সন্তানের থেকে বেশি মূল্যবান বাবা-মায়ের কাছে আর কিছু থাকে না। বাচ্চার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলা খুবই জরুরি। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে বাবা-মাকেই। বাচ্চার সব বিষয় নজরে রাখা বাবা-মায়ের দায়িত্ব ঠিকই। কিন্তু কখনও বাচ্চার ওপর বাড়তি নজর চালানো উচিত নয়। বিশেষ করে বাড়ন্ত বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তো একেবারেই নয়। এই বয়সে বাচ্চাদের স্বাধীনতা দেওয়া প্রয়োজন। তবেই নিজেদের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠবে। সুন্দর সম্পর্ক যেমন আনন্দের, তেমনই পরিবারের পক্ষেও জরুরি।
বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক : বাচ্চা ছোটোবেলায় বেশির ভাগ সময় কাটায় মায়ের কাছে। বাবাকে দিনের সামান্য সময় দেখতে পায় চোখের সামনে। কিন্তু বাচ্চার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাবা-মা দু’জনেরই সময় দেওয়া জরুরি। এমন সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে যাতে সন্তান বাবা ও মা, দু’জনের সঙ্গেই বন্ধুর মতো মিশতে পারে। বাচ্চার বাড়ন্ত বয়সে বাড়িতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। বাচ্চার প্রতি বাবা-মায়ের দায়িত্ব থাকে ঠিকই, কিন্তু বাচ্চাদের স্বাধীনভাবে চলতে দেওয়া প্রয়োজন।
অতিরিক্ত খুঁতখুঁত নয় : বাড়ন্ত বয়সের বাচ্চারা অল্প অল্প করে বুঝতে শেখে সবকিছু। ভুলচুকও হয় বটে। তা বলে বাচ্চার উপর অতিরিক্ত নজর বাচ্চার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে পারে। বাচ্চার মনে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা গড়ে উঠতে পারে বাবা-মায়ের সম্পর্কে। তাই নজর রাখবেন ঠিকই, কিন্তু বাচ্চার চোখের আড়ালে।
বিশ্বাস করুন : বাচ্চার ওপর বিশ্বাস রাখা খুব প্রয়োজন। যদি আপনার বাচ্চা জানে যে তার বাবা-মা তাকে বিশ্বাস করে, তবে সে আপনা থেকেই এমন কাজ করবে না যাতে বাবা-মায়ের বিশ্বাস ভঙ্গ হতে পারে। যে কোনও সম্পর্ক বিশ্বাসের উপর ভর করেই মজবুত হয়। বাচ্চাদের উপর বিশ্বাস রাখলে বাবা-মায়ের উপরও বাচ্চারা বিশ্বাস থাকবে।
সমান সমান : বাড়ন্ত বয়সে বাচ্চাদের মনে খুব সহজেই নেতিবাচক চিন্তা আসে। সব বাচ্চা চায় তাকে যেন সবাই ভালোবাসে। পিঠপিঠি ভাই-বোন থাকলে সেক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে সমস্যা। কারও মনে হতে পারে, ভাইকে আমার থেকে বেশি ভালোবাসে বাবা, আবার কারও ধারণা জন্মাতে পারে মা দিদিকে বেশি ভালোবাসে। সেদিকে আপনাকেই নজর রাখতে হবে। সকলকে সমান আদর, যত্ন ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিতে হবে। নয়তো আপনার অজান্তেই দূরত্ব তৈরি হতে পারে সন্তানদের সঙ্গে।
ছোটোদের মতামতকে প্রাধাণ্য : বড় হওয়ার সঙ্গে বাচ্চার মানসিক বিকাশও ঘটে। সব বিষয়ে তাদের একটা মতামত তৈরি হয়। তাই বাড়ির কোনও বিষয়ে ওদের মতামতকেও সমান প্রাধাণ্য দেওয়া জরুরি। তাদেরও মতামত ও চিন্তাভাবনায় যে মূল্য রয়েছে সেটা বোঝাতে হবে। তাতে বাচ্চার মানসিক চিন্তাভাবনা উন্নত হবে। আপনাকে আর বেশি ভাবতে হবে না তখন।
সব কিছুতেই বাধা নয় : এই বয়সে বাচ্চার মনে অনেক কিছু ঘোরাফেরা করে। নতুন কিছু এক্সপেরিমেন্ট করার বাসনা জাগে মনে। কিন্তু আপনি যদি সব বিষয়েই মানা করতে থাকেন, বাচ্চার মনে আঘাত দিতে পারে। আপনার প্রতি বাচ্চার ভ্রান্তধারণা তৈরি হতে পারে। তাই স্পেস দিন, ওদেরকে স্বাধীনতা দিন। তাতে ভুলচুক হলে ক্ষতি নেই। ভুল করেই তো সবাই শেখে।
বেশি বকাঝকা নয় : বাড়ন্ত বয়সে বাচ্চার মনে এক অন্য মানসিকতা তৈরি হয়। ভুল কিছু করলে বঝাঝকা বেশি না করাই ভালো। কারণ আপনার কটু মন্তব্য বাচ্চার মান সম্মানে আঘাত করতে পারে। সুতরাং, সাবধান থাকতে হবে আপনাকে, ভুলটা ধরিয়ে দিন যাতে আগামীদিনে আর তেমন ভুল না হয়।
from newswelle http://bit.ly/2GueGnv
No comments:
Post a Comment