সম্প্রতি ইসরায়েলের তেল-আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এমন এক প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন, যাদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না। ইসরায়েলের গবেষকদের এই আবিষ্কার রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সেই সঙ্গে প্রাণী জগৎ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মনোভাব পুরো বদলে দিয়েছে।
গবেষকদের দাবি, এই প্রাণীটি দেখতে অনেকটা জেলিফিশের মতো। এরা এক ধরনের পরজীবী। এর বৈজ্ঞানিক নাম হেননেগুয়া স্যালমিনিকোলা।
ইসরায়েলের তেল-আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একদল গবেষক প্রাণিটি আবিষ্কার করেছেন। গবেষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রফেসর ডরথি হুকন।
গবেষকরা বলছেন, পৃথিবীতে হেননেগুয়া স্যালমিনিকোলা নামক এক ক্ষুদ্র আকারের প্রাণী রয়েছে, যারা অক্সিজেন গ্রহণ করে না। এই ক্ষুদ্র প্রাণীর শরীরে মাত্র ১০টি কোষ। তারা স্যামন মাছের কোষের মধ্যে থাকে।
গবেষক ডরথি হুকন বলেন, বায়বীয় নিঃশ্বাস প্রাণীতে সর্বোপরি বিষয় বলে মনে করা হতো। তবে এখন এই আবিষ্কারের ফলে আমরা নিশ্চিত হলাম, এটি আসলে তেমন নয়। আমাদের আবিষ্কার দেখায় যে, বিবর্তন অদ্ভূত দিকে যেতে পারে। শক্তি সঞ্চারের ক্ষেত্রে বায়বীয় শ্বাস-প্রশ্বাস একটি প্রধান উৎস। তবুও আমরা এমন একটি প্রাণী খুঁজে পেয়েছি, যা এই প্রক্রিয়ায় শক্তি সঞ্চার করে না।
নিশ্বাস না নিলে কীভাবে শক্তি সঞ্চার করে এই প্রাণী, এই বিষয়ে তিনি বলেন, এই পরজীবী কীভাবে শক্তি তৈরি করে তা আমাদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। এটি মাছের কোষ থেকে শক্তি গ্রহণ করে থাকতে পারে, কিংবা এতে অক্সিজেনমুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো বিভিন্ন ধরন থাকতে পারে, যা সাধারণত অ্যানরোবিক অ-প্রাণীজ প্রাণীর বৈশিষ্ট্যযুক্ত।
এই প্রাণী আবিষ্কারের ফলে জানা গেছে, প্রাণীটি ‘মাল্টিসেলুলার’ জীব, যার শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোম নেই। এই কারণেই এদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের একেবারেই প্রয়োজন হয় না। মানুষ সহ বিশ্বের প্রতিটি প্রাণীর শরীরে প্রচুর পরিমাণে মাইটোকন্ড্রিয়া পাওয়া যায়, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে হেননেগুয়া স্যালমিনিকোলা নামের পরজীবীই হল প্রথম এমন এক জীব, যাদের শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোমের কোন অস্তিত্ব নেই।
সূত্র: জাগো নিউজ24
No comments:
Post a Comment