গ্রামের বাড়ির পুজোয় আসছেন বসে প্রণব মুখোপাধ্যায় নিজেই করলেন চন্ডীপাঠ

প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক ;      শুক্রবার সন্ধ্যায় তার নিজের গ্রামে, বীরভূম জেলার মিরাটি এসেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ফিরে যাবেন দশমীর দিন বলে জানা গিয়েছে।ভারতের রাষ্ট্রপতি যখন ছিলেন, তখনও যাবতীয় প্রটোকল ভেঙে দুর্গাপুজোয় অংশ নিয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।


এখন তিনি প্রক্তন রাষ্ট্রপতি। তাই প্রোটোকলের কড়া বিধি নিষেধ আর সেই অর্থে নেই। তবে এখন প্রতিকূলতা বার্ধক্য। কিন্ত বতেসের সেই প্রতিকূলতা দূর করে প্রণব মুখোপাধ্যায় ফের নিজেই বসলেন দুর্গাপুজোর আসনে।দেবী দুর্গাবন্দনায় মহাষ্টমীর পুজোয় নিজেই করলেন চণ্ডীপাঠ। ফের একবার বাড়ির পুজোয় ঘরের ছেলে হয়ে উঠলেন ভারতের সাবেক  রাষ্ট্রপতি।


প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সময়  যা করে এসেছেন,  এবারও তার অন্যথা করলেন না। ষষ্ঠীর বিকেলেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন তাঁর পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মিরিটির বাড়িতে। সপ্তমীর সকালে অবশ্য শারীরিক প্রতিকূলতার কারণে দেবী দুর্গার  মহাস্নানে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিতে পারেননি। তবে তিনি নবপত্রিকা স্নানের শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন। তারপর অষ্টমীতে বসলেন পুজোর আসনে। শুদ্ধচিত্তে করেলেন চণ্ডীপাঠ।

প্রতিবছরের এই দিনটা পুরোপুরি অন্য মেজাজে দেখা যায় ভারতের প্রক্তন রাষ্ট্রপতিকে। এবারও তার অন্যথা হয়নি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বহু গুরুদায়িত্ব সামলেছেন। কিন্ত প্রতিবছরই পুজো এলে তিনি বাড়ি চলে আসেন এবং নিজে চণ্ডীপাঠ করেন। ভারতের কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী,  অর্থমন্ত্রী,  এমনকী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেশের সাংবিধানিক প্রধানে পদে আসীন হওয়ার পরও তিনি দুর্গাপুজোয় সক্রিয় অংশ নিয়েছেন বরাবর।

পরণে সাদা ধুতি,  গায়ে উত্তরীয়। ধোপদুরস্ত পৌরহিত্যের পোশাকে ভারতের প্রক্তন রাষ্ট্রপতিকে এবছরও দেখা গেলো পুজোর আসনে।  নিজেই পুজোর আসনে বসে চণ্ডীপাঠ করলেন। তাঁর শুদ্ধ উচ্চারণে পুজো মণ্ডপ গমগম করে উঠলো। 

মিরিট গ্রামে ১৮৯৬ সালে শুরু হয়েছিল এই  মুখার্জি বাড়ির দুর্গাপুজো। প্রণববাবুর দাদু জঙ্গলেশ্বর মুখোপাধ্যায় সন্তান লাভের আশায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু করেন দুর্গা আরাধনা। তারপরই জন্মগ্রহণ করেন প্রণবাবুর বাবা কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়। সেই থেকেই এই পুজো চলে আসছে। সমস্ত ব্যস্ততা সরিয়ে রেখে প্রণববাবু বরাবর বাড়ির পুজোয় উপস্থিত থেকেছেন।

মাঝে শুধু এক বছর পুজো বন্ধ ছিল। ১৯৭২ সালে বন্যার কারণে বন্ধ ছিল মুখোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো। আর ১৯৫৬ সালে দুর্গাপ্রতিমা ভেঙে যাওয়া পুজো হয়েছিল ঘটে। তিনবার প্রণববাবু অংশ নিতে পারেননি। একবার ভারতের হয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘে প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েছিলেন। সেটা ছিল ১৯৯৫ সাল। প্রণববাবু তখন বিদেশমন্ত্রী। আর দুই বার  নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন উত্তরপ্রদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে।

বাকি সমস্ত বছরেই তাঁর উপস্থিতি থাকে বাড়ির পুজোয়। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও তিনি সমানে হাজির থেকেছেন পুজোয়। যথারীতি চণ্ডীপাঠ করেছেন দুর্গাদালানে।


পি/ব