নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর: শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের জল্পনার মধ্যেই কালী পুজোর পরদিন ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই ফের বালুরঘাট শহরের বড় রাস্তার মোড়ে মোড়ে শোভা পেল শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া নতুন ফ্লেক্স-ব্যানার, যা তার দলবদল সম্ভবত ত্বরান্বিত হতে চলার প্রশ্নকেই ফের একবার উসকে দিল। যদিও এবারেও ব্যানারে সৌজন্যে সেই দাদার অনুগামীরা বলে লেখা রয়েছে। তবে ব্যানারে সেবারের ব্যানারের মত নেই তৃনমুলের জোড়া ফুল। সেখানে শুভেন্দুর নামের পাশে উল্লেখ যোগ্য ভাবে লেখা রয়েছে পরিবহন মন্ত্রী , পশ্চিমবংগ সরকার।এর পাশাপাশি শাসক দলের পোস্টার ব্যানারে যেমন উপরের কোনার দিকে মমতার মুখ দিয়ে গোল করে দলের নাম লেখা থাকত। এই ফ্লেক্স ব্যানার গুলোতে সেখানে শুভেন্দুর ছবি দিয়ে সে ভাবে গোলাকার বৃত্তের মধ্যে লেখা রয়েছে যুব সমাজের আইকন - শুভেন্দু অধিকারী বলে।
প্রসঙ্গত, দুর্গা উৎসবের আগে রাজ্যের মধ্যে এই বালুরঘাট শহরেই প্রথম দাদার অনুগামী লেখা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর দুর্গা পুজো, শ্যামা পুজো ও ছট পুজোর শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে ফ্লেক্স ব্যানারে ছেয়ে গিয়েছিল বালুরঘাট, যা দেখে চমকে গিয়েছিল জেলাবাসি। এরপর তার দলবদল নিয়ে হলদি নদী দিয়ে যত জল গড়িয়ে চলেছে তার সাথে সমানে পাল্লা দিয়ে আত্রেয়ী নদীর পারের বালুরঘাট শহরের দাদার অনুগামীরা ততই টগবগ করে ফুটছে। আজ তারা শহরবাসীকে ফের চমকে দিয়ে শুভেন্দুর ছবি দিয়ে নতুন ফ্লেক্স ব্যানার পোস্টার বালুরঘাট শহর ছেয়ে দেওয়ার মধ্যে পরিবহন মন্ত্রীর দলবদলের বিষয়টি অন্যমাত্রা পেয়েছে বলেই মনে করছে শহরবাসী। তা হয়তো সময় বলবে।
দাদার অনুগামীদের দেওয়া শহর ময় নতুন ফ্লেক্সে ও ব্যানারে শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক তৃনমুলের সেকেন্ড ইন কমান্ডারের নাম না করে জনপ্রিয় উক্তি, "প্যারাস্যুটেও নামিনি - লিফটেও উঠিনি " যেমন রয়েছে, তেমন অদ্ভুত মিশ্রনে বড় হরফে লেখা রয়েছে নন্দিগ্রামে শহীদ স্মরনে গিয়ে করা সেই উক্তি " লড়াইয়ের মঞ্চে দেখা হবে " - আর তার নিচেই বড় করে লেখা "বাংলার যুবরাজ " আর এই বাংলার যুবরাজ লেখা নিয়েই জনমনে নানান কৌতুহলের জন্ম নিয়েছে। কেউ বলছেন শুভেন্দুর এই হুংকার সেই তৃণমূল দলের সেকেন্ড ইন চিফ যাকে দলের কর্মীরা যুবরাজ বলে সম্বোধন করে নিজেদের মধ্যে। বিরোধী দল গুলির নেতারা যাকে সরাসরি বাংলার যুবরাজ বলে আঙুল তুলে থাকে। শুভেন্দুর ছবির ফ্লেক্স ব্যানারে তার বিরুদ্ধেই এই হুংকার দেগেছেন দাদার অনুগামীরা।
যদিও বালুরঘাট শহরের রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারনা শুভেন্দু তার অনুগামীদের দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন। একদিকে যেমন বাংলার যুবরাজ লিখে সবাইকে আকার ইংগিতে দলের কাছে একটি ইঙ্গিত পূর্ন বার্তা দিতে চেয়েছেন। পাশাপাশি এই সব জালাময়ী ফ্লেক্স ব্যানার যাতে শাসক দল বা প্রশাসন জনগনের দৃষ্টির আড়াল করতে না পারে তার জন্য নিজের নামের পাশে পরিবহন মন্ত্রী, পশ্চিমবংগ সরকার লেখাটা সুচাতুর ভাবে ব্যবহার করেছেন। আর সেই সব হুংকার দিয়ে লেখা ফ্লেক্স ব্যান্যার খোদ জেলা প্রশাসনিক ভবনের মমতা ব্যানার্জীর জ্বলজ্বল করা ছবি দেওয়া ব্যান্যারের পাশে আটকে দিয়েছেন। শুধু জেলা প্রশাসনিক ভবনের গায়ে নয়, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের রাস্তায়, বালুরঘাট থানার সামনের রাস্তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলিতে এই সব ব্যানার ফেস্টুন সেটে দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে শাসক দলের কর্মী সমর্থকদের গাত্র দাহ হতে বাধ্য। এখন দেখার প্রশাসন কি করে।
No comments:
Post a Comment