পাক জলসীমা বরাবর গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল নৌবাহিনী। তাদের ধারনা ছিল বালাকোট হামলার পর যে কোনও মুহূর্তে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল ভারতীয় নৌসেনা। ডিজেল সাবমেরিনগুলির পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছিল পরমাণু অস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজও। নৌসেনার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, বালাকোট হামলার পরই পাকিস্তানের অগস্তা শ্রেণির অত্যাধুনিক সাবমেরিন ‘পিএনএস সাদ’ হঠাৎই উধাও হয়ে যায়। প্রায় ২১ দিন ধরে সেটির খোঁজ চালিয়েছিল ভারতীয় নৌবাহিনী।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক শীর্ষ অধিকাররিক জানিয়েছেন, ভারতীয় নৌবাহিনীর এই সক্রিয়তা দেখে পাকিস্তানের ধারণা জন্মেছিল যে, পুলওয়ামায় শহিদ ৪০ সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে জলপথে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে ভারত। তবে পাক গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে বেকুব বানিয়ে বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক করে ভারত। জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় বায়ুসেনার মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান। পাশপাশি ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরে পাক নৌসেনার গতিবিধির উপর নজর রাখতে শুরু করে ভারতীয় নৌবাহিনী। এহেন পরিস্থিতিতে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় পাকিস্তানের অগস্তা শ্রেণির অত্যাধুনিক সাবমেরিন ‘পিএনএস সাদ’। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ‘এয়ার ইন্ডিপেনডেন্ট প্রপালশন’ সমৃদ্ধ এই সাবমেরিন অন্য ডুবোজাহাজগুলির তুলনায় অনেক বেশি সময় ধরে জলের নিচেথাকতে পারে।
নৌসেনার এক আধিকারিক জানান, পিএনএস সাদ-এর এই রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা ভারতীয় নৌবাহিনীকে সক্রিয় হতে বাধ্য করে। তিনি বলেন, “করাচি সংলগ্ন যে অঞ্চল থেকে পিএনএস সাদ উধাও হয়েছিল, সেখান থেকে গুজরাট উপকূল পৌঁছতে মাত্র তিন দিন সময় লাগে। আবার মুম্বইয়ে অবস্থিত নৌবাহিনীর ওয়েস্টার্ন ফ্লিটের সদর দপ্তর পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র পাঁচদিন। তাই জাতীয় সুরক্ষা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করেছিলাম আমরা।” জানা গিয়েছে, নিখোঁজ পাক সাবমেরিনটির হদিশ পেতে বিশেষ অ্যান্টি-সাবমেরিন রণতরী ও যুদ্ধবিমানগুলিকে কাজে লাগানো হয়। পি-৮আই বিমানগুলিকে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন আইএনএস চক্র, স্করপেনি ক্লাস সাবমেরিন আইএনএস কালভারিকে পাক জলসীমা সংলগ্ন এলাকায় মোতায়েন করে নৌসেনা। লাগাতার খোঁজাখুঁজিতে ২১ দিন পর পাকিস্তানের পশ্চিম দিকে পিএনএস সাদ-এর খোঁজ মেলে।
পি/ব
No comments:
Post a Comment