কোচিতে ১২ বছরের এক কিশোরী নিজের উদ্যোগে খুলে ফেলেছেন একটি লাইব্রেরি - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 31 July 2019

কোচিতে ১২ বছরের এক কিশোরী নিজের উদ্যোগে খুলে ফেলেছেন একটি লাইব্রেরি

1



কিশোরী যশোদা যে বয়সে ছেলেপুলেরা খেলাধুলো করে সেই বয়সেই কেরালার কোচিতে নিজের উদ্যোগে খুলে ফেলেছেন একটি লাইব্রেরি, যেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বই পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। যশোদার বয়স মাত্র ১২ বছর। সাধারণ লাইব্রেরিতে বই আনতে গেলে ফি লাগে, অভাবের কারণে অনেকেই মেটাতে পারে না সে টাকা, এ কথা বোঝার পরই যশোদা বিনামূল্যে পাঠাগার খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।


যশোদা ডি শেনয়, অঞ্চলে সম্ভবত সেই তরুণতম লাইব্রেরিয়ান, যে একাই একটা গোটা লাইব্রেরি চালায় । বাড়ির সবচেয়ে ওপরতলায় তার গ্রন্থগার। কোনও কোনও রবিবার হয়ত কাজের ফাঁকে খুব অল্প সময়ের জন্য দুপুরের খাবার খেতে সে একবার নীচে নামে । আবার ব্যস্তসমস্ত হয়ে ওপরে উঠে যায় লাইব্রেরি সামলাতে। এমনিতে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই লাইব্রেরি। ‘আমি যখন স্কুলে যাই, তখন আমার মা , বাবা অথবা দাদা থাকে’, জানিয়েছে যশোদা । মাস ছয়েক আগে নিজের বাড়ির ওপরতলায় এই লাইব্রেরি খোলা হয়েছিল। যশোদার বাবা একজন চিত্রশিল্পী। ওই জায়গাটি মূলত তাঁর গ্যালারি ছিল।


 কিন্তু এখন সেটি গ্যালারি আর লাইব্রেরি, দুটোই। একদিকে বাবা দীনেশ আর সেনয়ের আঁকা ছবি রয়েছে, কিছু কিছু অবশ্য সরিয়ে রাখা হয়েছে, লাইব্রেরির বইয়ের তাক, চেয়ার, ডেস্ক ইত্যাদি রাখার জন্য। আট বছর বয়স থেকে যশোদার পড়ার অভ্যেস তৈরি করে দিয়েছিলেন তার মা বাবা। দাদাও সাহায্য করত পড়তে। কিন্তু ছোট্ট মেয়েটার ধারণাই ছিল না, শুধু পড়ার ইচ্ছে থাকলেই হয় না, পড়ার জন্য টাকারও দরকার পড়ে। বই কিনতে টাকা লাগে, লাইব্রেরিতে পড়তেও টাকা লাগে।


‘আমি দেখতাম, বাবা লাইব্রেরি থেকে কোনও বই আনলে সেজন্য টাকা দিতে হত। যখন অবাক হয়ে কারণ জিজ্ঞাসা করলাম, বাবা বললেন, কোনও বইই নাকি বিনা পয়সায় আনা যায় না। তখনই আমার মনে হল, তাহলে যাদের কাছে টাকা নেই, তারা কী করে পড়বে? লাইব্রেরি থেকে বই আনতে অন্তত পক্ষে দশটা টাকা লাগে। যদি দশ টাকাও কারো কাছে না থাকে, সে কি পড়তে পারবে না?’ শিশুর সারল্যে এই প্রশ্ন এসেছিল তার মনে। ভাবা মাত্রই কাজ। বেশি সময় ব্যয় না করেই এই ছোট্ট মেয়ে বিনা পয়সায় লাইব্রেরির সুবিধা দেবে বলে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে বলে তার বাবাকে। এরপরই তার এই মহৎ উদ্যোগে সাড়া দিয়ে অনেকেই নানা জায়গা থেকে বই পাঠায়।


‘প্রথমে আমরা মাত্র ২০০০ টি বই দিয়ে শুরু করি। কিন্তু এখন বইয়ের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। ফিকশন, নন ফিকশন সব রকমের বইই আছে যশোদার লাইব্রেরিতে। আছে গল্প, উপন্যাস ও কবিতার বই। ইংরাজি, মালয়ালাম, কোঙ্কনি, হিন্দি এবং সংস্কৃত ভাষায় বিবিধ বই আছে তার পাঠাগারে, জানায় খুদে গ্রন্থাগারিক। লাইব্রেরির বইগুলি শুধুমাত্র শিশুপাঠ্যই নয়, আছে বড়দের বইও।


 তার স্কুলের সহপাঠী, এমনকী শিক্ষক শিক্ষিকারাও তার ফ্রি লাইব্রেরির সদস্য হয়েছেন। ‘আমার লাইব্রেরি থেকে বই নিতে কোনও টাকা লাগে না। তবে বই নিলে তা ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে হয়। যাঁরা অসুস্থ বা বৃদ্ধ, তাঁরা যে বই চান তা যদি আমাদের লাইব্রেরিতে থাকে তাঁদের বাড়িতে আমরা তা পৌঁছে দিই।



কে 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad