সাহসিকতার জয়! নিজের বিয়ে নিজেই রুখে দিলেন নাবালিকা ছাত্রী - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, 24 August 2020

সাহসিকতার জয়! নিজের বিয়ে নিজেই রুখে দিলেন নাবালিকা ছাত্রী


নিজস্ব সংবাদদাতা, উওর ২৪ পরগনা: নিজের বিয়ে নিজেই রুখে দিল নাবালিকা। ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট মহাকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সাহেব খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউলি গ্রামে। ওই নাবালিকা নিজেই  চাইল্ড লাইনের ১০৯৮ টোল-ফ্রি নম্বরে  ফোন করে বিয়ের রুখে দেয়। ওই নাবালিকা ছাত্রীর বাড়ি সন্দেশখালি ব্লকের দক্ষিণ হাটগাছি গ্রামে।  

জানা গিয়েছে,  ১৫ বছর বয়সী ওই নবালিকার বিয়ে ঠিক হয়েছিল হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের দেউলী গ্রামের বছর ২২-এর যুবক সমরেশ মন্ডলের সঙ্গে। এমনকি পাত্রীকে নিয়ে ও তার বাবা-মা পাত্রের বাড়ী হাজির হয়  সকালে। গতকাল রবিবার রাত থেকেই বিয়ের জন্য প্যান্ডেল বাঁধা, ভুরিভোজনের প্রস্তুতি চলছিল। আজ সোমবার সকালে গায়ে হলুদও হয়ে গিয়েছিল পাত্র পাত্রীর, শুধুমাত্র সাত পাকে বাঁধা পরার অপেক্ষা। তবে বাধ সাধল স্বয়ং পাত্রী। গতকাল সন্ধ্যে বেলাতেই সে চাইল্ড লাইন টোল ফ্রি নাম্বার ১০৯৮- তে ফোন করে  বিয়ে করতে চায় না, পড়াশোনা করতে চায়- এই বলে পুরো বিষয়টি জানায়। চাইল্ড লাইনের সদস্য শফিকুল ইসলাম পাত্রীর পুরো ঠিকানা নিয়ে হিঙ্গলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের জানায়। 

এরপর আজ সোমবার সকাল বেলায় হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ, বিডিওর প্রতিনিধি চাইল্ড লাইনের সদস্যরা সটান হাজির হয় পাত্রের বাড়ী দেউলী গ্রামে। প্রথমে পাত্রীর বাবা রামকৃষ্ণ মৃধা ও মা অনিতা মৃধা তাদের মেয়ের বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হন না। তারপর পুলিশ প্রশাসন তাদের বোঝায় যে, নাবালিকা পাত্রী ১৫ বছর বয়স এই বয়সে বিয়ে দেওয়া সমাজের প্রতি অপরাধ এবং আইন লংঘন করার আওতায় পড়ে। বিডিও প্রতিনিধিরা জানান রাজ্য সরকার এত কন্যাশ্রী, রূপশ্রী দিচ্ছে পড়াশোনার জন্য, এছাড়াও সবরকম ব্যবস্থা করে দিচ্ছে, তাও কেন বিয়ে দিচ্ছেন? 

পড়াশোনা শিখে প্রাপ্তবয়স্ক হলে বিয়ে করবে এমনটাই জানিয়েছে পাত্রী নিজেই। তারপর বাবা-মা কে বোঝানোর পর মেয়েকে আরও বেশি করে পড়াশোনা করার কথা বলেন তারা। পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক যতক্ষণ না হবে ততক্ষণ বিয়ে দেবেন না এই মুচলেকা দিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হয়। সন্দেশখালির লক্ষীকান্তপুর পূর্ণ চন্দ্র পুর কানমারী শিক্ষা নিকেতনের এই নাবালিকা দশম শ্রেণির ছাত্রী যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে, তাতে উদ্বুদ্ধ হবে তার সহপাঠীরাও। তারা আগামী দিনে এই ছাত্রীকে নিয়ে গ্রামে গ্রামে প্রচার চালাবে বাল্যবিবাহ রোধে, এমনটাই জানা যায় তার স্কুল সহপাঠীদের কাছ থেকে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad