নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর: ঘর-বাড়ী-শৌচাগার জলে ডুবে, পলিথিন টাঙ্গিয়ে পরিবার নিয়ে উঁচু মাটির রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৩০-৪০টি অসহায় পরিবার। এলাকায় পৌরসভা কর্তৃক নির্মিত শৌচাগারও বন্ধ। অভিযোগ, দেখা নেই স্থানীয় বিদায়ী কাউন্সিলারের, ফলে একপ্রকার চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিনযাপনে বাধ্য অসহায় পরিবারগুলি। দূষছেন বিদায়ী স্থানীয় কাউন্সিলার থেকে শুরু করে বালুরঘাট পৌরসভাকে। এই ঘটনা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডের ঘাটকালী কলোনি এলাকার।
ঘাটকালী কলোনি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন বৃষ্টিপাতের কারনে বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদীর জলস্তর বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে আত্রেয়ী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খাড়ির জলস্তরও এবং এর ফলে খাড়ি পার্শ্ববর্তী ঘাটকালী কলোনি এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কলোনির প্রায় ৩০-৪০টি বাড়ীর মধ্যে অধিকাংশ ঘর-বাড়ী-শৌচাগার জলে ডুবে। যার ফলে ঘাটকালী কলোনি এলাকার বাসিন্দারা ঘর-বাড়ী ছেড়ে খাড়ির বাধে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। একদিকে তাদের বাড়ীর শৌচাগার জলে ডুবে থাকার কারনে এবং অন্যদিকে ঐ এলাকা নিকটবর্তী বালুরঘাট পৌরসভা কর্তৃক নির্মিত শৌচাগার বন্ধ থাকার কারনে বর্তমানে ঐ অসহায় পরিবারগুলির সদস্য-সদস্যারা খোলা স্থানে শৌচকর্ম করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে এলাকার পরিবেশ হয়ে উঠেছে অস্বাস্থ্যকর।
ঘাটকালী কলোনি এলাকার বাসিন্দা মায়া ভট্টাচার্য জানান, রবিবার মধ্য রাত্রিতে ঘরে জল ঢোকা শুরু হলে ঘর-বাড়ী ছেড়ে বাসনপত্র নিয়ে তারা পলিথিন টাঙ্গিয়ে মাটির রাস্তায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। ঐ কলোনির অপর এক বাসিন্দা সরস্বতী গুহ এদিন স্থানীয় বিদায়ী কাউন্সিলার তথা বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, বিদায়ী কাউন্সিলার এসে দেখে যায় কিন্তু আমাদের কোন কথা গায়ে লাগায় না, আমরা মরে যাই বা বেঁচে যাই তাদের কোন দায়িত্ব নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা রবি দাস-এর অভিযোগ, বাজারে যে বাথরুম রয়েছে সেই বাথরুম বন্ধ থাকে, যে কারনে শৌচকর্মের জন্য মা-বোনেরা কোথায় যাবে বলে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তাদের বালুরঘাট পৌরসভার বায়ো টয়লেট ব্যবহার করতে দেওয়ার জোড়ালো দাবী জানান তিনি। একই সঙ্গে বালুরঘাট পৌরসভা থেকে নিয়মিত পানীয় জল ও ব্লিচিং পাউডার মিলছে না বলেও এদিন তিনি অভিযোগ করেন।
এলাকাবাসীদের সমস্যা প্রসঙ্গে বালুরঘাট পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান রাজেন শীল জানান, তিনি প্রতিবেদকের কাছ থেকেই বাসিন্দাদের সমস্যার কথা শুনলেন এবং তার কাছে কেউ আসেনি। সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, শৌচাগার তৈরী হওয়ার পর তালা লাগানো আছে, ওটার বিল কি আছে না আছে আমি সঠিক বলতে পারব না ওটা অফিস বলতে পারবে, তাও আমি খোঁজ করে দেখছি। সুতরাং এমত অবস্থায় নিজ এলাকায় স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ফিরে পেতে বালুরঘাট পৌরসভার মুখ চেয়ে বালুরঘাটের ঘাটকালী কলোনই এলাকার জলবন্দী মানুষরা।
No comments:
Post a Comment