বিহার নির্বাচনে জোট ঘোটে পাল্টে গেল সমীকরণ , এগিয়ে বিজেপি - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 4 October 2020

বিহার নির্বাচনে জোট ঘোটে পাল্টে গেল সমীকরণ , এগিয়ে বিজেপি

 




বিহার নির্বাচনে জোট ঘোটে পাল্টে গেল সমীকরণ , এগিয়ে বিজেপি। 



বিহারে বিধানসভা নির্বাচনে জোট কাস্টমাইজ করে নিল বিজেপি। নীতীশ কুমারের সাথে আসন সমঝোতা করে রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগ পাসোয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টির (এলজেপি) কে বাদ দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঝির দল হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা কে সাথে নিল বিজেপি। 


বিহারে ২৪৩ আসনের মধ্যে জেডিইউ ১২৪ টি আর বিজেপি লড়বে ১১৯টি আসনে। এনডিএ জোটের নতুন শরিক দল হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা নীতীশের ১২৪ আসনের থেকে আসন নিয়ে লড়বে। তবে হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা কয়টি আসনে লড়বে তা ঘোষণা হয়নি এখনও। 


রাম বিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগ পাসওয়ান ও ভাইপো প্রিন্সের সাথে আসন সমঝোতা নিয়ে বিবাদ শুরু হয়। রামবিলাসের লোক জনশক্তি পার্টি ২৯ আসন দিতে চেয়েছিল বিজেপি। রামবিলাসের ভাইপো প্রিন্স এত কম আসনে লড়তে রাজি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে পাপ্পু যাদবের অধিকার পার্টি, উপেন্দ্র কুশওয়াহার রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির সাথে জোট করার আলোচনা চলছে বলে খবর। এই জোট হোক নাহোক রামবিলাসের দল বিহার নির্বাচনে ১৪৩ আসনে লড়বে। ভোটের প্রচারে নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে প্রচার করলেও রামবিলাসের দল বিজেপির পক্ষে প্রচার করবে বলে খবর। 


বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা,   চিরাগ পাসওয়ান রাজনীতিতে নামার আগেই বলিউডে অভিনয় শুরু করেছিলেন।  1981 সালের 31 অক্টোবর বিহারের খাগরিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। চিরাগ পাসওয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুল থেকে স্কুল পড়াশোনা করেন।  2003 সালে তিনি দিল্লির একটি ইনস্টিটিউট থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে বিটেক পাশ করেন ।


 অভিনয়ে ফ্লপের পরে বাবার উত্তরাধিকার হিসেবে  চিরাগ রাজনীতিতে নাম লেখান।  রাম বিলাস পাসওয়ানের পুত্র চিরাগ পাসওয়ান চলচ্চিত্র জগতে প্রথম কেরিয়ার তৈরির চেষ্টা করেছিলেন।  ২০১০ সালে 'মাইল না মাইল হাম' ছবি দিয়ে চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করা চিরাগ পাসওয়ান 'সুপার স্টার অফ কাল' বিভাগে স্টারডাস্ট অ্যাওয়ার্ডের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন।  তবে ছবিটি চলেনি এবং চিরাগ পাসওয়ানের চলচ্চিত্রের কেরিয়ারও শেষ হয়েছিল এই ছবি দিয়ে।  চিরাগ পাসওয়ান একজন ফ্যাশন ডিজাইনারও।



 বাবা রাম বিলাস পাসওয়ানের উত্তরাধিকার পরিচালনা করতে কোনও সমস্যা হয়নি । ছবিতে ফ্লপের পরে রাজনীতির জগতে প্রবেশ করা চিরাগ পাসওয়ানকে। এখনও একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসাবে পরিচিতি লাভ করতে পারেননি।   রাম বিলাশ পাসওয়ানের পুত্র হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়।  এই পরিস্থিতিতে নিজের কেরিয়ারের কথা মাথায় রেখে এনডিএ ছাড়ার কথা ভাবেননি চিরাগ। রামবিলাসের মতন চিরাগও রাজনৈতিক পরিবেশ বেশ বুঝতে পারেন। 


