দেবশ্রী মজুমদার: এতো আর দেশের ভূত চতুর্দশীর রাত নয়। বিদেশের ভূত! ভূতের কথা শুনলেই কেমন গা ছম ছম করে। তার পরে আবার মেমসাহেব ভূত! আর সেটা দেখা যুক্তরাজ্যের নরফক ক্যাসলে। এসেক্সের ভূত শিকারকারীদলের সদস্যদের এমনটাই দাবি। তাদের যুক্তির সাপেক্ষে তারা একটি ভিডিও আপলোড করেছে ইন্টারনেটে। সেতা আপনারাও দেখতে পারেন। ইংল্যাণ্ডের হতভাগ্য রাণী ইসাবেলা নাকি তার পেটকে নিয়ে অশরীরি আত্মা হিসেবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন! প্রাসাদে প্রায় ১৩৩৮ সাল অবধি প্রায় তিরিশ বছর কাটিয়েছিলেন তিনি।
আমাদের দেশেও ১৮৮০ সালে কোলাকাতায় ভূততাত্ত্বিক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। রবীন্দ্রনাথও ভূত নিয়ে কঙ্কালের মত শুধু গল্পই লেখেন নি। প্ল্যাঞ্চেটে বিশ্বাসী ছিলেন, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু বিদেশে অনেক জায়গায় ভূত শিকারীরদল আছে। যারা ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় ভূত ধরতে।
এরকম এক ভুত তদন্তকারী এ্যণ্ডির অভিজ্ঞতার কথা শুনবো আমরা। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসের ঘটনা। সন্ধ্যে সাতটা থেকে ভোর তিনটা পর্যন্ত এ্যণ্ডি এণ্ড কোং কাটিয়েছিলেন ভুত ধরতে। তিনি বলেন, দীর্ঘ ড্রেস পড়ে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে যাওয়ার শব্দ তিনি শুনেছেন। সেটা ঠিক ক্যামেরা বন্দি করার কিছু আগে। খুব দামী ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়েছে রাণী ও তাঁর পেটের ছায়া মূর্তি। এই ছবি ধরা পড়েছে ‘হোয়াইট রুমে’।
ফ্রান্সের ইসাবেলা ছিলেন ইংল্যাণ্ডের রাজা এড ওয়ার্ড দ্য সেকেন্ডের রাণী। সী উলফ বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। যদিও কোন নেকড়ে তাঁর পোষ্য ছিল না। ইতিহাস থেকে যেটুকু জানা গেছে, রানী জীবনে সুখী ছিলেন। না, কোন সতীন কাঁটা ছিল না। রাজা সমকামিতা দোষে দুষ্ট ছিলেন। রাজা এডোয়ার্ড রানীকে অবেহেলা করে গেভসটনের পিছনে পড়ে থাকতেন। রাজাকে সিংহাসনচ্যুত করতে মার্টিমার নামে এক ব্যারণের সাথে ষড়যন্ত্র করেন রাণী। রাজা এক যুদ্ধে হেরে যান। তার শিরচ্ছেদ করা হয়। পরে রাজার ছেলে এডোয়ার্ড দ্য থার্ড পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেন। আর রাণীকে টাওয়ারে বন্দী করে রাখেন। রানী গত হওয়ার পর, অনেকেই সেই অতৃপ্ত রাণী ও তার পেটকে প্রাসাদের অলিন্দে ঘুরে বেড়াতে দেখেছন। এমনকি ক্যামেরায় সেই ছবি ধরা পড়েছে।
ক্যামেরার নাইট ভিশন মোড ছায়া মূর্তি ধরতে পারলেও, তার ভয়েশ মোড কোন আওয়াজ রেকর্ড করতে পারে নি। এ্যণ্ডি জানিয়েছে, রাণীর নিজস্ব হোয়াট রুমে বসেছিল সে। খুব সুন্দর ঘর। তারা মোট সাতজন ছিলেন। তার বন্ধু তাকে প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলে, ‘কোন কিছু শুনতে পাচ্ছ? তারপর এ্যণ্ডি, ছবি তোলার চেষ্টা করে। ক্যামেরার লেন্সে তাকিয়ে ছবি তোলার সময় কিছু বোঝা গেল না। কিন্তু পরে কম্পিউটারে এই ছায়া অবয়ব ধরা পড়ল। ছায়াতে স্পষ্ট যে ড্রেস রাণীর গায়ে ছিল, তা মধ্য যুগের।
কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হোল, রাণীর পায়ের কাছে নেকড়ের মত কিছু একটা। হয়তো তাঁকে সী উলফ, বলতো সবাই। সেটা বোঝাবার জন্যই ওই পেট তাঁর কাছে ছিল। লোকেদের মধ্যেও ছিল চরম উত্তেজনা। যারা এই ছবি দেখেছেন। চক্ষু কর্ণ বিবাদ ভঞ্জন করতে গেলে আপনাদের ‘ক্যাসেলরাইজিংয়ে’ যেতে হবে। বহু পুরানো ক্যাসেল। ১১৩৮ সালে তৈরী। আজ ভুতের বাড়ি হিসেবে পরিচিত। পেলে পেয়েও যেতে পারেন ভূতের ভবিষ্যতের মত কিছু চমকপ্রদ কাহিনী।
পি/ব
No comments:
Post a Comment