বাংলার অধুনা রাজনৈতিক চানক্য মুকুল রায়কে নিয়ে বিজেপিতে অস্বস্তি তৈরি হলেও স্বস্তিতে নেই তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির কর্মী সংগঠনে যেমন ভাঙনের শঙ্কা তেমনি তৃণমূলের তৃণমূল স্তরে মুকুল পন্থীদের জন্য জমি হারানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে মুকুল রায়কে নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির তৃণমূল স্তরের সংগঠনের ছবিটা এখন এক। এতদিন বিষয়টি ছিল গুঞ্জন স্তরে কিন্তু কৃষ্ণনগর উত্তরে মুকুল রায়ের উপস্থিতি ঘিরে তৃণমূলের আভ্যন্তরীণ কোন্দল যেভাবে হাতাহাতি বচসা প্রকাশ্যে আনল তা শাসক দলে বিড়ম্বনা তৈরি করল।
শিবির পরিবর্তন করার পর এদিন প্রথম কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে যান বিধায়ক মুকুল রায়। সেখানে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তাকে স্বাগত জানানোর সময় রীতিমতো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
মুকুল রায়ের কাছে পৌঁছানোর জন্য তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দুই নেতার মধ্যে বচসা তৈরি হতে দেখা যায়। পরবর্তীতে তা হাতাহাতির রূপ নেয়। যার জেরে পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হতে শুরু করে। তৃণমূলের দীর্ঘদিনের নেতা হিসেবে পরিচিত মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলের বিশৃংখলা প্রকাশ্যে আসার সাথে সাথেই রীতিমতো চাপে পড়ে যায় ঘাসফুল শিবির।
মুকুল রায়ের রাজ্য জুড়ে ঘনিষ্ঠ এবং অনুগামী আগে থেকেই ছিল। মুকুল রায় বিজেপিতে গেলেও বিরাট সংখ্যক নেতা কর্মী ছিল তৃণমূলে। মুকুল রায় লবি বা অনুগামী কিংবা ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতরা মুকুল বিহীন তৃণমূলে এতদিন ছিল কোনঠাসা। জানা যায়, মুকুল রায়ের পরামর্শে তারা এতদিন চুপচাপ সবকিছু মেনে নিয়েছেন। এসময় তৃণমূলে তৈরি হয়েছে নতুন শক্তি। তারা মুকুল রায় ঘনিষ্ঠদের কোনও ভাবেই জমি ছাড়তে চাননা। তৃণমূলে ফিরে মুকুল রায় ফের সংগঠনের দ্বায়িত্ব পাওয়ার পর মুকুল রায় ঘনিষ্ঠরা দাদার কাছে আসতে চাইছে পাশাপাশি সংগঠনের কাজ সামলানোয় সফল নতুন মুখরাও দাদার কাছে আসতে চাইছে। ফলে তৈরি হয়েছে ভীড় । আরই এই ভীড়ে রয়েছে অসন্তোষ।
তৃণমূল শিবিরের একাধিক সুত্রের দাবি, মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরায় দলে নতুন লবি তৈরি হয়েছে। এই ভীড় ও অসন্তোষ আদতে ব্যবসায়ীক ফায়দার কারণে রাজনৈতিক কারণে নয়। তৃতীয়বারের মতন ক্ষমতায় আসার কারণে তৃণমূলে এখন বাণের ভরা কটাল শুরু হয়েছে। হুহু করে লোক ঢুকছে। ফলে সংঘাত হবে। তারওপর মুকুল রায়ের ফেরা। ফলে বানের ভীড় ডবল হয়ে গেছে। কে কাকে সামলাবে সেটাই দেখার। মুকুল রায় জেলা সফর শুরু করলে সংঘাত বাড়ে নাকি কমে সেটা দেখে ভবিষ্যৎ পরিনতি আন্দাজ করা যাবে।
No comments:
Post a Comment