবি দাওয়া মেনে নিলেও পরে তা বাস্তবায়িত হয়নি, তাই তাঁদের এই পদক্ষেপ গ্রহণ।
শুধু পদত্যাগই নয়, সেই সঙ্গে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এই অতিমারী আবহে রাজ্যের ডাক্তারদের এই পদত্যাগের ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বেগে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ প্রশাসন তথা স্বাস্থ্য দপ্তর।
উল্লেখ্য, গত সোমবার থেকে ধর্মঘট শুরু করেছিলেন ডাক্তাররা। তাঁদের মূল দাবি ছিল, যেহেতু তাঁরা করোনা রোগীদের চিকিৎসা করছেন তাই তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। সেইজন্য তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বিনামূল্যে করোনা চিকিৎসা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। এরই পাশাপাশি তাঁদের স্টাইপেন্ড ২৪ শতাংশ বাড়াতে হবে বলেও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবিগুলি না মানা পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তাররা এই ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছে ডাক্তারদের সংগঠন ‘মধ্যপ্রদেশ জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন’। তাতে আদালত যায় বলুক না কেন।
সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কিতা ত্রিপাঠীর কথায়, ‘‘সরকার এখনও আমাদের দাবি মেনে নেয়নি। কেবল আশ্বাস দিয়েছে মাত্র। তাই এখনই আমরা ধর্মঘট তুলছি না।’’ তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, পুলিশ নাকি তাঁদের সংগঠনের সদস্যদের বাড়িতে গিয়ে ধর্মঘট তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। এপ্রসঙ্গ তুলে অঙ্কিতা জানিয়েছেন, ‘‘সরকার বলছে জুনিয়র ডাক্তাররা নাকি ব্ল্যাকমেল করছে। এটা ঠিক কথা নয়। আমরা যদি ব্ল্যাকমেলই করতাম, তাহলে রোগীর সংখ্যা কমছে কী করে?’’
সংগঠনের সভাপতি ডা. অরবিন্দ মীনা জানাচ্ছেন, সরকার তাঁদের স্টাইপেন্ড ১৭ শতাংশ বাড়ানোর কথা জানালেও, তাঁদের দাবি ২৪ শতাংশ৷ পাশাপাশি গত ৬ মে মধ্যপ্রদেশ সরকার তাঁদের সব দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই এই কর্মবিরতি চলছে ও চলবে বলেই জানাচ্ছেন তিনি।
তবে জুনিয়র ডাক্তারদের এই ধর্মঘটে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ মধ্যপ্রদেশ সরকার। সেই রাজ্যের মেডিক্যাল শিক্ষামন্ত্রী বিশ্বাস সারং জানিয়েছেন, যেভাবে দলবদ্ধ ভাবে পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন ডাক্তাররা তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এবং এটা ডাক্তারদের একগুঁয়ে মনোভাবেরই পরিচায়ক।
No comments:
Post a Comment