নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রেজ্জাক মোল্লার পর এবার দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লার পুত্র মোস্তাক আহমেদ। তার অভিযোগ, দল সম্মান দেয়নি, মিটিংয়ে ডাকছে না। দল সম্মান না দিলে দলের হয়ে খাটবেন না বলেও জানান তিনি।
সোমবার ভাঙড়ের হাতিশালায় দলীয় কার্যালয়ে বসে অনুগামীদের নিয়ে বৈঠক করেন মোস্তাক আহমেদ। তিনি দলীয় কর্মীদের সামনে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের প্রার্থী করা হয়েছে রেজাউল করিমকে। তিনি পেশায় চিকিৎসক। প্রথমদিকে আরাবুল ইসলাম ও তার অনুগামীরা বহিরাগত প্রার্থীকে কিছুতেই মানা হবে না, এমনকি ভাঙড়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে দাবী তুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। পরে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার পর সুর নরম করেন আরাবুল। ইতিমধ্যে রেজাউল ভাঙড়ে তার নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। প্রার্থীর হয়ে বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে দেখা যাচ্ছে আরাবুল ইসলামকে। এমনিতেই ভাঙড়ের গোষ্ঠী কোন্দল সর্বজনবিদিত। আরাবুল, কাইজার, নান্নু সহ যুযুধান সব পক্ষই দলীয় প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন। কিন্তু প্রথম থেকেই দলীয় প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি রেজ্জাক মোল্লার পুত্র তথা জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাক আহমেদকে।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মোস্তাক বলেন, "রেজাউল করিম আদতে বীরভূমের বাসিন্দা। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার লাউহাটিতে তিনি একটি নার্সিংহোম করেছেন বলে শুনেছি। সেখানে তিনি থাকবেন বলে জেনেছি। ভাঙড়ে তৃণমূলের অনেক লবি রয়েছে। সবাইকে দলবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীর জন্য ঝাঁপাতে হবে। প্রার্থী যদি গোষ্ঠীকোন্দলের শিকার হন তাহলে সমস্যা তৈরি হবে। প্রার্থীর উচিৎ সবার কাছে যাওয়া। তিনি যদি গ্রুপ বাজির শিকার হন তাহলে খারাপ হবে। আমি জেলা পরিষদ সদস্য হওয়া সত্ত্বেও আমাকে ডাকা হয়নি। ভাঙড়ে যে বিধানসভা নির্বাচন কমিটি তৈরি করা হয়েছে সেখানে আমাকে রাখা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমি পিকের টিম সহ উর্দ্ধতন নেতৃত্বকে জানিয়েছি। দল আমাদের কোন সম্মান দিচ্ছে না। দল যদি না ডাকে তাহলে চুপচাপ বসে থাকবো। দল ডাকলে জান-প্রাণ দিয়ে লড়াই করব। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিতে জেলা পরিষদ সদস্য হয়েছি। একমাত্র আমার আসনে নির্বাচন হয়েছে। আমার চারটি অঞ্চলে প্রায় ৭০ হাজার ভোটার রয়েছে। আমাকে যদি দল কাজে না লাগায় তাহলে আমার অনুগামীরা চুপচাপ হয়ে যাবে। আমি জেলা পরিষদ সদস্য অথচ পার্টির কোন জনসভায় আমাকে ডাকা হচ্ছে না। আমার বাবা রেজ্জাক মোল্লার একটা সম্মান রয়েছে। তার অনেক অনুগামী রয়েছেন। শওকত মোল্লা তার কাছে আশীর্বাদ চাইতে গিয়েছিলেন। তিনি তাকে আশীর্বাদ করেছেন। বাবার অনুগামীরা যাতে শওকতকে ভোট দেন তার জন্য তিনি চেষ্টা করবেন। বাবা শারীরিক অসুস্থতার কারণে দলকে চিঠি দিয়ে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে গিয়েছেন। ভাঙড়ের সমস্ত নেতৃত্বকে ডাকা হচ্ছে না। যে কারণে ভাঙড়ের মানুষ দিশেহারা।"
এ বিষয়ে ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল আইএনটিটিইউসির সভাপতি জুলফিকার মোল্লা বলেন, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে মোস্তাককে এলাকায় দেখা যায়নি। দল ওকে নির্বাচিত করলেও মানুষ কে কোন পরিষেবা দেয়নি। ওকে নিয়ে মানুষের প্রচুর ক্ষোভ আছে।'
No comments:
Post a Comment