নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: 'রাজ্যে নেতা কেনাবেচার খেলা চলছে। এই খেলায় নেমেছে তৃণমূল ও বিজেপি।' এই অভিযোগ অনেকদিন ধরেই করে আসছিল বামফ্রন্ট। তবে 'বামেদের যে কেনা যায় না' তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী দেবেশ দাস। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতা খোঁজার অভিযানে ফের একবার ধাক্কা খেলো পিকের টিম।
এদিন প্রাক্তন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী তথা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেবেশ দাস জানান, তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের টিমের তরফে ফোন করা হয়েছিল তাঁকে। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব রাখা হয় তার কাছে। এ বিষয়ে দেবেশ দাসের দাবী, ফোনে তাঁকে বলা হয়, 'আপনার মতো স্বচ্ছ ভাবমূর্তির এবং গ্রহণযোগ্য নেতা আমাদের প্রয়োজন।' যদিও এই প্রস্তাব নাকোচ করে দিয়েছেন বলেই জানান প্রাক্তন মন্ত্রী।
ফোনের প্রস্তাবে প্রাক্তন মন্ত্রীর জবাব ছিল, 'মানুষ কেনা যায়, কিন্তু আদর্শ কেনা যায় না। আমরা যে আদর্শে বিশ্বাস করি, তাতে আপনাদের প্রস্তাবে সাড়া দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।' ফোনে প্রাক্তন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাওয়া হয় বলেও জানা গিয়েছে। যদিও এক্ষেত্রে সরাসরি না করে দিয়েছেন বলেই জানান প্রাক্তন মন্ত্রী। একইসাথে ভবিষ্যতে যাতে আর এভাবে তাকে বিরক্ত না করা হয়, সেকথাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।
উল্লেখ্য, ৩৪ বছর পশ্চিমবঙ্গের শাসন করে গিয়েছে বামফ্রন্ট। বাম নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও আজ অব্দিও একটা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এমনকি যে নন্দীগ্রামের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাতছাড়া হয়েছিল রাজ্যপাট, সেই নন্দীগ্রামের ঘটনাতেও তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে 'দুর্নীতিমুক্ত' মুখ্যমন্ত্রীর সার্টিফিকেট দিয়েছিল খোদ সিবিআই। ফলে শাসন ক্ষমতায় না থাকলেও বাম নেতাদের মর্যাদা রয়ে গিয়েছে সব মহলেই। সূত্রের খবর, তেমন কিছু বাম নেতাদের নিয়ে টিম সাজাতে চাইছে ভোট কৌশলি প্রশান্ত কিশোর।
এর আগে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকজন সক্রিয় এবং নিস্ক্রিয় বাম নেতারদের কাছে ফোন গিয়েছিল বলে জানান তাঁরা। ফোন করা হয়েছে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক লক্ষীকান্ত রায়, জলপাইগুড়ির প্রাক্তন সাংসদ মহেন্দ্রকুমার রায়ের মতো বাম নেতাদের। তৃণমূলে যোগের প্রস্তাব নিয়েই পিকের টিমের তরফ থেকে এই ফোন এসেছিল বলে দাবী তাঁদের। কিন্তু বারবারই সবার কাছেই 'না' শুনতে হয়েছে টিম পিকে কে।
No comments:
Post a Comment