বাতাসের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পরে করোনা, দাবি চীনা বিজ্ঞানীদের - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 30 April 2020

বাতাসের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পরে করোনা, দাবি চীনা বিজ্ঞানীদের

download+%25283%2529



এতদিন এটাই বলা হচ্ছিল যে, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে কোভিড-১৯ বা নভেল করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। তবে চীনের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের দু’টি হাসপাতালে গবেষণা চালিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেখানেই তারা দেখতে পান, করোনাভাইরাসের কণা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এই উহানেই প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়।

চীনের বিজ্ঞানীরা ওই হাসপাতাল দু’টির স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা-সরঞ্জাম (পিপিই), টয়লেট, এমনকি আইসিইউর (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বাতাসেও করোনাভাইরাস ভেসে বেড়াচ্ছে দেখতে পান।

এই গবেষণাটি বিশ্বখ্যাত জার্নাল ‘ন্যাচার’-এ প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। গবেষণা দলে উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও রয়েছেন। তারা দু’টি হাসপাতালের ৩০ জায়গায় করোনাভাইরাসের অরএনএর ঘনত্ব পরিমাপ করেন।

দেখা গেছে, ওই সমস্ত জায়গায় ক্ষুদ্র কণা আকারে ভাইরাস ভেসে বেড়াচ্ছে। একে বিজ্ঞানীরা বলছেন অ্যারোসল। এই ক্ষুদ্র কিন্তু ভারী কণাগুলো (ড্রপলেট) কোনও  বস্তুর ওপরে পড়তে পারে এবং সেখান থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে।

গবেষকরা বলেন, খোলা জায়গায় ও যেখানে বায়ু চলাচলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে সেখানে ভাইরাসটির অস্তিত্ব কম। অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই খোলা বা পরার জায়গা, টয়লেট সহ রোগীদের ব্যবহার্য জায়গাগুলো যদি জীবাণুমুক্ত রাখা যায় তাহলে সেখানে ভাইরাসটির ঘনত্ব কম থাকে। পিপিই ব্যবহারের পর সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সেখান থেকেও ভাইরাস ছড়ায়।

আরএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে কেবল বাতাসে ভেসে থাকা ভাইরাসের ড্রপলেটের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা গেছে। এর মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটতে পারে কিনা সে ব্যাপারে গবেষকরা এখনও নিশ্চিত নন। তারা মনে করেন, বাতাসে ভেসে করোনাভাইরাস কতটুকু সংক্রমণ ঘটাতে পারে তা জানার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।

খোলা জায়গার বাতাসে করোনাভাইরাসের ঘনত্ব কম হলেও ভীড় বা জনসমাগম রয়েছে (যেমন, হাসপাতালের গেট) এমন স্থানে ভাইরাসটির ড্রপলেটের ঘনত্ব বেশি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তাই ভীড় ও জনসমাগমকে এড়িয়ে চলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গবেষণায়।

বাতাসে ভেসে থাকা ক্ষুদ্র কণার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে খোদ বিজ্ঞানীদের মধ্যে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি। সংস্থাটি আক্রান্তদের সঙ্গে সংস্পর্শের মাধ্যমে সংক্রমণকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আক্রান্তের হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে সরাসরি ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের বড় আকারের ড্রপলেটগুলোকেই সংক্রমণের কারণ হিসেবে মনে করে সংস্থাটি।

চীনের গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, কয়েকটি হাসপাতালের চিত্র এমন হতে পারে। চিকিৎসা ব্যবস্থার দুর্বলতা ও কয়েকটি পদ্ধতিগত ভুলের জন্য বাতাসে অ্যারোসল সংক্রমণ তৈরি হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এমন সব হাসপাতালের বাতাসেই কমবেশি অ্যারোসল ড্রপলেট তৈরি হতে পারে। এ জন্য হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জরুরি ও পিপিই ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিকাল ও জনস্বাস্থ্য ভাইরোলজিস্ট মালিক পেইরিস বলেন, মাস্ক ও অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম ঠিকভাবে অপসারণ করা না হলে সেখান থেকে ভাইরাসের কণা বাতাসে ভেসে থাকতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad