রেলগেট বন্ধ থাকার কারণে মৃত্যু ১০ বছর বয়সী শিশুর, বিক্ষোভ স্থানীয়দের

নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম বর্ধমান: দীর্ঘক্ষণ বন্ধ ছিল রেলগেট। আর সেই যানজটে আটকে মৃত্যু হল বছর-দশেকের এক অসুস্থ শিশুর । শুক্রবার বেলা ১ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পান্ডবেশ্বর রেলগেটে। মৃতের নাম রিমা সাহা, বয়স ১০ বছর। সে ঝাড়খণ্ডের করলা এলাকার বাসিন্দা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ রিমাকে চিকিৎসার জন্য দুর্গাপুর নিয়ে যাচ্ছিলেন তার অভিভাবকরা। কিন্তু পাণ্ডবেশ্বর রেলগেট বন্ধ থাকায় সেই যানজটে আটকে যায় তাদের গাড়িটি । দীর্ঘক্ষণ গাড়ির মধ্যে আটকে থাকায়  শিশুটি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে । শিশুটির অবস্থা দেখে তার অভিভাবকরা ও স্থানীয় লোকজন রেলগেটের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে গেট খুলে দেওয়ার বারবার কাতর অনুরোধ জানালেও  দায়িত্বের অজুহাত দেখিয়ে ওই ব্যক্তি গেট খুলতে অস্বীকার করেন। বন্ধ রেলগেটই যেন হয়ে ওঠে রিমার মারণফাঁদ, সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারার জন্য রেল গেটের সামনে দাঁড়িয়েই শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। 

এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা । স্থানীয় বাসিন্দারা স্টেশন ম্যানেজার সুনীল কুমার মন্ডল কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান । সেই সাথে রেলগেটের দায়িত্বে থাকা কর্মীর শাস্তির দাবীও করেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ কারণে-অকারণে সারাদিনে বহুবার রেলগেট বন্ধ থাকে । সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় না । যানজট এড়াতে ফ্লাইওভারের দাবীও জানান তারা। এমনকি স্টেশন ম্যানেজার সুনীল কুমার মণ্ডলকে পাণ্ডবেশ্বর এলাকা বাসীর পক্ষ থেকে এবং তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সেইসাথেই এরপর যদি এই রেলগেটের কারণে কোন রকম দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন এলাকাবাসী।

সত্যিই কী বিচিত্র এই দেশ, যেখানে কোনও নামজাদা ব্যক্তিরা অসুস্থ হলে গ্রিন করিডোর দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, আর আমজনতা অসুস্থ হলে দায়িত্বের অজুহাত দেখিয়ে তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়। আর এই ঘটনার জ্বলন্ত উদাহরন এদিনের বছর দশেকের শিশুর মৃত্যু।