জানেন কি কেন ৬০ সেকেন্ডে মিনিট, ৬০ মিনিটে ঘণ্টা? - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 23 May 2019

জানেন কি কেন ৬০ সেকেন্ডে মিনিট, ৬০ মিনিটে ঘণ্টা?

কেন এক মিনিটকে ভাগ করে ৬০ সেকেন্ড ধরা হয়েছে। বা উল্টোভাবে বললে কেন ৬০ সেকেন্ড মিললে এক মিনিট হয়? কেন এক ঘণ্টাকে ৬০ মিনিট ধরা হয়েছে? ১০০ মিনিটেও তো এক ঘণ্টা হতে পারত। কিংবা ১০০ সেকেন্ডে মিনিট? সংক্ষেপে উত্তরটি হচ্ছে, হাজার হাজার বছর ধরে এই পদ্ধতি চলে আসছে। কেন ঠিক এই ২৪ ও ৬০-এর পদ্ধতিই চালু হয়েছে, তার পেছনে ইতিহাসবিদরা কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন।

সংখ্যাগত
আমাদের ১০ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি এসেছে হাতের ১০টি আঙ্গুল ব্যবহার করে গণনা করার সুবিধার্থে। আজ থেকে অন্তত ৫,০০০ বছর আগে, সুমেরীয় সভ্যতায় জটিল গাণিতিক এবং জ্যামিতিক হিসাবের জন্য দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির পরিবর্তে ১২ এবং ৬০ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করতো।

১০ ভিত্তিক পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা হলো, ১০ কে শুধুমাত্র ২ ও ৫ ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে ভাগ করা যায় না। সেই তুলনায় ১২ কে ২, ৩, ৪, ৬ দ্বারা এবং ৬০ কে ২ থেকে ৬ পর্যন্ত সবগুলো সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যায়। ফলে এসব পদ্ধতিতে ভগ্নাংশের কাজ হিসেব করা বেশ সহজ ছিল।

এছাড়া সুমেরীয়রা এবং পরবর্তীতে ব্যাবলনীয়রা হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে বাকি চারটি আঙ্গুলের তিনটি করে বিভাজন হিসেব করে এক হাতে মোট ১২ পর্যন্ত গণনা করত। এক হাতের ১২টি সংখ্যাকে অন্য হাতের ৫টি আঙ্গুল দ্বারা গুণ করলে দুই হাতে সর্বোচ্চ ৬০ পাওয়া যায়। এটিও মিনিট-সেকেন্ডে ৬০ সংখ্যাটি নির্বাচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে।

জ্যামিতি ও জ্যোতির্বিদ্যা
সুমেরীয় সভ্যতার পতনের পর খ্রিস্টপূর্ব অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্যাবলনীয়রা কোণ পরিমাপের জন্য ডিগ্রী আবিস্কার করে। সে সময় তাদের ধারণা ছিল পৃথিবী ৩৬০ দিনে একবার সূর্যকে আবর্তন করে। অর্থাৎ যদি প্রতিদিনের কৌণিক আবর্তনকে ১ ডিগ্রি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাহলে পূর্ণ আবর্তনে ৩৬০ ডিগ্রি সম্পন্ন হয়।

ইতিহাসবিদরা ধারণা করেন, এখান থেকেই বৃত্তের ৩৬০ ডিগ্রির ধারণাটি আসে। বৃত্তের এক ষষ্ঠাংশ, অর্থাৎ ৬০ ডিগ্রি প্রকৃত কোণ গঠন করে। অর্থাৎ ৬০ ডিগ্রী করে বৃত্তের অভ্যন্তরে ছয়টি ত্রিভুজ আঁকলে প্রতিটি ত্রিভুজ সমবাহু হয়। এ কারণে তখন থেকেই জ্যামিতি এবং জ্যোতির্বিদ্যায় ৬০ সংখ্যাটির বিশেষ গুরুত্ব ছিল।

৩৩৫ থেকে ৩২৪ খ্রিস্টপূর্বের মধ্যে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বিশাল এলাকা বিজয়ের ফলে ব্যাবিলনের জ্যোতির্বিদ্যা গ্রীসে এবং ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ইসলামের আবির্ভাবের পর মুসলিম বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদরাও রোম এবং ভারত থেকে ১২ এবং ৬০ ভিত্তিক সময় পরিমাপের পদ্ধতি গ্রহণ করেন। এভাবে ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী এই পদ্ধতি বিস্তার লাভ করে।


from ap bangla | অ্যানালিটিক্যাল প্রেস | Analytical Press | http://bit.ly/2HKaS0S

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad