পরকীয়া কি? এর থেকে বেরোনোর উপায় কি? - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 19 September 2019

পরকীয়া কি? এর থেকে বেরোনোর উপায় কি?




নিজস্ব প্রতিনিধিঃ    নারী পুরুষের আকর্ষণ চির শাশ্বত। সে ফ্রয়েড বা তার ভাবশিষ্য ইয়াং অডিপাস রেক্স কিম্বা বিপরীতে ইলেকট্রা কমপ্লেক্স তত্ত্ব দিয়ে যায় বোঝাতে চান না কেন, আবশ্যক -অনাবশ্যক যৌন কৌতুহল থেকে এই পরকীয়া। সমাজে যা নিষিদ্ধ, সেই পথ অতিক্রম করার অদম্য ইচ্ছা পরকীয়া। যা থেকে বেরনো মুশকিল হয়ে পড়ে। 


কিন্তু আদপে পরকীয়া কি আগেও ছিল? 

শাস্ত্র অনুসারে, গোপিনী গণ ছিলেন সকলেই বিবাহিত। সেযুগে বাল্যবিবাহ প্রচলিত ছিল। কিন্তু তবুও তারা অষ্টম বর্ষীয় শ্রীকৃষ্ণকেই পুরুষোত্তম জেনে তাঁর সঙ্গ লাভ করার জন্যই কাত্যায়নী ব্রতের অনুষ্ঠান পালন করেছিলেন। বৈষ্ণব শাস্ত্রে একে "পরকীয়া" বলে উল্লেখিত আছে। তবে এই পরকীয়া বলতে জড় জগতের অবৈধ সম্পর্ক বোঝায় না।

কবিরাজ গোস্বামী মহারাজ এর ব্যাখা করে বলেছেন-আত্মেন্দ্রিয়প্রীতি- বাঞ্ছা-তারে বলি "কাম"। কৃষ্ণন্দ্রিয়প্রীতি- ইচ্ছা ধরে "প্রেম" নাম। 


এখন আধুনিক মানুষ এই সুন্দর প্রেমাচার থেকে সরে এসে, এর পোশাকি নাম রেখেছে পরকীয়া। বিবাহ বহির্ভূত এই সম্পর্ক আসলে যৌনাচার। অনেক সময় অজাচার। অর্থাৎ রক্তের সম্পর্কের মধ্যে যৌন সম্পর্ক।  আধুনিক ব্যস্ত জীবনে এই পরকীয়া একটা অভ্যাসের পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে।  তবে অবশ্য পরকীয়ার পিছনে প্রধান কারণ হলো- নারী পুরুষ নিজের অজান্তেই পরকীয়ার শিকার।  স্বামী স্ত্রীকে সময় দিতে পারছেন না।



 বা তার উল্টোটা। এই  সময় না দেওয়ার কারনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একটা মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি হয়। স্বামী অথবা স্ত্রী এমন কাউকে খুজতে থাকে যার সাথে তার একাকীত্ব ঘুচে যায়। এমন কাউকে খুজতে থাকা থেকেই পরকীয়ার সূত্রপাত। স্বামী অথবা স্ত্রী যদি চাকুরীজীবি হয়ে থাকে তাহলে তারা তাদের অফিসের বিপরীত লিঙ্গের কারও প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে, মনের ভেতর লুকিয়ে থাকা মেয়েটি নিজেকে প্রেয়সীর ভুমিকায় নিজেকে দেখতে চাইছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে, একজন পুরুষ নিজেকে প্রেমিক হিসাবে দেখাতে চাইছে।



স্বামীর প্রেমী হয়ে উঠতে না পারা, বা স্ত্রীর প্রেমিকা ভাব না ধরে রাখতে পারাও অন্য বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত হয়ে পরকীয়ার কারন হয়ে উঠতে পারে। একজন পুরুষ নিজের স্ত্রীর চেয়ে বেশী সুন্দরী বা কমনীয়, বা বয়সে অনেক ছোট মেয়েকে সম্পর্কে পেয়ে, নিজের ‘সুপার ইগোকে’ সন্তুষ্ট করতে পারেন।



এই দুটি কারনই দুজনের জন্য সমান ভাবে প্রযোজ্য। এর থেকে বেরোনোর উপায়, পরস্পরকে সময় দিয়ে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। পরস্পরের অনুভূতিকে গুরুত্ব দিতে হবে। ভালোবাসার জেশ্চার বজায় রাখতে হবে। বিবাহিত জীবনের বিশেষ দিনে উপহার, পরস্পরকে সাহায্য, এবং সময় করে ছোট ট্রিট বা আওটিং করতে হবে। 



পুরুষদের বলছি: এব্যাপারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প হৈমন্তীর মনের কথা গুলো একটু শুনবেন। মোটিভেশনের কাজে দেবে -- --- 

"আমি কিন্তু বিবাহসভাতেই বুঝিয়াছিলাম, দানের মন্ত্রে স্ত্রীকে যেটুকু পাওয়া যায় তাহাতে সংসার চলে, কিন্তু পনেরো-আনা বাকি থাকিয়া যায়। আমার সন্দেহ হয়, অধিকাংশ লোকে স্ত্রীকে বিবাহমাত্র করে, পায় না, এবং জানেও না যে পায় নাই ; তাহাদের স্ত্রীর কাছেও আমৃত্যুকাল এ খবর ধরা পড়ে না। কিন্তু, সে যে আমার সাধনার ধন ছিল ; সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ।"



পি/ব 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad