হ্যামিলনের সেই বাঁশিওয়ালা কি সত্যিই ছিলেন! কি বলছে ইতিহাস? জেনে নিন - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 1 December 2019

হ্যামিলনের সেই বাঁশিওয়ালা কি সত্যিই ছিলেন! কি বলছে ইতিহাস? জেনে নিন

maxresdefault




ছোটবেলা থেকেই কখনও বইয়ের পাতার গল্পে, কখনও ছড়ায় ছড়ায়, কখনও বা দাদু- ঠাকুরমার রূপকথামালায় শুনে এসেছি হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার কথা। শহরের ইঁদুর তাঁড়াতে সবাই বাঁশিওয়ালার শরণাপন্ন হয়। বাঁশিওয়ালার সুরের নেশায় শহরের সমস্ত ইঁদুর দল বেঁধে বেরিয়ে এসে শহরের পাশেই নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শহর হয় ইঁদুরমুক্ত, কিন্তু বাঁশিওয়ালাকে তার পাওনা দেওয়া হয়না। তাই সে নেয় এক নিষ্ঠুর প্রতিশোধ। বাঁশি বাজিয়ে এবার শহরের সমস্ত শিশুকে নিয়ে যায় পাহাড়ের ওপারে। আর ফিরে আসে না সেসব প্রাণবন্ত শিশুরা।


রূপকথামালার এই গল্প ইউরোপসহ, মধ্যেপ্রাচ্যের বহুদেশ বিশ্বাস করে মনেপ্রাণে। হ্যামিলনের বাসিন্দারা শুধু বিশ্বাসই করে না, তাঁরা সন-তারিখ দিয়ে এই ঘটনা সত্যি প্রমাণ করবার চেষ্টা করেন। ওয়ারেস নদীর তীরে শহরে ৪০০ বছরের পুরোনো বিশাল প্রাসাদে খোদাই করা আছে ভয়ঙ্কর ঘটনার দিন। শহরবাসীর হিসেব অনুযায়ী তারিখটা ১২৮৪ সালের ২৬শে জুন।

ইতিহাস ঘাটলে অনেক কিছু পাওয়া যায়। ১৪৫০ সালের একটা পুঁথিতে উল্লেখ আছে ঘটনাটির কথা। তবে সেখানে ১৩০জন শিশুর নিখোঁজ হওয়ার বিবরণ দেওয়া, কোনও ইঁদুর বা বাঁশিওয়ালার কোন কথা নেই। কিন্তু ১৬ শতকের পর কিভাবে যেন বাঁশিওয়ালার কথা যোগ হলো। ১৭ শতকে ঘটনাটা আরেকটু বদলে গেলো, বদলে গেলো নিরুদ্দেশের তারিখটা, এবার তারিখ দেওয়া হলো ২২ জুলাই, ১৩৭৬।


ঐতিহাসিকরা বলেন, উপকথা গড়ে ওঠার সাথে বাস্তব কিছু ঘটনা জড়িত। ১২১২ সালে ক্রুসেডে হ্যামিলন শহর থেকেও বহু তরুণ যোগদান করেন। হয়তো ঐ তরুণদের একদল কোনও ভাবে মৃত্যুবরণ করেন বা হারিয়ে যায়, যার ফলে তারা আর ফেরেননি। এমন করে ১২৬০ সালেও স্থানীয় যুবকদের এক অংশ যুদ্ধে অংশ নিয়ে রণাঙ্গনে মারা যায়। হ্যামিলন শহরে ১৪ শতকের দিকে ভয়ঙ্কর প্লেগ রোগ (ইঁদুরের মাধ্যমে ছড়ায়) ভয়াবহ আকার ধারণ করে। প্লেগ রোগে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়।


কিছুটা বাস্তব ও কিছুটা গল্পগাথা, কয়েকটি ঘটনার সংমিশ্রণে জন্ম হয়েছে এই উপকথার। বাঁশিওয়ালার গল্প শহরের নাগরিকদের কাছে এক চরম সত্য, যা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ঐতিহাসিক সত্য। আমাদের কাছে এটা গল্প, তাঁদের কাছে চরম সত্য। বাস্তব আর কল্পনা একই পথে হাঁটছে পাশাপাশি।


(সংগৃহীত) 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad