প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক ; সবচেয়ে পুরানো খেলাগুলোরও একটি হল ক্রিকেট। উপমহাদেশ তথা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। আতুর ঘর পেরিয়ে বর্তমানে বিশ্বের জমকালো এই খেলার রয়েছে বহু স্মৃতি, হাজারো ইতিহাস। ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া এই খেলাটির তেমনি রয়েছে মজার সব ঘটনা, যা অনেকেরই অজানা। ঘটনাগুলোর কিছু মজার, কিছু শুনলে অবাক হবেন। আবার এসব ঘটনা থেকে বিষ্মিত হয়ে ভাববেন, ক্রিকেট দুনিয়াটা আসলেই রঙ্গিন।
সবচেয়ে দীর্ঘ ম্যাচঃ
ক্রিকেটের সবচেয়ে দীর্ঘতম ম্যাচ হল ১৯৩৯ সালের ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা মধ্যে খেলা ম্যাচটি। ১৪ দিন খেলার পর এই ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
ক্যাচ ধরায় ভূমিকম্পঃ
২০০৭ সালের ভারত এবং বারমুডার মধ্যেকার খেলা চলছে। আগে ব্যাট করতে নামা ভারতের রানের তুখোড় গতি থামানো যাচ্ছিল না। হঠাৎ ব্যাটসম্যানের ব্যাটে লেগে বল চলে যায় স্লিপে। ফিল্ডার মাটিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ধরে ফেলে বলটি। সাথে সাথে মনে হল যেন ভূমিকম্প হয়েছে। আম্পায়ারও ভাবলেন মাটি কেঁপে উঠেছে। কিন্তু না আসলে কিন্তু ভূমিকম্প হয়নি! আসলে স্লিপের যে ফিল্ডারটি ক্যাচটি ধরেছিলেন তার ওজন ছিলো ১৩৩ কেজি। ফিল্ডারটির নাম ডায়ান লেভারক।
এক বলে ২৮৬ রান:
১০০ বছর আগে ইংল্যান্ডের মাঠে এই রেকর্ডটি হয়েছিল। সেদিন ভিক্টোরিয়া দলের সঙ্গে অন্য একটি দলের খেলা ছিল। ম্যাচের প্রথম বলেই ভিক্টোরিয়ার এক ব্যাটসম্যানের জোরাল শটে বল বাউন্ডারি পেরোনোর আগেই মাঠের মধ্যে থাকা একটি গাছের উঁচু ডালে আটকে যায়। এর মধ্যেই ভিক্টোরিয়ার দুই ব্যাটসম্যান রানের জন্য দৌড় শুরু করেন। অন্যদিকে, বিপক্ষ দল বল হারিয়ে যাওয়ার সঙ্কেত দিতে আম্পায়ারের কাছে আর্জি জানায়। কিন্তু বল তো গাছের ডালে আটকে! আর স্পষ্ট দেখাও যাচ্ছে। তাই আম্পায়ার আর কী করে বল হারিয়ে যাওয়ার সঙ্কেত দিতে পারেন! বিপক্ষ দলের আবেদনে সাড়া না দিয়ে আম্পায়ার গাছের ডাল ছেঁটে বল পাড়ার নির্দেশ দেন গ্রাউন্ড স্টাফকে। এদিকে অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও বল তো আর গাছের ডাল ছেড়ে পড়ে না। তখন গ্রাউন্ড স্টাফ মরিয়া হয়ে বন্দুক থেকে বল লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়েন। বল মাটিতে পড়ে। ততক্ষণে ভিক্টোরিয়ায় ব্যাটসম্যানরা ২৮৬ বার উইকেটের মধ্যে দৌড়ে ফেলেছেন। এরপর ভিক্টোরিয়া তাদের ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে। ভিক্টোরিয়াই এই ম্যাচে জয়ী হয়েছিল। যদিও এই ম্যাচের কোনও প্রমাণ নেই।
পাইলট-গাঙ্গুলী তর্ক:
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খালেদ মাসুদ পাইলট শেষের দিকে অনেকক্ষণ ধরে ব্যাট করছিলেন। তবে রানের গতি ছিলো বেশ ধীর। তখনকার ভারতীয় অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি শেষমেশ এগিয়ে এসে পাইলটকে বলল-এই তোমাকে এমন বিরক্তিকর খেলা কে শিখিয়েছে, বল তো বাপু?
পাইলট: কেন, কে আবার? তোমাদের ওই গাভাস্কার দাদা, যিনি ওয়ানডেতে পুরো ৫০ ওভার খেলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন!
শচীন টেন্ডুলকার-আব্দুল কাদির তর্ক:
এটা ১৯৮৯ সালের ঘটনা। লিটল মাস্টার শচিন কিছুদিন আগেই অভিষেক টেস্ট খেলেছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাত্র ১৭ বছর বয়সে। ওই বয়সে তাকে মোকাবেলা করতে হয়েছিল পাকিস্তানের সব বাঘা বাঘা বোলারদের। এক টেস্ট ম্যাচে শচীন যখন ব্যাট করতে নামলেন,গ্যালারিতে পাকিস্তানের সমর্থকদের হাতে দেখা গেল বিভিন্ন প্লাকার্ড।একটিতে লেখা-দুধ খাওয়া বাচ্চা…ঘরে গিয়ে দুধ খাও..। শচীন সেদিন দুর্দান্ত খেলছিলেন। মুশতাক আহমেদের এক ওভারে দুইটি ছক্কা মারলেন তিনি। এরপর বল করতে আসলেন তখনকার সেরা স্পিনার আব্দুল কাদির। কাদির তো টেন্ডুলকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বললেন, পিচ্চি, তুমি বাচ্চা বোলারকে (মুশতাক আহমদ) কেন মারছ? পারলে আমার বলে মারো!টেন্ডুলকার কোনো কথা না বলে ওই ওভারে চার ছক্কাসহ ২৮ রান করেন!
থার্ড আম্পায়ার কতৃক প্রথম আম্পায়ার:
টিভি আম্পায়ার প্রথম কাকে আউট দিয়েছিলেন জানেন? কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান শচিন টেন্ডুলকারকে! আর সেই রানআউট কে করেছিলো? বিশ্ব বিখ্যাত ফিল্ডার জন্টি রোডস। একই টেস্ট ম্যাচে পরবর্তী দিনে জন্টি রোডসকে আম্পায়ার রান আউট দেন।অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, সেই রান আউটটি করেছিলেন শচিন টেন্ডুলকার।
যে নিয়ম এখনও অপরিবর্তিত:
ক্রিকেট খেলায় ৪২টি ক্রিকেট আইন আছে। যা বিভিন্ন প্রধান ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে প্রণয়ন করেছে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব। ক্রিকেটের আইনে সময় এর সাথে সাথে সব কিছুর পরিবর্ত হয়েছে শুধুমাত্র একটি আইনের পরিবর্তন হয়নি। সেটি হলো ক্রিকেট পিচের দৈর্ঘ্য। এটি এখনও সেই আগের মতই আছে।
পি/ব
No comments:
Post a Comment