চিরাগ পাসোয়ান পরিস্কার বুঝতে পেরেছে কংগ্রেস আরজেডি জোটে সস্তি কম। জিতনরাম মাঝি এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহার বেরিয়ে গেছে কংগ্রেসের জোট থেকে। মুকেশ সাহানির দলও বেরিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। জোটেই লালুর দল আরজেডি মুকেশ সাহানির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লালু প্রসাদ যাদব নিজে জেলে। ছেলে তেজস্বী যাদব সামলাতে ব্যর্থ। এই পরিস্থিতিতে আরজেডি ১৪৪টি কংগ্রেস ৭০ আর বামফ্রন্টের সিপিআইএমএল, সিপিআই ও সিপিএম মিলে মোট ২৯ আসনে ভোটে লড়বে। 


2014 চীরাগ পাসওয়ান 16 তম লোকসভায় মোদী লোকসভায় এমপি হয়েছিলেন এবং 2019 সালে জামুই থেকেও জিতেছিলেন।   রাম বিলাস পাসওয়ানের দল জনশক্তি তার কাঁধে পুরো দায়িত্ব দিয়েছে ।  যদিও চিরাগ পাসওয়ান এখন বিহারের রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। রাজনৈতিক পরিপক্কতার কারণে তিনি মেজাজী নেতা হিসাবে এনডিএ জোটে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন।


 ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা অভিনয়ে ব্যর্থ চিরাগ তার বাবার মতোই রাজনৈতিক পরিবেশ বুঝতে সমান পারদর্শী।

 যাইহোক, ছয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাজ করেছেন রাম বিলাস পাসওয়ান।  তবে তাঁর পুত্র চিরাগ পাসওয়ানও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নির্ধারণে পারদর্শী।   চিরাগ পাসওয়ান যখন রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছিলেন, তখন তাঁর বাবা রাম ভিলাস পাসওয়ান রাজনীতির একটি কঠিন সময় পেরিয়ে যাচ্ছিলেন।  একই সময়ে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, যিনি নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রস্তাব দেওয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন, বিজেপি থেকে সরে এসে বিহারে নতুন সঙ্গী খুঁজছিলেন  সেই সময় এলজেপির গ্রাফ দ্রুত নীচের দিকে চলে যাচ্ছিল এবং রামবিলাস পাসওয়ান ইউপিএতে থাকার কারণে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে এনডিএতে যোগ দিতে অসুবিধা হচ্ছিল।  তারপরে চিরাগ পাসওয়ান এই কঠিন মুহুর্ত থেকে এলজেপি দলটিকে এনডিএর সঙ্গীতে পরিণত করে।    রাজনীতি সম্পর্কে চিরাগ পাসওয়ানের বোঝাপড়ার কারণে, রাম বিলাস পাসওয়ান নরেন্দ্র মোদীর সরকারে দ্বিতীয়বারের মতো মন্ত্রী হয়েছেন।


 প্রশ্ন ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেন চিরাগ বিদ্রোহী হয়ে উঠল ?

 ২০১৪ বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এলজেপি ৪২ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল, তবে জয়ের স্বাদ পেয়েছিল মাত্র দুটি আসনে।  বিগত বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএর সাথে বিজেপির পাশাপাশি জিতন রাম মাঞ্জির হিন্দুস্তানি আওম মোর্চা (এইচএএম) এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহার রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি (আরএলএসপি) এলজেপির পাশাপাশি জোটে ছিল।  ২০১৫ সালের নির্বাচনের সময় প্রতিটি সিদ্ধান্তে চিরাগ পাসওয়ানের উপস্থিতি এনডিএতে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি হোক বা দলটির টিকিট ভাগাভাগির সিদ্ধান্ত নিয়ে গোল বাধে ।  তবে, ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরিস্থিতি বদলেছে।  সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে লালু যাদবের দল রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও কংগ্রেসের সহযোগিতায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং সরকার গঠনকারী নীতীশ কুমার সরকারে ফিরেছিলেন।  নীতীশের এনডিএতে ফিরে আসার পর থেকেই এনডিএতে চিরাগ পাসওয়ানের মর্যাদা হ্রাস পেতে শুরু করে এবং তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad