করোনাকে মারতে যক্ষ্মার ভ্যাকসিন দিয়ে গবেষনা করছে অস্ট্রেলিয়া - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday, 27 March 2020

করোনাকে মারতে যক্ষ্মার ভ্যাকসিন দিয়ে গবেষনা করছে অস্ট্রেলিয়া



যক্ষ্মারোগ টিউবারকিউলোসিস (টিবি) চিকিৎসায় যে ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হয়, তা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর কি-না তা নিশ্চিত হতে চার হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর ওই ভ্যাকসিন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুয়েরিন (বিসিজি) নামের এই ভ্যাকসিন শিশুদের টিবি প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে বহুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

মাইক্রো ব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামের এক প্রকার অতিক্ষুদ্র জীবাণুর কারণ ফুসফুসের সংক্রমণ টিবি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিসিজি টিকা শুধু যক্ষ্মা প্রতিরোধই করে না, এর বহুবিধ গুণও রয়েছে।

বর্তমানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় এ পর্যন্ত তিন হাজার ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছে ১৪ জন।

করোনাভাইরাসও যেহেতু শ্বাসকষ্ট, কাশির কারণ; তাই বিসিজি নামের টিবি ভ্যাকসিন করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে এই ভাইরাস প্রতিরোধী কার্যকরী কি-না, তা নিশ্চিত হতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

বিজ্ঞানীরা চার হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর প্রয়োগের ফলে সার্স-কোভ-২ (সার্স করোনাভাইরাস) প্রতিরোধের ক্ষেত্রে শরীরে অতিরিক্ত রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় কি-না এবং কোভিড-১৯-জনিত উপসর্গ কমে যায় কি-না তা দেখতে চান তারা।

টিবি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক এই প্রয়োগের কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্নের মুরডক চিলড্রেন’স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক। এতে অংশ নিচ্ছেন দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালের চার হাজার স্বাস্থ্যকর্মী।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল বলছে, তবে শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, একই উদ্যোগ নিয়েছে নেদারল্যান্ডস, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য।

ভ্যাকসিনের এ ট্রায়াল প্রসঙ্গে মুরডক চিলড্রেন’স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ক্যাথরিন নর্থ এসি বলেছেন, ‘কঠিন ও উদ্ভাবনীমূলক এ ধরনের ট্রায়াল পরিচালনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেডিকেল গবেষকদের।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক এই প্রয়োগ কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ও ফ্রন্টলাইনে থাকা আমাদের বীরত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবন বাঁচাবে।’

টিবির প্রতিষেধক হিসেবে প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ১৩০ মিলিয়ন শিশুকে দেওয়া হচ্ছে বিসিজি ভ্যাকসিন। তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন কতটুকু কার্যকর ভূমিকা রাখবে-সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা।

বয়স্কদের ওপর পরিচালিত দুটি (একটি ৬০-৭৫ বছর বয়সী ব্যক্তিদের ওপর পরিচালিত) গবেষণায় দেখা গেছে, বিসিজি ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ৮০ শতাংশ রোগীর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ কমে গেছে।

অন্য গবেষণাগুলো বলছে, বিসিজি ভ্যাকসিন নেওয়ার পর শিশুদের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের হার ১০ শতাংশ কমে গেছে।

অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা বলছেন, বিসিজি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ও তার প্রয়োগের ফলে শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে কি-না, তা নিশ্চিত হতে আরও অনেক সময় লেগে যাবে। তবে এটা যদি সত্যি সত্যিই কার্যকরী প্রমাণিত হয়, তাহলে করোনাভাইরাস মহামারী প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন হবে গেম-চেঞ্জার।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad