নিজস্ব সংবাদদাতা, বীরভূম: বীরভূম জেলার খয়রাশোল থানার গীতা ভবন এক পরিচিত নাম।বীরভূম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত গীতাভবন। আজ থেকে পঁয়ত্রিশ বছর আগে গীতাভবনের কোনও অস্তিত্ব ছিল না। সিউড়ী আসানসোল বাসরুটে পাঁচড়া বাসস্টপ থেকে এক কিলোমিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় প্রথম খড়ের ছাউনি দিয়ে ছোট্ট কুটির তৈরী করে আশ্রমের সূচনা করেন এবং নাম করণ হয় গীতা ভবন।
গীতা ভবনের প্রতিষ্ঠা করেন স্বামী সত্যানন্দজী মহারাজ। গীতা ভবনের প্রতিষ্ঠার পরবর্তী কাল থেকে শুরু হয় অখন্ড তারকব্রহ্ম নাম সংকীর্তন, যে নাম সংকীর্তন আজও অখন্ড ভাবে চলে আসছে। সেই গীতা ভবন আজ বিরাট আকার ধারণ করেছে। গীতা ভবনের মূল ফটকের উপরে রয়েছে পার্থসারথির রথ, গীতা ভবনে রয়েছে পার্থসারথির মন্দির, বিরাট নাটশালা, ভোগ মন্দির, অনুষ্ঠান মঞ্চ, গ্রন্থাগার, দাতব্য চিকিৎসালয়, অতিথিদের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা, রয়েছে ফুল-ফলের গাছ, মনোরম পরিবেশ। সারা বছর ধরে চলে নানান অনুষ্ঠান, জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী, গীতা জয়ন্তী, কল্পতরু উৎসব। ছাড়াও পার্থসারথি মেলার দিকে নজর থাকে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা ছাড়াও ঝাড়খন্ড রাজ্যের বহু ভক্তের কাছে।
পার্থসারথি মেলা কোনও বছর ৯ দিন, কোনও বছর ৫ দিন ধরে চলে। শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দের লীলাকীর্তন গান, ভাগবত পাঠ, রামায়ন, ভক্তিগীতি, যাত্রা, বাচ্চাদের নাচ, গান কবিতা, আবৃতি পাঠের অনুষ্ঠান সঙ্গে থাকে এক লক্ষ নরনারায়ন সেবার ব্যবস্থা। সেই গীতাভবনে আজ পালিত হল কল্পতরু উৎসব।
আজকের দিনে সমবেত ভাবে তারকব্রহ্ম নাম সংকীর্তন, ভক্তিগীতি, ভাগবত পাঠ, তাছাড়াও এক ক্যুইন্টাল জিলিপি সেবার মাধ্যমে সকল ভক্তের মুখ মিষ্টি করানো হয়। এছাড়াও ছিল দুপুরবেলা সকল ভক্তদের জন্য পেটপুরে অন্ন ভোজনের ব্যবস্থা। অন্যান্য বছর কল্পতরু উৎসবে হাজার হাজার ভক্তদের সেবার ব্যবস্থা থাকলেও এবছর করোনা আবহে সীমিত ভক্তদের নিয়ে কল্পতরু উৎসব পালন করা হল।মুখে মাস্ক পরে, হাতে স্যানিটাইজার নিয়ে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠান পালন করা হয়।আজকের অনুুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গীতা ভবনের প্রতিষ্ঠাতা তথা অধ্যক্ষ স্বামী সত্যানন্দজী মহারাজ, অচিন্ত্য চৈতন্য ব্রহ্মচারী, ব্রহ্মচারী দেবানন্দ মহারাজ, ড: রবীন ঘোষ, গীতাভবন, সঙ্গীত চর্চা কেন্দ্রের সম্পাদক অচিন্ত্য সিংহ রায়। মঞ্চ সঞ্চালনা করেন প্রসার ভারতীর সাংবাদিক শম্ভুনাথ সেন।
No comments:
Post a Comment